somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই মুহূর্তে কোন কাজটি বিশেষভাবে করা প্রয়োজন

১০ ই মে, ২০১২ দুপুর ১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই মুহূর্তে কোন কাজটি বিশেষভাবে করা প্রয়োজন তা নিরূপণ করতে পারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ,তাহলে আসুন নির্বাচন করার ক্লু জেনে নেই।

১.সুপারম্যানের ধারণা ত্যাগ করুন : আমরা সবকিছুই নিখুঁত সুন্দরভাবে করতে চাই। আর বড় কিছু করার তাড়না আমাদের স্নায়ুর উপর এক অবর্ণনীয় চাপ সৃষ্টি করে। তবে বড় কিছু করতে চাওয়া ও বড় কিছু করা এর মধ্যে অনেক তফাত রয়েছে। বড় কিছু করতে গেলে ছোটখাট অনেক কিছুকে এড়িয়ে যেতে হয়।

২.বিশৃঙ্খলা কাটিয়ে উঠুন : কাজের ঝামেলা কমানোর জন্যে আপনার জমে থাকা কাজগুলোকে দু’ভাগে ভাগ করে ফেলুন। একটি হচ্ছে জরুরী আরেকটি হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। জরুরী গ্রুপে অনেক তুচ্ছ বিষয়ও থাকতে পারে। যেমন বসের চিৎকার, টেলিফোনের ঘণ্টাধ্বনি এ ধরনের ব্যাপার। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, তুচ্ছ বিষয় নিয়েই আমরা বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর প্রতি মন দিলে দীর্ঘস্থায়ী সুফল পাওয়া যায় এবং সময়ও অনেক বেঁচে যায়।

৩.দীর্ঘস্থায়ী লক্ষ্যের জন্যে সময় বাঁচান : সবসময় দেখবেন জরুরী কাজ করতে করতে সময় পার হয়ে যাচ্ছে। মুহূর্তের প্রয়োজন পূরণ করার পর দূরপ্রসারী কাজের জন্যে সময় পাওয়া যাচ্ছে না। দূরপ্রসারী লক্ষ্যের জন্যে প্রতিদিন আধঘণ্টা থেকে একঘণ্টা সময় ব্যয় করুন। পরবর্তী জীবনে দেখবেন এই আধঘণ্টা-একঘণ্টা সময়ই আপনাকে বড় ধরনের তৃপ্তি দিচ্ছে।

৪.সংখ্যার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার ঠিক করুন : আপনার যা যা করা প্রয়োজন তার তালিকা প্রস্তুত করুন। তারপর গুরুত্বের ভিত্তিতে এক থেকে দশ পর্যন্ত নম্বর দিন। এক হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ, আর দশ হচ্ছে সর্বনিম্ন। এক হচ্ছে সবচেয়ে জরুরী, আর তিন হচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম জরুরী। এরপর গুরুত্ব ও জরুরী এই দুই-এর সংখ্যাকে পূরণ করুন। যে কাজের সংখ্যা সবচেয়ে কম তাই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী বলে বিবেচনা করুন।

৫.অগ্রাধিকার নিরূপণের কৌশল : অগ্রাধিকার নিরূপণের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হচ্ছে প্রতিদিন দিনের কর্মতালিকা প্রস্তুত করা। সারাদিন কি করতে হবে লিখে ফেলুন। তারপর সবচেয়ে জরুরী কাজগুলোর পাশে ‘ক’ চিহ্ন দিন। এরপর এই কাজটি করতে কত সময় লাগতে পারে তা অনুমান করে দেখুন। যদি দেখেন সবগুলো কাজ করতে আট ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যাচ্ছে তাহলে তালিকা সংক্ষেপ করুন। সারাদিন অনুসারে কাজগুলো করতে চেষ্টা করুন। গুছিয়ে কাজ করুন : আমাদের অনেকেই অগোছালো অবস্থায় কাজ করি। এতে সময় লাগে বেশি। একটু সচেতনভাবে গুছিয়ে কাজ করলে সময় ও অর্থ দুইই বাঁচানো যায়। টেবিল গোছানো ও কাজের চাপ কমানোর জন্যে যে কাজগুলো আপনার অধীনস্থরা করতে পারে সেই কাগজপত্রগুলোর উপর তাদের নাম লিখে সরাসরি তাদের কাছে পাঠিয়ে দিন। নিজের টেবিলে যে কাজগুলো শুধু আপনি নিজেই করবেন সেই কাগজপত্রগুলো রাখুন। অপ্রয়োজনীয় কাগজে টেবিল জাম করে রাখবেন না। গবেষণায় দেখা গেছে, আপনার টেবিলে আসা কাগজপত্রের মাত্র ২০ থেকে ৪০ ভাগ প্রয়োজনীয় কাগজ। ৬০ ভাগ কাগজই অপ্রয়োজনীয়। আর যে কাগজগুলো আপনি ফাইল করে রাখছেন তার মাত্র ৫ থেকে ১০ ভাগ আপনার কাজে আসবে। তাই অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্র নির্দ্বিধায় ফেলে দিন।

৬.সময়ের অপচয় রোধ করুন : আমাদের যে সময় নেই তা নয়, আসলে আমাদের মনে হয় আমরা খুব ব্যস্ত। কিন্তু মূল্যবান সময়ের একটা বিরাট অংশ অপচয় হয়, এটা ঠিক। আমাদের অজ্ঞাতসারেই অনেক সময় অহেতুক নষ্ট হয়ে যায়। এই নষ্ট সময়কে বাঁচাতে পারলেও দিনে একাধিক কর্মঘণ্টা যোগ করা সম্ভব।

৭.অনাহূত দর্শনার্থী ও ফোন : আমাদের দিনের ৫০ থেকে ৬০ ভাগ সময় অনাহূত দর্শনার্থীর সঙ্গে ও টেলিফোনে খোশালাপ করতে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এরকম অনাহূত দর্শনার্থী অফিসে আপনার কক্ষে প্রবেশ করার সাথে সাথে আপনি চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে যান। ‘কেমন আছেন?’ জিজ্ঞেস করার পরিবর্তে একটু হেসে জিজ্ঞেস করুন, ‘আমি আপনার জন্যে কি করতে পারি?’ অফিসকক্ষে দেয়ালে একটি বড় ঘড়ি রাখুন, যাতে করে আপনি প্রয়োজনবোধে ঘড়ির দিকে তাকাতে পারেন। তাহলে আপনি দেখবেন যে, আলাপ অহেতুক দীর্ঘায়িত হচ্ছে না। কাউকে টেলিফোন করলে তাকে খুঁজে, ডেকে আনতে বলে টেলিফোন ধরে রেখে অহেতুক সময় নষ্ট করবেন না। বরং খবর দিয়ে রাখুন যে আপনি আবার একটি নির্দিষ্ট সময়ে টেলিফোন করবেন। কাউকে রিংব্যাক করতে বললেও নির্দিষ্ট সময়ে রিংব্যাক করতে বলুন। টেলিফোনে আলাপ যাতে দীর্ঘায়িত না হয় সেজন্যে কাউকে অফিসে টেলিফোন করলে লাঞ্চের কিছুক্ষণ আগে অথবা অফিস ছুটির কিছুক্ষণ আগে করুন। বোকার মত আমরা অনেক সময় কাজ করার প্রস্তুতি নিতেই প্রচুর সময় ব্যয় করে ফেলি। যেমন কাজ শুরু করার আগে এক কাপ চা বা কফি খেয়ে মানসিক প্রস্তুতি নেয়া বা কোন টেলিফোন করার আগে পত্রিকার পাতায় চোখ বুলিয়ে নেয়া। এ সব প্রস্তুতি বাদ দিয়ে সরাসরি কাজে বসে যান এবং সেরে ফেলুন। কাজ শেষ করে নিজেকে চা বা কফি দ্বারা পুরস্কৃত করুন। এই ছোট ছোট পদক্ষেপগুলো নিয়ে আপনি মূল্যবান সময় বাঁচাতে পারেন। দীর্ঘসূত্রিতার হাত থেকে রেহাই পেতে পারেন। সময় যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা আসলে আমরা বুঝি না। আধুনিক সভ্যতাই যে শুধু সময়কে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করেছে তা নয়, পবিত্র কোরআন শরীফেও সূরা আর রাহমান-এ সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘কুল্লো ইয়াওমিন হুয়া ফিস্‌শান। ফাবি আইয়্যে আলায়ে রাব্বি ক্যুমা তুকাজ্জিবান।’ অর্থাৎ ‘সময়ের প্রতিটি মুহূর্তেই আমার মহিমা নব নব রূপে দীপ্যমান। তুমি আমার কোন দানকে অস্বীকার করবে?’ বস্তুত, সময়ের অপচয় করা নিজের অজ্ঞাতসারে স্রষ্টার দান ও মহিমাকে অবহেলা করারই শামিল।


ক্রোধ প্রশমনের সহজ উপায়!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১২ দুপুর ১:১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×