আসুন বর্তমান বিশ্বে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর দিকে একটু নজর দেয়ঃ
মুসলিম দারিদ্রপীড়িত দেশগুলোর দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, মুসলিমদের কেন্দ্রভূমি আরববিশ্ব অর্থনৈতিক দিক থেকে এতো শক্তিশালী হওয়ার পরেও বিশ্বর মুসলিম জনগণ কেন দারিদ্রতাকে সঙ্গী করে জীবন পার করছে। নিম্নে পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই আপনারা তা অনুধাবন করতে পারবেন-
আন্ত্জাতিক ব্যাংকগুলোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী মুসলিম বিশ্বের প্রায় ৩৭% জনগোষ্টী দারিদ্রতার মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করে। আর এ সংখ্যাটি সারাবিশ্বের জনগোষ্ঠীর দিকে তাকালে প্রায় (৫০,৪০,০০০০০) পঞ্চাশকোটি চল্লিশ লাখেরও বেশি মানুষ।
গবেষকদের মন্তব্য- সুদানের মত মুসলিম রাষ্ট্রের প্রায় ৯০% মানুষই দারিদ্রতাকে সঙ্গী করে জীবন পার করছে। আবার এদের মধ্যে প্রায় ৬০% লোকই একেবারে কঠিন আর্থিক অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। কিছুদিন ধরে সুদান অনেকটা উন্নতির দিকেে এগোচ্ছে।
অপর মুসলিমৈ রাষ্ট্র মরক্কোর প্রায় (৪৫০,০০০) চার লাখ পঞ্চাশ হাজার পরিবার ঘরবাড়ী নির্মাণে অক্ষম হয়ে লাকড়ি এবং কাপর দিয়ে তাবু বানিয়ে জীবনযাপন করছে। এদের মধ্যে শতকরা ২৫% লোকই মরক্কোর রাজধানী “দারুল বাইযা” তে বসবাস করে। অপর সূত্রে জানা গেছে যে, মরক্কোর শতকরা ১৯% জনগোষ্ঠী প্রতিদিন এক ডলারের থেকে আরো কম পূজিঁ দিয়ে তাদের দৈনন্দিন খাবার দাবার ও প্রয়োজনীয়তাকে পূরণ করে থাকে।
এদিকে ইন্দোনেশিয়া হচ্ছে সর্ববৃহত মুসলিম রাষ্ট্র। জনসংখ্যা প্রায় (২৫,০০০০০০০) পঁচিশ কোটিরও উপরে। এদের মধ্যে প্রায় (১২,০০০০০০) বার কোটিরও বেশি মানুষ দারিদ্রতাকে সঙ্গী করে জীবন যাপন করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর একটি সূত্রমতে- ইউরোপের বাজারগুলোতে আরববিশ্ব থেকে রপ্তানীকৃত পণ্যদ্রব্যগুলোর মুল্য প্রায় (৬৫০,০০০০০০০০০) সাড়ে ছয়শত বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। আর আমেরিকার বাজারগুলোতে আরববিশ্বের পণ্যদ্রব্যগুলোর মুল্য প্রায় (৯৭৫,০০০০০০০০০) নয়শত পঁচাত্তর বিলিয়ন ডলার।
যাকাত উসুলের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাগণ জানিয়েছেন যে, উপরোক্ত হিসাব অনুযায়ী আরববিশ্বের বাৎসরিক যাকাতের পরিমাণ হয় (৮৭,০০০০০০০০০) সাতাশি বিলিয়ন ডলার।
এখন আপনি চিন্তা করুণ যে, এ বিশাল পরিমাণ যাকাতের মূল্যটুকু যদি মুসলিম দারিদ্রপীড়িত দেশগুলোর মধ্যে পৌছে দেয়া হতো, তাহলে কি বিশ্বের কোন মুসলমান অভাবের মধ্যে থাকত ..?!
এরপরও কেন মুসলমানদের এ দুর্গতি..? নিম্নের তথ্যগুলো পড়লেই এর উত্তর পেয়ে যাবেন।
বিগত এক বৎসরে শুধুমাত্র আরব আমিরাতেই প্রায় পঁয়তাল্লিশটি নতুন অত্যাধুনিক আবাসিক হোটেল তৈরির উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারগণ বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও বহুল পরিমাণ পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষনার্থে আরো কিছু সর্বাধুনিক মিলনায়তন (নাট্যমঞ্চ/ক্লাব/বার) উৎপাদনের বিশাল বিশাল কোম্পানি তৈরীর উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।
দুবাই’এর একটি গবেষণামুলক ম্যাগাজিন কর্তৃক প্রচারকৃত তথ্যানুযায়ী জানা গেছে যে , উপসাগরীয় দেশসমূহের (সংযুক্ত আরব আমিরাত, উমান, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন, সৌদি আরব) নাগরিকগণ বর্হিবিশ্ব ভ্রমণের জন্য প্রতিবছর যে পরিমাণ ডলার ব্যয় করে থাকে, তা সমস্ত ইউরোপের নাগরিকদের খরচের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। মুসলিম প্রধান এ ছয়টি দেশের বিলাসী জনগণ প্রতি বছর (৩৫,০০০০০০০০০) প্রায় পঁয়ত্রিশ বিলিয়ন ডলার শুধুমাত্র বর্হিবিশ্বে ভ্রমণ এবং সময় অপচয়ের জন্য ব্যয় করে থাকে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি ফ্যাশন সংস্থা জানিয়েছে যে, বাসর ঘরের একরাত্রির ফুল সজ্জায় তারা প্রায় আশি হাজার ডলার খরচ করে থাকে। অপর একটি সুত্রমতে- বিগত গ্রীস্মে উপসাগরীয় দেশসমূহের নারীগণ নিজেদের পোষাক ও সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য যে প্রসাধনী ক্রয় করেছেন, তার মুল্যের পরিমাণ হচ্ছে (৪৫,০০০০০০০) পয়তাল্লিশ কোটি ডলার। অপর এক সংবাদ সূত্রমতে- সৌদি আরবে প্রতি বৎসর যে সেন্ট বা সুগন্ধি বিক্রি হয়, তার মুল্যের পরিমাণ হচ্ছে ১.৭ বিলিয়ন রিয়াল।
রিসেন্টলি সৌদি আরবে নতুন টাওয়ার হতে যাচ্ছে “কিংডম টাওয়ার” যা “বুরুজ খলিফা” কেও পেছনে ফেলবে। এটার মালিক প্রিন্স ওলিদ বিন তালাল (সৌদি যুবরাজ) । ওসামা বিন লাদেন পরিবারের অধিনে আছে প্রোপার্টির কাজ। ১ কিমি লম্বা, ২০০ তলা... দুনিয়ার সবচেয়ে বড় বিল্ডিং কমপ্লিট হবে ২০১৯-২০ সালের দিকে। মাত্র ১.২৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হচ্ছে এটা বানাতে।