somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটবেলায় নানীর মুখে শোনা গল্পঃ ডরেমন আর হিন্দি সিরিয়ালের ভিড়ে প্রায় ভুলে যাওয়া গল্প সংরক্ষনের প্রচেষ্টা

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের প্রত্যেকেরই ছোটবেলায় মা-দাদী-নানীর কাছ থেকে শোনা অনেক গল্প রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সুন্দর সুন্দর ধাধা, ঠাকুমার ঝুলি, শিক্ষনীয় গল্প। এসব গল্প লোকমুখে প্রচলিত হয়ে আসছে। লিখিত ভার্সন পাওয়া খুব মুস্কিল। কিন্ত ইদানিং সেসব গল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। কারন বাচ্চা-কাচ্চা আর গল্প শুনতে চায় না। তারা চায় কার্টুন দেখতে, গেম খেলতে।

কথা আর বাড়ালাম না। আজ আপনাদের জন্য দু'টো গল্প দিলাম। প্রথমটি বেশ কমন।

এক কৃপণের গল্পঃ

এক লোক একদিন গ্রাম্য মেলা থেকে ৪০ টাকা খরচ করে একটি ভালো পাঞ্জাবী কিনল। আগের দিনে জিনিসপত্রের দাম খুবই কম ছিল। এখন ৪০ টাকা দিয়ে পাঞ্জাবী, ভাবাই যায় না।

যাহোক, সে পাঞ্জাবী বাড়িতে আনল। পাঞ্জাবীটি পড়ল মোট সাড়ে আট বছর। আট বছর শেষে পাঞ্জাবীর নিচের দিক একটু দুর্বল হয়ে ছিড়ে যাওয়ার অবস্থা। তখন সে লোক পাঞ্জাবিটি কেটে ফতুয়া বানালো। ফতুয়া টি পড়ল সে প্রায় ৪ বছর।

ফতুয়া যখন ছিড়ে ছিড়ে যায় অবস্থা, সে তখন ফতুয়াটি কেটে গেঞ্জি বানালো।

গেঞ্জিটি পড়ল প্রায় ২ বছর। গেঞ্জির অবস্থাও যখন কাহিল, গেঞ্জিটি কেটে সে ২ ভাগ করল। এক ভাগ রুমাল হিসেবে ব্যবহার করল এবং আরেকভাগ হাড়ী-পাতিল ধরার কাজে ন্যাকড়া হিসেবে ব্যবহার করল। অনেকদিন পর ন্যাকড়া এবং রুমাল দুটিরই যখন খারাপ অবস্থা তখন সে এগুলো কে পুড়ে ছাই বানালো। ছাই গুলো সে দাঁত মাজার কাজে ব্যবহার করত। (ছাই দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত বেশ সাদা হয় :D )

একদিন সকালে সে পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দাঁত মাজছে। সে কুলি করে ছাইগুলো পানিতে ফেলল।যখন ছাইগুলো ধীরে ধীরে পানিতে মিশে যাচ্ছিল, তখন সে ভাবছিল "আহারে! ৪০ টা টাকা জলে ফালায়া দিলাম" :P:P:P:P:P:P:P:P


অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করীঃ

দুই বন্ধু পাশাপাশি বাড়িতে একই গ্রামে থাকতো। এক বন্ধু কিছুদিনের অন্য শহরে গেল। শহরে গিয়ে সে কিছু শুদ্ধ বাংলা শিখলো।

গ্রামে আসার পর তার প্রিয় বন্ধুর সাথে দেখা। গ্রামের বন্ধু বললো, দোস্ত অনেক দিন পরে এসেছিস যখন আজ আমাদের বাড়ীতে খাবি। চল।

দুইজনেই একসাথে বন্ধুটির বাড়িতে যেতে লাগলো। পথে রাস্তার মাঝখানে তারা দেখল একটি সাপ।

শহরের বন্ধুটি নিজের জ্ঞান জাহির করার জন্য গ্রামের বন্ধুটিকে জিজ্ঞেস করলো, "বলতো এটি কি? "
গ্রামের বন্ধুটি বলল "এটা সাপ।"
শহরের বন্ধুটি বললো, না এটা সাপ নয়। এটা সর্প।

তখন তাদের মধ্যে অনেক বিতর্ক হলো। তারা বাজি ধরলো। যে জিতবে সে আরেকজনকে ৫টা কিল দিবে। পথে এক লোক যাচ্ছিল। লোকটাকে জিজ্ঞেস করলো তারা, বলেন তো ভাই প্রাণিটা কি?
লোকটি বললো, এটা তো সাপ। আপ্নারা সাপ চিনেন না?

শহরের বন্ধুটি ৫টা কিল খেল। পথে এক লোক যাচ্ছিল শাক মাথায় নিয়ে। বাজারে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে। শহরের বন্ধুটি এবারও চালাকি দেখিয়ে বলল, এগুলা শাক নয়। এটা হলো শর্ক।

শাকওয়ালা লোকটিকে জিজ্ঞেস করার পর, শাকওয়ালা বললো, ধুর মিয়া! এটা তো শাক।

শহরের বন্ধুটি আবার ৫কিল খেল।


তারা বাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। হঠাত গ্রামের বন্ধুটি বলে উঠল, দেখ দেখ। কত বড় বক। শহরের বন্ধুটি বললো, আরে তুই তো দেখি কিছুই জানিস না। এটা বক নয় । এটা হলো ব্যাকরন।
গ্রামের বন্ধুটি বললো, না এটা বক। ছোটবেলা থেকেই জেনে আসছি।

আবার বাজি হলো ৫ কিলের। পথের এক লোককে জিজ্ঞেস করার পর লোকটি বললো বক। শহরের বন্ধুটি খেল আবার মাইর।

তারা বাড়ী পৌছালো। যখন তারা ভাত খেতে বসলো, তখন শহরের বন্ধুটি বললো, দোস্ত, নুনের বাটিটা দে তো।

গ্রামের বন্ধুটি দুস্টামি করে বললো, তুই শহর থেকে এসে নুন বললি কেন? তোর তো "লবণ" বলার কথা।

শহরের বন্ধুটি তখন আবৃত্তি করলো,
" সর্প, শর্ক, ব্যাকরন
তিন পাঁচে পনেরো কিল।
আবার যদি বলি 'লবণ'
কিলের চোটে থাকবে না এই জীবন" :P
৪০টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×