somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের মহাপ্রয়াণ ও ভারতীয়দের গল্প

২২ শে জুলাই, ২০১২ সকাল ৯:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের সমকালীন শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের মৃতু্যতে ভারতীয় মিডিয়ার নিস্পৃহতা নিয়ে বেশকিছু লেখা দেখলাম। ভালো লিখেছেন সবাই। তারা কোন মানসিকতার তা না বুঝতে পারার মতো এতো বেবোধ আমরা নই। কিন্তু প্রতু্যত্তরে আমরা কী দিই সেই বিষয়ে একটা কাহিনী না বল পারছি না।...

আমি শুনেছি এদেশের কোনো মানুষের সাথে ওপারের কারো পরিচিত হওয়ার পরের কথা। মানে আদর আপ্যায়নের ব্যাপারটা। দুপুরের খাবারে একটা ডিমের চার-ভাগের একভাগ তার বাংলাদেশী বন্ধুকে তুলে দেবে পাতে। আর ৩২ পাটি দাঁত কেলিয়ে বলবে, দাদা ডিমের পুরোটাই খেতে হবে কিন্তু !
এই কথার সত্যতা পেয়েছি পরে। একজন আমলা ভারত-বাংলাদেশের ভূ-খণ্ড সমস্যা সমাধানে জেলা পর্যায়ে দুতরফা দুদেশের মধ্যে বৈঠকের কথা বলছিলেন তার বন্ধুদের সাথে। আমি সেই আলোচনা থেকে যতটুকু শুনেছি তার সারমর্ম হচ্ছে, ভারতের ৪/৫জনের প্রতিনিধিদলের জন্য আমাদের ওই আমলারা আয়োজন করেছিলেন এলাহি খানাপিনা। মানে দু-তিনপ্রকার মাংস, কয়েক পদের মাছ, ডিম, সবজি, দই ... মানে সাধারণত আমরা অতিথি আপ্যায়নে যা যা দিয়ে থাকি। তারা মানে ভারতের আমলারা খাবারের আয়োজন দেখে অভিভুত হয়ে যান। কারণ পরের জন্য এমন খাওয়ার আয়োজন তারা এই জনম কেনো পরজনমেও কল্পনা করতে ভয় পান। যাহোক পেটপুরে চেটেপুটে খেয়ে ছিলেন তারা। আর যাবার বেলায় যে নেমন্তন্ন তারা করে যান, তাতেও কিছুটা সংশয় ছিল। দাদা, আপনারাও তো শিগগির আসছেন, এমন আপ্যায়ন আমরা পারবো না ঠিকই, তবে চেষ্টার কোনো কমতি থাকবে না... ইত্যাদি টাইপের।
যাহোক আমাদের প্রতিনিধিদল সেদেশে যান এবং আপ্যায়িত হন- স্রেফ চা বিস্কুটে। কেননা আলোচনা ছিল অল্প সময়ের। ওরা এমন বেহায়া যে, সভা দুপুরের মানে একটার আগে শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা জানান, সময় হয়নি তো তাই দাদা লাঞ্চ করাতে পারলাম না।
মজার বিষয় হলো, সপ্তাহ খানেক বাদে ভারতের ওই প্রতিনিধিরা আবার এলেন এদেশে। তখন আমাদের দেশের প্রতিনিধিদের একজন জৈষ্ঠ এক আমলাকে জানান তার ক্ষোভের কথা। স্যার ওরা আমাদের বিশ্রিভাবে অপমান করেছে। এবার আমরা তাদের একটা টোস্ট আর লাল চা এক কাপ করে দেবো।
কিন্তু তিনি রাজি হননি। ওই আমলা বলেছিলেন, আমরা এদেশের মানুষ। আমাদের হৃদয় অনেক বড়, এদেশ আমাদের তেমন আতিথেয়তা শেখায়নি। অর্থাৎ সেবারও তারা আয়োজন করেন রাজকীয় খানাপিনার।
এমন আয়োজন দেখে ভারত থেকে আসা অতিথিরা লজ্জা পেয়েছিলেন কিনা জানি না.. তবে, সংকোচ একটু বোধ হয় হয়েছিলো তাদের।
অঅয়োজন দেখে তারা বিস্ময়ভাবটা একদম লুকোতে পারেননি। তাদের একজন বলেই ফেললেন, দাদা আপনারা গিয়েছিলেন আমরা কিছুই করতে পারিনি। তারপরও আপনারা কী বিশাল কারবার করেছেন আমাদের জন্য! অপনারা অতিথিসেবা করতে পারেনও বটে!
আমাদের আয়োজকরা চুপ করে সব শুনলেন। দাদারা খাচ্ছেন। খাবারের একেবারে শেষ পর্যায়ে মুখ খুললেন আমাদের জৈষ্ঠ আমলা।
তিনি বললেন, পাকিস্তানিদের সাথে আমরা ছিলাম দীর্ঘদিন। আর কিছু না শিখলেও অন্তত এটুকু শিখেছি তাদের কাছ থেকে কীভাবে অতিথিদের সেবা-যত্ন করতে হয়। তাছাড়া আমরা তো এদেশেরই সন্তান। আমাদের পরিবার থেকেই শেখানো হয় অতিথিরা যেনো কোনোভাবেই মন খারাপ না করে সেদিকে নজর রাখার... আমরা সেসব কখনোই ভুলি না, ভুলতে চাইও না!
ওনাদের কী হয়েছিলো জানি না। সামান্যতম লজ্জাবোধ থাকলে কিছুক্ষণ আগে গলাধকরণকৃত খাবার উগড়ে যেতো। কত বড় বেহায়া, বেলাজ, বেশরম না হলে হে হে হে বলে তা খেতে পারে এইসব জানোয়ারগুলো।
আর তারা করবে আমাদের হুমায়ুন আহমেদের গুণগান। তার মৃতু্যতে তাদের কী এসে যায়! এখানে কি তাদের কোনো বাণিজ্যিক স্বার্থ আছে। আমি বিস্মিত হই না তাদের কোনো আচরণে, কেননা আমি জানি তাদের ভেতরে মনুষ্যত্ব বলে আসলে কিছুই নেই। যারা একটু আবেগি আছে, খোঁজ নিন-তারা বাংলাদেশ থেকে সেখানে মাইগ্রেট করেছে।
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মন তার আকাশের বলাকা || নিজের গলায় পুরোনো গান || সেই সাথে শায়মা আপুর আবদারে এ-আই আপুর কণ্ঠেও গানটি শুনতে পাবেন :)

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৬ ই জুন, ২০২৪ রাত ১০:০০

ব্লগার নিবর্হণ নির্ঘোষ একটা অসাধারণ গল্প লিখেছিলেন - সোনাবীজের গান এবং একটি অকেজো ম্যান্ডোলিন - এই শিরোনামে। গল্পে তিনি আমার 'মন তার আকাশের বলাকা' গানটির কথা উল্লেখ করেছেন। এবং এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

লাইকা লেন্সে তোলা ক’টি ছবি

লিখেছেন অর্ক, ১৭ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৩০




ঢাকার বিমানবন্দর রেল স্টেশনে ট্রেন ঢোকার সময়, ক্রসিংয়ে তোলা। ফ্ল্যাস ছাড়া তোলায় ছবিটি ঠিক স্থির আসেনি। ব্লার আছে। অবশ্য এরও একরকম আবেদন আছে।




এটাও রেল ক্রসিংয়ে তোলা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কার গল্প জানেন ও শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩১



গতকাল সন্ধ্যায়, আমরা কিছু বাংগালী ঈদের বিকালে একসাথে বসে গল্পগুজব করছিলাম, সাথে খাওয়াদাওয়া চলছিলো; শুরুতে আলোচনা চলছিলো বাইডেন ও ট্রাম্পের পোল পজিশন নিয়ে ও ডিবেইট নিয়ে; আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাবাকে আমার পড়ে মনে!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৭ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২

বাবাকে আমার পড়ে মনে
ঈদের রাতে ঈদের দিনে
কেনা কাটায় চলার পথে
ঈদগাহে প্রার্থনায় ..
বাবা হীন পৃথিবী আমার
নিষ্ঠুর যে লাগে প্রাণে।
কেন চলে গেলো বাবা
কোথায় যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×