গাজা বর্তমান সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু। দৈর্ঘ্যে ৪১ কিলোমিটার, প্রস্থে কোথাও ৬, আবার কোথাও ১২ কিলোমিটার। ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই উপত্যকাটি ঈদের দিনেও যেন মৃত্যু উপত্যকা। এ অঞ্চলের ৬২ কিলোমিটার সীমান্ত রেখার ৫১ কিলোমিটারই ইসরায়েলের সঙ্গে। বাকি ১১ কিলোমিটার মিশরের সঙ্গে। আরেকদিকে ভূমধ্যসাগর।
গত ৮ জুলাই থেকে গাজায় অনবরত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এমন কোনো শক্তি নেই যা প্রয়োগ করছে না দেশটি। স্থল, জল ও আকাশ- সব পথেই আক্রমণ চালাচ্ছে তারা। এটিকে যুদ্ধ বলা অসম্ভব। হামাস কেবল প্রতিরোধ করছে মাত্র। এখন পর্যন্ত গাজায় ১৫০০ উপরে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
১৯৪৮ সাল থেকেই ফিলিস্তিনে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। ধ্বংসযজ্ঞের এই মাত্রা কখনো একটু বাড়ে, কখনোবা একটু কমে। তবে কখনোই তা বন্ধ থাকে না।
গাজার আরব মুসলমানদের স্বজাতি অন্যান্য আরব দেশগুলোও এ ব্যাপারে ভয়ানক রকমের নীরবতা অবলম্বন করছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কণ্ঠ তুলছে কেবল ইরান, তুরস্ক ও কাতার। তবে প্রতিবাদ করা ছাড়া এই দেশগুলোর আর তেমন কিছুই করার নেই। কেননা, ইসরায়েলের পিছনে রয়েছে বিশ্বের শক্তিশালী সব সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি।
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র বলে সুপরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ইসরায়েল ও মিশর সফর করেও ইসরায়েলি হামলা থামাতে পারেননি। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনও ইসরায়েল সফর করে গেছেন ক’দিন আগে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
ফিলিস্তিনের নিকটতম প্রতিবেশী মিশর। আরবের এ স্বজাতিও ইসরায়েলের পক্ষে কাজ করছে। সৌদি আরব অসম্ভব রকমের নীরবতা অবলম্বন করছে। অন্যান্য আরব ও মুসলিম বিশ্বও একই পথ অনুসরণ করছে। তবে, মুসলিম দেশগুলোর সরকারগুলোই মূলত নীরব। তবে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে জনগণ।
কাঁদলেন জাতিসংঘ কর্মকর্তা......!
বিধ্বস্ত গাজার অমানবিক পরিস্থিতি ও তা সামাল দিতে জাতিসংঘের অসহায়ত্বের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বিশ্বসংস্থাটির এক কর্মকর্তা। গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ তাদের শিবিরগুলোতে শরণার্থীর ঢল সামলাতে এবং তাদের মানবিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানান সংস্থাটির মুখপাত্র ক্রিস গুনেস। “সময় এমনও হয়, যখন চোখের পানি মুখের ভাষার চেয়েও স্পষ্ট ভাব প্রকাশ করে,” বলেন গুনেস। “গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ হিমশিম খাচ্ছে, আমাদের সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। আমাদের কর্মীদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, অশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষের জায়গা হচ্ছে না। এই পরিস্থিতির শেষ কোথায়?” তিনি আরো বলেন, গাজায় তাদের ৮৬টি শরণার্থী শিবিরে এখন দুই লাখ ২৫ হাজার ১৭৮ জন বাস্তুহারা আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যেই গাজা প্রায়ই ধ্বংস হয়ে গেছে। তাহলে এই ঘরবাড়ি হারা মানুষগুলো কোথায় যাবে? যুদ্ধেরই বা শেষ হবে কবে?