মানুষ হিসেবে আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে আমার একজন সৃষ্টিকর্তা আছে। আমি হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান যে কোন ধর্মের হতে পারি, কিন্তু সৃষ্টি কর্তা একজনই। আসুন একটু আলোচনা করে দেখি সৃষ্টি কর্তা আমাদের কোন ধর্ম পালন করতে বলছে। সৃষ্টি কর্তা যুগে যুগে অনেক বিধান দিয়েছেন এবং পথ প্রদর্শক প্রেরণ করেছেন। সর্বশেষ বিধান দিয়েছেন কোরআন যেটি নাযিল করেছেন আমাদের রাসুল (সাঃ) এর উপর। এ কিতাবে সৃষ্টি কর্তা স্পষ্ট বলেছেন যে, তোমাদের জন্য দীন হিসেবে ইসলামকে পুরনাঙ্গ করে দিলাম। আর কোন বিধান কোনদিন আসবেনা, প্রয়োজনও নেই। মানুষের জন্য সবচেয়ে উত্তম পন্থা কি হতে পারে তা সৃষ্টি কর্তা কোরআনে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন এবং এই কিতাবকে সমগ্র মানব জাতির জন্য সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বিধান হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এই কিতাবের মুল বক্তব্য হল সত্য, কল্যাণ, দয়া, ত্যাগ, সাহায্য ইত্যাদি। মানুষ ও সমস্ত জীবের জন্য দয়া ও ত্যাগ করা, সত্য ও নায় পথে চলা, সৎ কাজ করা, অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি।

সৃষ্টি কর্তা যুগে যুগে মানবজাতির পথ প্রদর্শনের জন্য অসংখ্য নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন। তারা আমাদের সঠিক পথ দেখিয়েছেন এবং কিভাবে সৃষ্টি কর্তার উপাসনা করা যায় তা শিক্ষা দিয়েছেন। অবশেষে সৃষ্টি কর্তা মানুষের জন্য ধর্ম হিসেবে ইসলাম কে মনোনীত করেছেন এবং কোরআন নাযিলের মাধ্যমে তা সম্পন্ন করেছেন। আল্লাহ কোরআনের মধ্যে স্পষ্ট করে বলেছেন, তোমাদের জন্য ইসলাম পুরনাঙ্গ করে দিলাম এবং ইসলামকে একমাত্র ধর্ম হিসেবে মনোনীত করলাম। আল্লাহর পক্ষ থেকে আর কোন ওহী বা বানী ফেরেশতার মাধ্যমে মানুষের মাঝে আসবেনা। কোরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে পূর্ববর্তী সমস্ত কিতাবের সমর্থন করে। বর্তমানে পূর্ববর্তী কোন কিতাব অনুসরণ করার প্রয়োজন নেই। পূর্বের কিতাবগুলো তখনকার মানুষ ও সময়ের উপযোগী করে নাযিল করা হয়েছিল। কিন্তু কোরআন সর্বকালের সমস্ত মানুষ ও সময়ের জন্য পরিপূর্ণভাবে নাযিল হয়েছে। এমন কোন জটিল সমস্যা নেই যার সমাধান কোরআনের মধ্যে নেই। বিজ্ঞান, চিকিৎসা, ভূগোল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, গনিত, দর্শন সহ সব বিষয়ই এই কোরআনের মধ্যে আছে।

আমাদের সমাজের তথাকথিত আলেম সম্প্রদায় মানুষের কাছ থেকে কোরআনকে দূরে রাখার জন্য নানা রকম ফতোয়া প্রচার করে আসছে। কিছু লোক শুধু আরবি ভাষায় কোরআন পড়ে কিন্তু তার অর্থ কিছুই বোঝেন না। তাদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন তা হল, কোরআন কি পড়া জরুরী না বোঝা জরুরী? যে ভাষায় পড়লে আমি কোন অর্থই বুঝবনা সে ভাষায় পড়ে কি লাভ? পুরো কোরআন না বুঝে সম্পূর্ণ মুখস্ত খতম করার চেয়ে একটা আয়াত বুঝে পড়াটা আমার কাছে উত্তম মনে হয়।