এবারের ইদে লম্বা ছুটি পেয়েছিলাম। এত বড় ছুটি বাবা মাকে দেখার জন্য মন আকুপাকু করছিল তাই সিদ্ধান্ত নিলাম পুরো পরিবার মিলে নিজের বাড়ি নড়াইলে যাবো। প্রায় ৯ দিনের ব্যাপার, নিজের বাসার টবে লাগলো গাছগুলোর জন্য মন খারাপ হচ্ছিল, এতদিন গাছগুলো পানিছাড়া বেচে থাকতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম।
নির্ধারিত দিনে যথারীতি নড়াইলের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। কিন্তু পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে গিয়ে মন খারাপ হয়ে গেল। যানবাহনের দীর্ঘ সারি। একের পর এক ফেরিওয়ালারা গড়িতে উঠছে বিভিন্নরকম পন্য বিক্রি করতে, ফেরিতে উঠতে এমনিতেই দেরি তার উপর ফেরিওয়ালাদের এইসব হাকডাক অসহ্য লাগছিল। প্রায় ৫ ঘন্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে উঠতে সক্ষম হলাম।
প্রমত্তা নদীর বুকে ১০-১৫টি গাড়ি বহণ করে অন্য পারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বিশাল এই ফেরিটি। যতদুর তাকানো যায় শুধু পানি আর পানি, তখন মনে গেল সেই বিখ্যাত গান
'নদীর কুল নাই কিনার নাই অথৈ দরিয়ার পানি,আমাদের ফেরির পাশ দিয়ে ছুটে চলা অন্যফেরি, লঞ্চ নৌকাগুলোকে দেখে আমার ছেলেমেয়েরা খুবই আনন্দিত।
একসময় আমাদের বাস ফেরি পার হয়ে অন্যপারে চলে আসলো, এবং দ্রুত গতিতে গাড়ি ছুটতে লাগলো । পুনরায় আরও একটি ছোট ফেরি পার হতে হবে। এটার নাম কালনা ফেরিঘাট এটি গোপালগঞ্জ জেলার উপর, এই ঘাটেই আমরা ইফতার সেরে নিলাম।
এই ভদ্রলোক একজন মসজিদের টাকা আদায়কারী, দীর্ঘ ২৮ বছর এই ফেরিঘাটে টাকা আদায় করছেন। পৃথিবীর সব কিছুই শেষ হয় কিন্তু উনার মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হয় না।
যাই হোক সব ভ্রমণ ক্লান্তি দূরে ঠেলে অতঃপর নিজেদের বাড়িতে পৌছালাম। দাদা দাদীকে পেয়ে আমাদের আমার দুই ছেলেমেয়ে মহা আনন্দিত।
চলছে ফলের মৌসুম আমাদের গাছগুলোতে বাহারি ফলের সমাহার, সারাবছর যে গাছগুলোর দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না, কিন্তু এই মৌসুমে সেই গাছগুলোর কত কদর। আসলে মানুষের জীবনটাওতো এমনই, যতক্ষণ আপনি কর্মক্ষম ততক্ষণই আপনার কদর।
আমাদের বাড়িটি এই সুন্দর খালটির পাড়ে। গ্রীষ্মে পানি কম হলেও এই খালে প্রতিদিন জোয়ার ভাটা হয়। জোয়ারের সময় পানি বেশ বেড়ে যায় এবং পানি পরিস্কার থাকে আবার ভাটায় পানি কম থাকে এবং পানি ঘোলা থাকে। বর্ষা মৌসুমে খালে প্রচুর দেশি মাছ পাওয়া যায়।
আমাদের এমপি মাশরাফি এখন ওয়ার্ল্ডকাপ খেলতে ইংল্যান্ডে থাকলেও এলাকার উন্নয়ন কাজ পুরোদমে চলছে
আমাদের ঈদগাহ পাকা করা হয়েছে, মুসল্লিদের নামাজ পড়ার সুবিধা হয়েছে।
ইটের রাস্তা ধরে ইনি গ্রামের হাটে যাচ্ছেন
টিনের চালে বুনো কবুতর
পথের পাশের অদ্ভুত সুন্দর জংলী গাছ।
এ কয়েকদিনে এমন মুশলধারে বৃষ্টি বেশ কয়েকবার হয়েছে।
আরও কিছু ছবি দেওয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু আর ধৈর্য কুলাচ্ছে না।
চমৎকার কিছু সময় কাটিয়ে প্রিয়জনদের কাদিয়ে পুনরায় ঢাকায় ফিরে আসা।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১৯ সকাল ১১:২৪