গত এক সপ্তাহ দাম্মাম ও জুবায়েলে ব্যবসায়িক কাজ শেষ করে সামার সাহেব ট্রনাজিট প্লেনে যখন ঢাকায় অবতরণ করেছেন তখন সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাত। বাসায় ফিরে রাতে জলপাইয়ের টক দিয়ে ডাল ভাত খেয়ে মনে হয়েছে নিজ ঘরের মতো নিজ নীড়ের মতো শান্তি সত্যি সত্যি পৃথিবীর কোথাও নেই।
শীতের দিন। মনে হয়, দুই ঘন্টাতে দিন শেষ হয়ে যায়। কখন দুপুর থেকে বিকাল হয় আর বিকাল থেকে সন্ধ্যা - অফিস রুমে বসে তা লক্ষ্য করা সত্যি সত্যি কঠিন বিষয়। ওয়্যারহাউজে যাওয়াটা খুবই প্রয়োজন, খুবই জরুরী। সামার সাহেব হাতের ঘড়িতে সময় দেখে অফিস থেকে বেড়িয়ে গেলেন।
ওয়্যারহাউজে কাজ শেষে ফিরতি পথে পূর্বাচল তিনশত ফিটের পাশে বেশ কয়েকটি মিষ্টির দোকান আছে। গরম গরম মিষ্টি পাওয়া যায় তাতে। পিকআপ ঘুড়িয়ে নামবেন, সামনে এক বাইকার মাঝপথে মাঝ রাস্তায় বাইক নিয়ে জিকজ্যাক ট্রাই করছেন অথবা জিকজ্যাক বাইক চালিয়ে মজা করছেন! হার্ডব্রেক করার পরও বাইকার চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছেন! হিন্দি উর্দু ভাষায় শাসিয়ে কিছু বলেছেন। অথচ পিকআপ বাইকের কোথাও লাগেনি। ১৮০০ সিসি ডাবল কেবিন হাইলাক্স। বাইকের পেছনে লেগে গেলে বাইক উড়ে যাওয়ার কথা! অদ্ভুত দর্শন বাইকারকে দেখে সামার সাহেবের দীর্ঘ দিনের পেশাগত অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারেন “ভদ্রলোক বাংলা বিদেশী মিশ্র নেশাপানি করেন, সাথে কল্কিধোঁয়াও সেবন করে থাকেন”। এদের সাথে কথা বলা বিপদজনক।
সামার সাহেব বারবার স্যরি স্যরি বলে পাশ কাটিয়ে চলে গেলেন মিষ্টির দোকানে। তিন ধরনের মিষ্টি ও ছানার বরফি আ্ড়াই কিলোগ্রাম নিয়ে আবার বাড়ির পথে ছুটে চলেছেন। কিছুদূর আসতেই দেখেন রাস্তার পাশে সেই বাইকার! দুইজন অটোরিক্সা চালক তাঁকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। আর একদল মানুষ তামাশা দেখছেন। - কি কারণে পেটাচ্ছেন? হয়তোবা বাইকার হিন্দি উর্দু ভাষায় শাসিয়েছেন! হয়তোবা আবারও জিকজ্যাক বাইক চালিয়ে অটোরিক্সা চালকদের উপরে পড়েছেন। হয়তোবা কিছুই না। হয়তোবা অনেক কিছু। হয়তোবা, যেমন কর্ম তেমন ফল।
চলতি পথ। ব্যস্ত মানুষ, ব্যস্ত শহর। কে কার খবর রাখে? সবাই ব্যস্ত।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩০