somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুমিল্লায় সংখ্যালঘু আক্রমনঃ আমাদের লজ্জা

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংখ্যালঘুরা নির্যতনের স্বীকার , আর সংখ্যাগুরুরা অপপ্রচারের ।
সাম্প্রদায়িকতা বা সাম্পদায়িক দাঙ্গা একটি মধ্যযুগীয় বা তারও পূর্বের বৈশ্বিক সংস্কৃতি । মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে জাতীয়তাবাদ । গোড়া মৌলবাদীরাই যে সব সময় সাম্প্রদায়িকতার জন্য সরাসরি দায়ি এমনটা না হলেও তাদের বক্তব্য ও প্রচারনা সাম্প্রদায়িকতা জীয়িয়ে রাখে যুগের পর যুগ ।
যেকোনো ঘটনারই একটা শুরু থাকে । ভারতের অতি সম্প্রতি যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বেশ আলোরন সৃষ্টি করেছে , আমি যতদুর জানতে পেরেছি সেটা কয়েকজন যুবকের উগ্র সাম্প্রদায়িকতা থেকে শুরু হয়েছে । অন্যায় অবশ্যয়ই তারা করেছে তবে এর দায়টা শুধুই তাদের । শাস্তি শুধু তাদেরই পাওয়া উচিত্‍ । তবে জল গড়ানো শুরু করলে তা সমুদ্রে না পৌছে থামে না । নির্যাতিতদের কিছু অংশ প্রথমেই নির্যাতনের দায়টা পুরো সংখ্যা গুরু জাতির উপর চাপিয়ে দেয় আর সংখ্যাগুরুর কিছু অংশ অপরাধীদের সাফাই গাওয়া শুরু করে । আশ্চার্যজনক হলেও সত্যি যে এই 'কিছু অংশে'র মধ্যে শুধু অশিক্ষিত ক্ষমতাবানরা নয় , এমন মানুষও থাকে যারা সমাজে বুদ্ধীজিবী হিসেবে প্রসিদ্ধ ।
বাংলাদেশের চিত্র অবশ্য অনেকটাই আলাদা । এখানে ভালো খারাপ যাই ঘটুক রাজনৈতিক দলগুলো তার থেকে ফায়দা লুটতে চায় । এইজন্য সরকার সকল নৈরাজ্যের দায় চাপায় বিরোধীদের উপর আর বিরোধীরা এসব ঘটনা সরকারের ব্যার্থতা হিসেবে প্রচার করে ।
সংখ্যাগুরু হিসেবে যখনই শুনি কোনো যায়গায় সংখ্যালঘুর উপর আক্রমন হয়েছে , শুধু খারাপই লাগে না ভীষন লজ্জাও লাগে । ঘটনা গুলো ঘাটলে দেখা যায় বেশিরভাগ ঘটনাই ঘটে কিছু উগ্রপন্থীদের কারনে । তাদের আওয়ামীলিগ বিএনপি বা জামাত ট্যাগিং না দিয়ে তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করলে ঘটনার মোটামুটি একটা বিহিত হয় ।
কিছু কিছু ঘটনা ঘটে রাজনৈতিকভাবে বিরোধীদের ফাসানোর জন্য । এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল ঘটনার দায় এড়াতে পারে না । দলকে বিতর্কের উর্ধে রাখতে অভিযুক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত্‍ । যদিও বাংলাদেশের রাজনিতিতে এমন দৃষ্টান্ত বিরল ।
কখোনো সংখ্যালঘুয়া নিজেরা বিশৃংক্ষলা ঘটালেও সন্দেহের দৃষ্টি সংখ্যাগুরুদের দিকেই উঠে । এসব ঘটনার পুনরাবৃতি রুখতে তাদেরকেও অবশ্যয়ই বিচারের আওতায় আনতে হবে ।
কিছু কিছু ঘটনায় সংখ্যালঘু কারো বারবারিও থাকে । তবে এসব ঘটনা বিরল ।কারন সংখ্যালঘু এম্নিতেই ছোটো মনে থাকে । তারপরও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর কোনো সদস্য বিশৃংক্ষলা ঘটালে তা সংখ্যাগুরুদের সর্বোচ্চ ধৈর্য সহকারে দেখা উচিত্‍ এবং বিষয়টিকে জাতিগত সংঘাতে রুপ না দিয়ে ব্যাক্তিগত পর্যায়ের বিচারের মাধ্যমেই নিষ্পত্বি করা উচিত্‍ ।
সবার উপরে মানুষ সত্য । বিভিন্ন রাজনৈতিক , দার্শনিক ও ধর্মীয় মতবাদ মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে । এর থেকে বেড়িয়ে আসা সম্পূর্ণ অসম্ভব কিন্ত এসব মতবাদের উর্ধে থেকে আমরা যদি চিন্তা করতে পারি যে আমরা মানুষ , তাহলেই সকল মানুষকে আমরা সমান চোখে দেখতে পারবো ।
>উপরের অংশটুকু ১৪ জানুয়ারী ২০১৪ তারিখে সামহোয়্যারইন ব্লগে প্রকাশিত । মানুষ যদি সত্য হয় তবে মানুষের প্রধান ধর্ম মানবতা । মানুষের কাতারে দাড়াতে হলে, নিজেকে মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে হলে মানবতাকে স্বীকার করতে হবে । হিংস্রতা পশুর ধর্ম । পশুর কোনো কান্ডজ্ঞান থাকে না । সৃষ্টিকর্তা একমাত্র মানুষকেই ন্যায় অন্যায় এবং উচিত্‍ অনুচিত্‍ বেছে নেয়ার জ্ঞান দান করেছেন । যার মধ্যে এসব জ্ঞানের অভাব পরীলক্ষিত হয় তাকে মানুষের কাতারে ফেলাটা সঙ্গতিপূর্ণ নয় । বায়োলজিক্যালিই মানুষকে অনন্য প্রাণীর স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে এই বিশেষ গুনটির কারনে ।
হাত পা নাক চোখ মনুষ্য সদৃশ হলেই মানুষ হওয়া যায় না ।
সুতারং কিছু হিংশ্র জানোয়ার যদি কোনও কারনে ক্ষেপে গিয়ে মানববসতি আক্রমন করে বসে তবে তাদেরকে নিষ্ঠুর হাতে প্রতিরোধ করাই মানুষের দায়িত্ব । ব্যাক্তি যদি অপরাধ করেও থাকে তবে দায়টা শুধুই তার, তার পরিবার, সমাজ, জাতি বা অন্য কারো নয় । এবং সেই অপরাধের বিচারের জন্য বিচারক আছে , আছে বিচারের মাপকাঠিও । এক ঊর্ধে গিয়ে যদি ব্যাক্তির বিরুদ্ধেও ব্যাবস্থা নেয়া হয় তবে তা অবিচার ।
অবশ্য বিচার অবিচার বিবেচনার ক্ষমতা পশুর থাকার কথা নয় । সংখ্যাগুরুর তকমা গায়ে সাটানো থাকার কারনে আরো একবার লজ্জিত । এই লজ্জার গ্লানী আমরণ ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:০৮
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×