কোন জায়গায় না থেকে সেটার অসঙ্গতি অনুধাবন সম্ভব নয়। আর বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায় আসলে হচ্ছে টা কি?
আমাদের পলিসিমেকার গণ ভারী ভারী ডিগ্রিধারী এবং সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তি। তাদের প্রনেত আইনের বিপক্ষে কথা বলতে গেলে সেটা আসলে নিজেদের পায়ে কুড়োল মারার নামান্তর। অনেকে বলে ফেলেন পাকনা, অনেকে ধরেন বেআদবি। তাই আমরা মুখে আঙ্গুল নিয়ে বসে থাকি।
অথচ, ভাবুন একবার, যদি তাদের নিজেদের আইনই- নিজেদের দুদিন পর পর পরিবর্তন করা লাগে, আসলে সেটা কতটুকু ভালো ছিল? তাহলে যারা আগে বিরোধিতা করেছে তারা বা তাদের মত কেন পরবর্তী দফায় পরিবর্তনের আগে বিবেচিত হবে না?
জ্ঞান কি বয়েস হিসেবে বিবেচ্য নাকি জ্ঞান স্রেফ জ্ঞান!!! শুধুমাত্র বয়েস যদি বিবেচ্য হয়, তাহলে আর জ্ঞানার্জনের দরকার কি? প্রবীণ দের সবকিছুই মেনে নেই বিনা বাক্য ব্যায়ে। তিনি যথেচ্ছাচার করলেও মেনে নিয়ে ডঙ্কা বাজাতে থাকি অনায়াস।
কথা বলছি- গত বছর থেকে আরম্ভ হওয়া ব্যাংকের ঋণ শ্রেণীবিন্যাসের কাঠামো নিয়ে।
ঋণ খেলাপ হওয়া কমাবার প্রত্যয়ে কম নীতি প্রনয়ন হলনা। বাংলাদেশ ব্যাংক BRPD -মাস্টার সার্কুলার ৫ এর পর ১৪ আসলো গত বছরের সেপ্টেম্বরে। সেটাও সমস্যা, আচ্ছা; সেটা কার্যকর করা হল আরও একটা ত্রৈমাসিক হিসাবের পর ডিসেম্বরে গিয়ে। তারপর; দেখা গেলো ভয়ানক অবস্থা। ব্যাংক গুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। ফলে আনা হল ১৯। ৫ এবং ১৪ এর একটি ব্লেন্ড, সোজা ভাষায় শরবত।
সেটাতেও কাজ হলনা, ব্যাংক গুলোর প্রফিট কমে ছন্নছাড়া অবস্থা। এখন আবার সঞ্ছিতি হিসেবে পরিবর্তন করা হচ্ছে।
ব্যাংক গুলোর প্রফিট সেন্টার হোল ব্রাঞ্চগুলো বা শাখা ব্যাংকিং। একেবারে কোর ফিল্ড লেভেল বা মাঠ পর্যায় বলা যায় শাখা গুলোকে। ওই নীতি গুলো এবং ভোক্তা- ঋণ গ্রহীতাদের সাথে যুদ্ধ করে মুনাফা অর্জনের মুল কাজটাই করেন শাখা-র কর্মী- ব্যাবস্থাপকেরা। যেকোন নীতি প্রনয়নের আগে তাই একেবারে কর্মী পর্যায় পর্যন্ত কথা বলাটা খুবই জরুরী।
বাংলাদেশে এই হরিজন্টাল ব্যাবস্থাপনা মানা হয়না বলেই আজ এই অবস্থা। মাটিতে পা না রেখে নেয়া সকল সিদ্ধান্ত তাই বারবার ভুপাতিত হয়। একই কাজে তাই হয় সময়ক্ষেপণ, প্রচুর আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয় প্রতিষ্ঠান, সমাজ তথা গোটা রাষ্ট্র।
দেশ বদলাবে কবে আর কিভাবে? বারংবার একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়ের উপর একটি আদর্শিক নীতি-তেই আমরা এখনো আসতে পারছিনা। সেখানে হাজার হাজার ছোট ছোট সমস্যার সমাধান আশা করাটা হাস্যকর ঠেকে মাঝে মাঝে।
একটি দীর্ঘমেয়াদী, পূর্ণাঙ্গ, সহজবোধ্য, সাধারণ নীতিমালা গঠিত হোক ঋণ শ্রেণীবিন্যাসের জন্যে। সবার অংশগ্রহণে, সবার জন্যে।