somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"LOVE NEVER DIE"

২১ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ সে বিশেষ দিন। তোমার সাথে আবারো আমার দেখা হবে। সব কিছু শুরু হয়েছিল, যখন তুমি ছিলে মোবাইলের ভিপ ভিপ করে জ্বলতে থাকা সবুজ বাতি। শুধুমাত্র একটি আওয়াজ। ডিজুসে ২টাকায় সারারাত কথা যে হাজারো অদেখা প্রেমের জন্ম দিয়েছিল, তারমধ্যে আমরাও ছিলাম। অবশ্য আমাদের প্রেমটা অদেখা থাকেনি। স্কুল ফাকি দিয়ে ১৯৬কি:মি: পথ অতিক্রম করে সাড়ে চার ঘণ্টা পর যখন কুমিল্লা পৌঁছালাম, তখন তুমি বিশ্বাস করতে পারছিলেনা! মৌলভীবাজার থেকে একটা ছেলে তোমার সাথে দেখা করতে চলে এলো! এরপর আরো ২ঘণ্টা অপেক্ষার পর তুমি এসেছিলে মাত্র ৫মিনিটের জন্য!! কিন্তু ঐ ৫মিনিটই যথেষ্ট ছিল। আমার বাকিটা জিবন তোমার সাথে যুক্ত করতে।

আমরা বড় হলাম, সাথে সাথে আমাদেন প্রেমটাও। তুমি সিলেটে এসে কলেজে ভর্তি হলে, আর আমরা কাটানো শুরু করলাম আমাদের জিবনের সবচে' স্মরণীয় অধ্যায়। তখন বলতে গেলে প্রতিদিনই দেখা হতো।
...আর এখন চাইলেও দেখা করা যায়না।

আমরা রিক্সায় প্রচুর ঘুরেছি। তুমি বলতে, আমি রিক্সার ডান পাশে বসলে তোমার জন্য আমার কাধে মাথা রাখা অনেক সহজ হয়। রিক্সার চাঁকা ঘুরতো। তুমি চোখ বন্ধ করে আমার কাধে মাথা রাখতে আর আমার নিজেকে পৃথিবীর সবচাইতে সুখি মানুষ বলে মনে হতো। কতই না ভালবাসতে তুমি আমাকে!
আচ্ছা, তুমি এখন যার সাথে আছো, তাকেও কি তুমি সেই একি রকম ভালবাস!?

ভালবাসতাম আমিও তোমাকে। মনে আছে? একবার প্রচন্ড গরমে তুমি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলে। তোমাকে অজ্ঞান দেখে আমার যে কি অবস্থা হয়েছিল!! তোমার জ্ঞান অল্প কিছুক্ষের মধ্যে ফিরে আসলেও, আমাকে স্বাভাবিক করতে কিন্তু তোমাকে অনেক ভুগতে হয়েছিল। সিলেট মডেল থানা কি কখনো ভুলতে পারবো আমরা! ঐ থানার সামনে তুমি প্রথমবার আমাকে কিস্ করেছিলে!! তোমার সাহসও ছিল বটে। ভিতু তো ছিলাম আমি। তাই সময় থাকতে তোমাকে অর্জন করতে পারিনি! মনে আছে, পোলার রোডের আইল্যান্ডের উপর, কুয়াশার চাদর আমাদের আলাদা করে ফেলত বাকি পৃথিবী থেকে! তখন আমাদের শরীর যত কাছে ছিল, মন ছিল তারচেয়েও কাছে।
এখন সব কিছুই দূরে,, বহু দূরে।

অন্যান্যদের মতোই আমাদের মধ্যেও জগড়া হতো। তবে শেষের দিকে জগড়াটা একটু বেড়েই গিয়েছিল। তুমি বিয়ের কথা বলতে আর আমি কেরিয়ারের কথা ভাবতাম। আরো এস্টাবিল্স্ হওয়ার কথা ভাবতাম। বলতাম বিয়ের জন্য বাকি জিবন তো পরেই আছে! তোমার কথা, বিয়ের জন্য তোমার পরিবারের চাপের কথা কিছুই না আমি ভাবতাম না। অনেক স্বার্থপর হয়ে গিয়েছিলাম। অনেক বেশি!! শেষ যেদিন তোমার সাথে আমার কথা হলো, সেদিন আমার জ্যাকাট-টা বুকে জড়িয়ে ধরে প্রচুর কেঁদেছিলে! কিন্তু আমি না কিছুই করতে পারছিলাম না।..

এরপর ৫টি বছর কেটে গেল। আজ তোমার সাথে আমার আবারো দেখা হবে। অবাক হই এটা ভেবে যে, তোমার জামাই কিভাবে এখনো তোমার এক্স-বয়ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে দেয়!! আমি হলে কিন্তু জিবনেও দিতাম না। হাহাহা।..
.. ঐ যে তুমি চলে এসেছো। হাতে বরাবরের মতোই গোলাপ ফুল। ফুলগুলো আস্তে করে তুমি আমার কবরের উপর রাখলে। যদিও কবরটা এখন আর আমার না। গত ৫বছরে এখানে প্রায় ১০জনকে দাফন করা হয়েছে। যাই হউক, তোমার কান্না শুরু হয়েছে। আমি জানি তোমার কান্না আরো বাড়বে। বাড়তেই থাকবে। সেদিন এক্সিডেন্টের পর যখন আমি হাসপাতালে নিজের শেষ নিঃশ্বাসগুলো গুনছিলাম, তুমি আমার জ্যাকাট-টা বুকে জড়িয়ে এভাবেই কাঁদছিলে। পাগলের মতো কাদছিলে!!

আমি খুব ছোটবেলায় টল্স টয়ের একটা উক্তি পড়েছিলাম। যেখানে উনি বলেছিলেন, অতীত বা ভবিষ্যৎ বলে কিচ্ছু নেই। বর্তমানটাই সব। আমাদের কিছু বলার থাকলে এক্ষুণি বলতে হবে। করার থাকলে এক্ষুণি করতে হবে। ভলবাসতে হলেও এক্ষুণি বাসতে হবে। ভবিষ্যৎ একটা মরিচীকা। এখন আমার খুব মনে হয়, যখন তুমি আমার সামনে ছিলে, তখন কেন আরেকটু ভাল করে তোমাকে দেখলাম না, স্পর্শ করলাম না, অনুভব করলাম না! টল্স টয়ের উক্তিটা আমি শুধুই পড়েছিলাম। ধারণ করতে পারিনি। আসলে আমরা কেউই পারিনা।-
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:৪২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×