যক্ষ: গান ছাড়া, এই যে বেঁচে আছি, এই ভবে বেঁচে থাকা অসম্ভব । এসো নন্দিন, তোমায় একটা গান শোনাই । আজই লিখলাম, সুর দিলাম । অথচ আগে কোন দিন চেষ্টাও করিনি । তুমি য্ক্ষপুরীতে আসার পর কতটা যে পাল্টে গেছি তা আমি তোমায় বোঝাতে পারব না । এসো, কাছে এসো । তোমায় গান শোনাই ।
যক্ষ: (গান)
স্বর্গ কোথায়, নরক কোথায়
গন্ধ নেই বকুল তলায়
অন্য কোথায়, অন্য ঘরে
কোমোর বেঁধে,দিনের শেষে
ফিরব ঘরে হেসে হেসে ৃ
অর্কুটিং করব মোরা দুজনাতে
হিমের পরশ থাকবে হাতে
তুমি আর আমি পাশাপাশি
তাই চড়ব মোরা মিনিবাসে
চরকা বুড়ির গল্প শেষে
ফিরব, এই কথকতার দেশে ...
কোমোর বেঁধে,দিনের শেষে
ফিরব ঘরে যখন হেসে
শ্রমিকেরা তুলবে হিরে
মাছের ঝোল রাঁধবে তুমি
বেগুন আর কালোজিরে
আমি তখন বাজাব বাঁশি
যতক্ষণ না আসে কাশি
গ্লাইকোডিনের শিশি হাতে
দুজনে মোরা চড়ব খাটে
কোমোর বেঁধে,দিনের শেষে
গুনব হিরে খাটে বসে ...
নন্দিনী: রাজা,তোমার সেই আঁকা ছবিটাই চোখে
ভাসছে আজ বারে বারে,পাহাড়ের চুড়ারা
আমায় ধরছে ঘিরে, আজ কেন, বারেবারে
যক্ষ: তোমার কথা কোথায় যেন শুনেছি
সেথায় বৃষ্টি পড়ে বারোমাস
মেঘেরা সব চরে বেড়ায় গাভীর মত!!!
সে সবুজে প্রকান্ড মেঘের ধাক্কায়
ভেঙে যায় গোটা ছেলেবেলাটা???!!
নন্দিনী: সে এক বিভ্রান্তির পুকুর , আমার ছেলেবেলার গাছগুলো দিয়ে রঞ্জন সেটা ঘিরে রেখেছে , সযত্নে ...
যক্ষ: এই তো ডাকপিওন এসে দিয়ে গেল ডাক । চিচিং ফাঁক হল না?
নন্দিনী চুপ করে থাকে ।
লেটার বক্স: খুলল না ডাক ?
সিন্দুক: চাবীটা হরায়নি তো !
যক্ষ: সহচরী,
তোমার এই কেবল একটা, দুটো, তিনটে চিহ্নে, আমি দিকভ্রান্ত হই ...
আকাশ: আ হা ...
যা মন
বাতাস: তুই
পিওন
হু হু
হু হু
বৃষ্টি: যা মন
ডাক দে
যক্ষ: কবে মন খারাপ ছিল গো তোমার,টের পেলাম না তো,
আসলে কালই বোধ হয়, তুমি আসার পর থেকে
আসলে এলোমেলো ছিলাম তো মেঘের মত ...
-৪-
প্রহরী ১:সে তো তুমি একই কথা শুধাও, দিবা নিশি
প্রিয় কথা বোধ হোয় বরে বারেই শুনতে হয়
না হলে সে গান হয়ে উঠবে কি করে ?
পথ ভুলে গান হয়ে ওঠো তুমি ...
সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার: তুমি তো থাকো অন্যধারে,
কিছু কি দেখতে পাও?
সূর্য হও । আলো দাও । অন্ধকারের তারাদের নিয়ে কি স্বপ্ন দেখা যায়?
সত্যি হও । হয় জিরো নয় ওয়ান । বাইনারি বোঝেন স্যার?
ওকে একটু বুঝিয়ে আসব ?
যক্ষ: ভয়ানক কাছে এলে যদি সব ভূলে যাও?
ভয়ানক ব্যাপার হবে সেটা, অধ্যাপক
বরং নন্দিনের সেই আকশে থাকুক
মেঘ ও চিত্রকল্প ও বৃষ্টির আয়োজন ...
অধ্যাপক: সূর্য সর্বদা সত্যি কি ... ?
আমি তো তার চাইতে ঢের,
না চাইতেও তো পেয়ে যাও আমায় ...
নন্দিনী: রাজা, তোমার দেশে কেবল ফ্লাইওভার হচ্ছে
চরিদিকে শুধু ধুলো চোখদুটি কি অন্ধ হয়ে যাবে?
খনিতে সে তো ঘন কালো অন্ধকারেও কিছু দেখা দেখা যায়না ।
অধ্যাপক: মনশ্চক্ষু তো তবু খোলা থাকে ! অনুভুতি তো তখনো জেগে থাকে ...
সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার: মানুষ দেখতে না পেলেও, মাদার বোর্ড, মাইক্রো প্রসেসর ঠিক কাম করে যাবে ।
যক্ষ: আমি তো চাইলে আন্ধকারেও দেখতে পাই তোমায় ...
নন্দিনী: সূর্য সর্বদাই সত্যি
তবেই তো পৃথিবীতে আলো আসে
জাগে মানুষ
ফসল ফলায় ক্ষেতে
অন্ধকারের কথা কেনো ভাবো??
যক্ষ: তোমায় যখন পাই না, তখন কিস্সু পাই না ...
মৃত্যুকে পাই খুব কাছাকাছি ...
সব তো তোমার জানা ...
অভিমান কর কেন?
অধ্যাপক: সেই তো অন্তর্দৃষ্টি
সেই তো অনুভবের রাজত্ব
ইঁজিনিয়ার: বুঝেছি, ঠিক্ঠাক ভাইরাস রোধ্ক লোড করতে হবে ।
নন্দিনী চুপ করে থাকে ।
ঝাউপাতা: অভিমান??
গোলাপ ফুল: সে কি জিনিস গো?
স্বর্ণলতা: খেতে বুঝি খুব মিষ্টি?
পেঁপে গাছ: টুটি ফ্রুটির মত?
ইউক্যালিপটাস: নাকি হাওয়াইয়ান পাঞ্চ?
চলবে-
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০০৬ ভোর ৬:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



