আমার নিজের প্রয়োজনে মাঝেই মাঝেই আমাকে ঢাকার পূর্বাচলে যেতে হয়, অনেক সময় পরিবার পরিজন নিয়েও বেড়াতে যাই। এটি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পর পর বলা যেতে পারে, অথবা ৩০০ ফিট সড়ক ধরে দশ মিনিট ড্রাইভ করে চলে যাওয়া যায়। এখানে পূর্বাচল সহ কাঞ্চন ব্রিজ, ইছাপুরা বাজারে অনেকেই বেড়াতে আসেন। বিশেষ করে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার মোটামোটি বেশ ভিড়বাট্টা থাকে - বাজারে বেঁচাকেনাও হয় যথেষ্ট। বেড়াতে এসে অনেকেই বেলাশেষে বাড়ি ফেরার আগে বাজার সাজার করে নেন, অনেকে আবার বাজার করার জন্যই আসেন। আমিও কিছু শাক সবজি কিনে থাকি। বাজারের অধিকাংশ শাক সবজি এখানের স্থানীয় জমির, আর মাছ এখানের না, মাছ অন্যান্য বাজার থেকে আসে বিশেষ করে চাষের মাছ ও বড় মাছ - যেহেতু এখানে ক্রেতা সংখ্যা আনুপাতিক হারে বেশী স্থানীয় মাছে এখানের বাজারের চাহিদা পূরণ অসম্ভব।
পূর্বাচল এসে আমি সাধারণত যেখানে যেদিকে যাই এদিকে লোকালয় আছে - স্থানীয় মানুষজন সাথে নতুন নতুন ভাড়াটিয়া, ভাড়া কম, খোলামেলো পরিবেশ, তবে সন্ধ্যা শেষে চোর ও ছিনতাইয়ের প্রকোপ ভয়াবহ।
যাইহোক, যখনই আমি এদিকে আসি আসে পাশের ডোবা জলাতে দেখতে পাই দুই - চার জন হাটু পানি কোমর পানিতে নেমে তরতাজা সবুজ শাক তুলছেন, বিশেষ করে কলমি শাক আর হেলেঞ্চা শাক। এই দুইটি শাক পানিতেই ভালো জন্মে, তবে হেলেঞ্চা কাদামাটি বা ভেজা শেতশেতে মাটিতেও হয় এছাড়া আরাও আছে কচুশাক ও কচুর লতি। তরতাজা ঝকঝকে সবুজ শাক বলতে যা বোঝায় তা। কিন্তু তারা যে পানি থেকে তুলছেন সে পানি ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ঙ্করতম হবার কথা। কারণ পানিতে মানব সৃষ্ট হেন নোংরা নর্দমা নেই যা অবর্তমান। আমি শুধু পূর্বাচলই কেনো বলছি? - ঢাকার আসে পাশে যেকোনো জায়গায় ডোবা জলাতে যেভাবে হেলেঞ্চা, কলমি, কচু, কচুর লতি হয়ে আছে - তা কেউ না কেউ তুলে বাজারে বিক্রি করছেন আর আমাদের মতোই শত সহস্র মানুষ তরতাজা ঝকঝকে সবুজ দেখে বাজার থেকে কিনে নিচ্ছি এবং খাচ্ছি। - যাতে নোংরা নর্দমার বিষাক্ত বর্জ্য সহ কেমিক্যাল মিশ্রিত, এই পানি নোংরা নর্দমার পঁচা গলা পানি। বাড়ি করার কাজে যখন এই পানি উঠানো হয় তখন পানি উঠেনা - পানি নামের বিশ্রি নোংরা নর্দমা উঠে আসে যা সুস্থ ভাষায় লেখার উপযোগি না, সুস্থ সমাজে বলার উপযোগি না। মানুষ কি পরিমান নোংরা হতে পারে তার অন্যতম প্রমাণ ঢাকার নিচু জমি ও জলা আর ডোবাগুলো।
আত্মকথা: ব্লগে হয়তো আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন আমি প্রায়ই খাবার নিয়ে সচেতনতার কথা বলি, কম খাবারের কথা বলি, খাদ্য অপচয় রোধের কথা বলি। তাতে করে ব্লগে আপনাদের নানান প্রশ্নের জবাবদিহিতাও দিতে হয়। কেউ কেউ তির্যক মন্তব্য ছুড়ে মারেন। - আমার একটিই প্রশ্ন আপনি বা আপনারা কম খেলে বা অপচয় না করলে ব্যক্তিগভাবে আমার কি কোনো লাভ ক্ষতি আছে? - নেই। তারপরও এই কারণে বলি - এতে আপনার সমস্যা, আপনার পরিবারের সমস্যা সমগ্র দেশের সমস্যা। বাদবাকি আপনারা ভালো জানেন, আপনারা ভালো বুঝেন।
উপসংহার: এই বিষাক্ত খাবারের পরিণতি কি হতে পারে তা কি আমরা কখনো ভেবে দেখেছি। বিষাক্ত খাবার থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় - “আত্ম সচেতনতা” পারিবারিক সচেতনতা, সামাজিক সচেতনতা আর তাহলেই দেশের মানুষ ভালো থাকবেন একটি সুস্থ সুন্দর জাতি গঠিত হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
পানির অবস্থা ভয়াবহ নোংরা - সেই ছবি না দিয়ে মোটামোটি একটি নোংরা পানির ছবি পোস্টের প্রয়োজনে সংযুক্ত করেছি। ব্লগ ও ব্লগারদের জন্য দৃষ্টিকটু হলে মন্তব্যে অনুগ্রহ করে জানাবেন, আমি ছবিটি মুছে দিবো। সবাইকে ধন্যবাদ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: সামহোয়্যারইন ব্লগ কর্তৃপক্ষ। নির্বাচিত পোষ্টে “উক্ত লেখাটি” স্থান দেওয়াতে সামহোয়্যারইন ব্লগ কর্তৃপক্ষকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৩৫