প্রায় দশ মাস অসম্ভব কষ্টের পর একজন মা তার নাড়ি ছেড়া সন্তানকে পৃথিবীতে আনেন। পৃথিবীতে একটি শিশুর জন্মের সাথে সাথে শত সহস্র লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মাইল দুরে আরেকটি মানুষের জন্ম হয়। সেই মানুষটির নাম - “বাবা”। বিচিত্র কারণে পৃথিবীর প্রতিটি বাবা বসবাস করেন অনেক অনেক দুরে। কোনো এক ভীন গ্রহে। সম্ভবত এরা ভীন গ্রহেরই অধিবাসী!
বাবা নামক মানুষটি ভোরের সাথে সাথে শিশুটিকে ঘুমে রেখে বেড়িয়ে যান! জীবনের নিয়মে জীবনের প্রয়োজনে জীবন জীবিকার সন্ধানে কখনো রাত হয়! - হয়তোবা কখনো কখনো মধ্যরাতেও বাড়িতে ফেরেন মানুষটি, তখনও দেখতে পান “শিশুটি ঘুমে”। হয়তো এমনও হয়, মধ্যরাতেই মানুষটিকে আবার বেড়িয়ে যেতে হয় - আবারও কাজ। মানুষটি নিরলস কাজ করে যান। এই মানুষটির কোনো অলসতা নেই। বিশ্রাম নেই। আনন্দ নেই হাসি নেই খুশি নেই, ঈদ নেই বড় দিন নেই পূজাও নেই। মনে হতে পারে এই মানুষটি পৃথিবীতে এসেছেন শুধুই কাজ করার জন্য। কাজের বিনিময়ে খাদ্য পরিক্রমায় তার জীবন সীমাবদ্ধ। শত সহস্র লক্ষ কোটি মাইল দুরে থেকেও এই মানুষটি শিশুকে আলো ছায়া দিয়ে যান। এটি তাঁর দায়িত্ব কর্তব্য, এটি তাঁর ধর্ম।
বাবা নামক মানুষটির সামনে ঘুমে ঘুমেই একদিন সেই শিশু বড় হয়ে উঠেন। অনেক অনেক বড়। একজন বাবার সবচেয়ে আনন্দের দিন - যেই দিন তিনি দেখতে পান তাঁর সন্তানের পরিচয়ে তিনি পরিচিত হয়েছেন। তাঁর সন্তান তাঁর চাইতেও বড় হয়েছেন, সন্মানিত হয়েছেন। কেনো জানি; সেই দিন বাবা নামক মানুষটির চোখে নিঃশব্দে জল আসে, হয়তোবা আনন্দের সুখের স্নেহ মায়া মমতা ভালোবাসার। সেই দিন থেকে বাবা হোন শিশুটির শিশু, আর শিশুটি হোন সেই বাবার বাবা। সম্ভবত মুঘল সালতানাত বাদশাহ বাবর তাঁর পুত্র বাদশাহ হুমায়ূনের জন্য হাসি মুখে প্রাণ দিয়েছিলেন ঠিক এই স্নেহ মায়া মমতা ভালোবাসার জন্যই। - আর এটিই বাবা নামক মানুষটির ধর্ম।
পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছেন, কিন্তু খারাপ বাবা একটিও নেই।
- গল্প উপন্যাসের বাদশাহ লেখক হুমায়ূন আহমেদ।
আত্মকথা: পৃথিবীর প্রতিটি বাবা থাকুন দুধে ভাতে, পৃথিবীর প্রতিটি শিশু থাকুন দুধে ভাতে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: সামহোয়্যারইন ব্লগ।
কভার ছবি সূত্র: trees in the forest
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:১২