একাত্তরে শেখ মুজিবুর রহমান যেমন মুক্তিযুদ্ধের ‘প্রতীক’ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, তেমনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীদের ‘প্রতীক’ হয়ে উঠেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর তখনকার আমীর গোলাম আযম।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের মামলায় গোলাম আযমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের তৃতীয় সাক্ষী হিসেবে সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ কথা বলেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল।
তিনি বলেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী হিসেবে মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মো. মুজাহিদ ও আব্বাস আলী খানের মতো অনেকের নাম শুনেছিলেন। কিন্তু গোলাম আযমের নাম সবচেয়ে বেশি শোনা যেত।
“মুক্তিবাহিনী ও শত্রুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর বিপক্ষে নেতৃত্ব দানকারী হিসেবে গোলাম আযমের পরিচিতি ছিল।”
গত বছর ১৩ এপ্রিল একাত্তরে উস্কানি, ষড়যন্ত্র ও মানবতাবিরোধী অপরাধে প্ররোচিত করার অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমীর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল সাক্ষ্যে বলেন, একাত্তরে পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, মুসলিম লীগ ও জামায়াতে ইসলামীর মতো ডানপন্থী ধর্মভিত্তিক দলগুলো মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামলেও গোলাম আযমের নেতৃত্বাধীন জামায়াত সবচেয়ে বেশি জোরাল ভূমিকা নেয়।
সেই সময় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিসরামগঞ্জে বাংলাদেশিদের জন্য চালু করা হাসপাতালে সেবিকার দায়িত্ব পালন করেন সুলতানা কামাল।
প্রয়াত কবি ও সমাজসেবী সুফিয়া কামালের মেয়ে সুলাতানা বলেন, ধর্মভিত্তিক দলগুলো পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে মুক্তিবাহিনীর বিরোধিতা করে। তারা সক্রিয়ভাবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিশে বাঙালি ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে।
“তারা আল বদর ও আল শামসের মতো গোপন খুনী বাহিনী গঠন করে।”
১৯৭১ সালের মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরর আগের সময়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্য শুরু করেন সুলতানা কামাল। এরপর সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ এবং সেখানে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খোলা হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কাজ করার কথা তুলে ধরেন।
তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ হতো। গেরিলা যোদ্ধারা ‘অপারেশন’ থেকে ফেরার পর তাদের কাছে দেশের খবর নিতেন এবং তখনকার সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে তিনি পরিস্থিতি জানতে পারতেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






