somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ব ধরিত্রী দিবস ও একজোড়া তিমি'র আত্মহত্যা

২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




এবছরের জানুয়ারির ২৯ তারিখের ঘটনা। সাত সকালে জার্মানির সমুদ্র সৈকতে প্রাতঃভ্রমণে আসা মানুষের চোখে পড়ে অদ্ভুত এক ঘটনার। সমুদ্রের বালির উপর মরে পড়ে আছে একজোড়া স্পার্ম তিমি

তাৎক্ষণিকভাবে এর কারণ জানা না গেলেও তখন ধারণা করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দাঁতাল প্রাণী দুটি সম্ভবত আত্মহত্যা করেছে।

প্রাণীজগতের যেসব প্রাণীর মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা পাওয়া যায় তিমি তাদের মধ্যে অন্যতম। প্রায়ই ঝাক বেঁধে আত্মহত্যা তিমির জন্য নতুন কোন ঘটনা নয়। এজন্য তারা নিজেদেরকে সমুদ্র থেকে তুলে এনে সৈকতে আছড়ে ফেলে। এরপর সেখানে তাদের মৃত্যু হয়। প্রাণীবিজ্ঞানীরা একে বলেন 'বিচিং'। কিন্তু জার্মানীর এই তিমি দুটোর ক্ষেত্রে বিচিং এর কোন লক্ষণই ছিল না, কারণ এরা ছিল স্পার্ম তিমি। অন্য তিমিদের মতো এরা সামাজিক নয়, দলবেঁধে ঘোরাফেরা করে না এমনকি এদের খাবার গ্রহণের পদ্ধতিও আলাদা। সবচেয়ে বড় কথা হলো অন্য তিমিরা যখন খাদ্যের সন্ধানে সমুদ্রের ৮০০-৯০০ ফুঁটের মধ্যে ঘোরাফেরা করে তখন এই স্পার্ম তিমিরা খাদ্যের সন্ধানে চলে যায় সমুদ্রের একেবারে সাত হাজার ফুট গভীর পর্যন্ত।

আর তাই রহস্যের সমাধান খুঁজতে উদ্যোগী হয় অনেেই। সরকারিভাবে এই ঘটনার অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয় ওয়াডেন সি ন্যাশনাল পার্ককে। গতকাল সেই ওয়াডেন সি'র প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে তিমি দুটোর মৃত্যুর কারণ।



ওয়াডেন সি কতৃপক্ষের সেই প্রতিবেদনে দখা যায় তিমি দুটোরই পেট ভর্তি ছিল বিষাক্ত প্লাস্টিক এবং গাড়ীর যন্ত্রপাতি দিয়ে। তিমি দুটোর পেট থেকে উদ্ধার করা হয় মাছ ধরার জাল, প্লাস্টিক বর্জ্য, গৃহস্থালী কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্লাস্টিকের পণ্য, এমনকি গাড়ির ভাঙ্গা যন্ত্রাংশও। তদন্তকারীরা মনে করছেন, স্কুইড মনে করে গাড়ীর যন্ত্রপাতি ও প্লাস্টিকের সামগ্রী খাওয়ার করার পর তাদের পাকযন্ত্রের পুরো প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে পড়ে। বিষাক্ত প্লাস্টিক ও লোহালক্কড়ের জঞ্জাল থেকে ইনফেকশন ঘটে পাকস্থলিতে। ব্যাথায় কাতর হয়ে এই তিমি দুটো অবশেষে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ।

আজ সকাল থেকেই ফেসবুক এবং গুগল বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে আজ "বিশ্ব ধরিত্রী দিবস", কিন্তু গতকাল থেকেই আমার মাথায় সাঁতরে বেড়াচ্ছে অসহায় এই তিমি দুটোর ছবি। সমুদ্রের সাত হাজার ফুট গভীরের এই তিমি দুটোই যেখানে পরিবেশ দূষণের প্রভাবে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছে সেখানে সারা দুনিয়াটাকে বিঁষিয়ে দিয়ে আমরা আর কতোদিন বেঁচে থাকতে পারি সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:০৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×