somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন মহামানব - একজন মহান শিক্ষক

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার স্যার, অনেক অনেক বড় মানুষ, তাল গাছের মতোই তিনি বড়। না - না তাল গাছ ছাড়িয়ে তিনি আকাশ ছোঁয়েছেন, তিনি আকাশের মতোই বড় মানুষ। অনেক দূর দূরান্ত থেকে তাঁকে দেখা যায় - তিনি বড় মানুষতো তাই। আমাদের স্যার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বায়োলজি শিক্ষক। মহান বায়োলজি শিক্ষক। তিনি একজন বিজ্ঞানীও, মহান বিজ্ঞানী। যদিও এখন পর্যন্ত তিনি কোনো কিছুই আবিস্কার করতে পারেননি - তারপরও তিনি মহান বিজ্ঞানী। আমাদের দেশে কোনো কিছু করার সুযোগ নেই। সুযোগ থাকলে তিনি ধর্ম আবিস্কার করতেন। সমগ্র বিশ্বে ধর্ম নিয়ে আর কোনো সমস্যা থাকতো না। তিনি হতেন সেই ধর্মের অন্যতম ধর্ম প্রচারক, একজন মহামানব।

আমাদের যাতে বেশী বেশী পড়ালেখা না করতে হয়, এতো এতো কষ্ট না করতে হয় - আমাদের মহান স্যার ক্লাসে পরিক্ষার প্রশ্নপত্র অনুযায়ী সিলেবাস দিয়ে দেন। আর পরিক্ষার তিনদিন পূর্বে প্রশ্নপত্রের ফটোকপি। এ কারণে স্যারকে আমাদের ক্লাসে আর পড়াতে হয় না। ক্লাসের সময়ে তিনি আমাদের সাথে মজার মজার গল্প করেন “ন হন্যতে আর লা নুই বেঙ্গলীর” মতো অমর সাহিত্য নিয়ে গল্প করেন। তিনি ক্লাসে ধর্ম নিয়ে আলোচনা করেন, কাফের মুশরিক নিয়ে আলোচনা করেন - কাফেরদের স্যার মনে প্রাণে ঘৃণা করেন। স্যারের কল্যানে আমরাও কাফেরদের ঘৃণা করতে শিখেছি। আগামী বই মেলাতে স্যার ধর্মীয় ইতিহাসের উপর বই প্রকাশ করবেন। স্যার নারী আন্দোলনের অগ্র পথিক, স্যার নারী নির্যাতন বন্ধে অনেক গবেষণা করছেন। বই মেলাতে এ বিষয়েও তিনি বই প্রকাশ করবেন।

স্যার আমাদের খুব ভালোবাসেন তো, তাই আমাদের নিয়ে খুব চিন্তা করেন। ইউনিভার্সিটির প্রথম দিনেই আমাদের মহান স্যার আমাদের বলেছেন - এই দেশে আমাদের কোনো ভবিষ্যত নেই! আর সেই চিন্তায় তিনি সব সময় চিন্তিত থাকেন। দিনে রাতে স্যারের কখনোই ঘুম হয় না - আহারে আহারে। এই যে আমাদের স্যার বিদেশে যাওয়ার এতো এতো সুযোগ থাকা সত্তেও দেশে পরে আছেন, মাত্র সামান্য বেতনে! - আমাদের চিন্তায়! - কারণ, আমরা যেনো প্রবাসে স্টুডেন্ট ভিসাতে চলে যেতে পারি। আমাদের প্রবাসে পাঠাতেই তিনি দেশে আছেন! তিনি আমাদের কতো কতো সাহায্যে করেন! - তা লিখে শেষ করা যাবে না! স্যারের খুব পরিচিত ও ঘনিষ্ট ৬ ছয়টি স্টুডেন্ট কন্সালটেন্সি ফার্ম আছে। স্যার আমাদের যে দেশে যেতে পরামর্শ দেন সে দেশে যেতে কন্সালটেন্সি ফার্মগুলো আমাদের ডকুমেন্টস নিয়ে কাজ করেন।



এই দেশে পড়ালেখা করে ছাত্রছাত্রীদের কোনো ভবিষ্যত নেই। স্যার আছেন বলেই ইউনিভার্সিটির ক্লাস শুরুর প্রথম সপ্তাহেই আমরা সকলে স্টুডেন্ট কন্সালটেন্সি ফার্মের সদস্য হয়েছি। প্রবাসে আমাদের নাম হবে দাম হবে, গুণ হবে, টাকা হবে, বেশী বেশী বেতনে চাকরি পাবো। ফালতু ধুলা বালু কাঁদার দেশে আর আসবো না। ঘৃণা ধরে গেছে এই দেশের প্রতি। এই দেশে মানুষ থাকে! - ওয়াক থু। আমরা চাঁদের দেশের নাগরিক হবো। চাঁদের দেশের পাসপোর্ট হাতে ঘুরে বেড়োবো। ভুলেও কোনোদিন কাউকে বলবো না আমাদের জন্মভূমির নাম! ভুলেও এই দেশের নামই আর স্মরণ করবো না। চাঁদের দেশে চুরি ডাকাতি খুন হত্যা ধর্ষণ বলতে কিছুই নেই। জাতপাত উঁচুনিচু ভেদাভেদ কিছুই নেই - সবাই সমান, সবাই। আমরা চাইলেই লর্ড পরিবারের সন্তানদের সাথে আত্মীয়তার! সম্পর্ক গড়তে পারবো। ঘুম থেকে উঠেই পিজ্জা খাবো, সকালে পিজ্জা, লাঞ্চে পিজ্জা, বিকালে পিজ্জা, ডিনারে পিজ্জা, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগেও পিজ্জা। মহান স্যার আছেন বলেই সব সম্ভব।

উপসংহারঃ আমাদের স্যার, আমাদের মহান স্যার আছেন বলেই জানতে পেরেছি এই দেশে ভবিষ্যত শূন্য, নিরাপত্তা নেই। চুরি ডাকাতি খুন ধর্ষণের দেশ আমাদের দেশ। তাই আমরা সবাই চাঁদের দেশে চলে যাবো - সেখানে চুরি ডাকাতি খুন হত্যা আত্মহত্যা ধর্ষণ কিছুই নেই। শুধু আনন্দ আর আনন্দ। পিজ্জা আনন্দ। আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই পোস্টের সমস্তই কাল্পনিক। বাস্তবের সাথে এর কোন মিল নেই, কেউ যদি দূর দূরান্ত পর্যন্ত কোনো মিল খুঁজে পান তাহলে তা অনিচ্ছাকৃত এবং কাকতালীয় ঘটনা মাত্র।



কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ সামহোয়্যারইন ব্লগ। নির্বাচিত পোষ্টে “উক্ত লেখাটি” স্থান দেওয়াতে সামহোয়্যারইন ব্লগ কর্তৃপক্ষকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

ছবিঃ মেক্সিকান পিজ্জা




সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩০
২৩টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×