somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্ধ আততায়ীবৃন্দ-১

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইতিহাসের দীর্ঘতম অধ্যায় ধরে টিকে-থাকা হত্যাকারীর দল, যারা একতাবদ্ধ হয়েছিল ধর্মের নামে, আর শেষমেষ কোথায় যে মিলিয়ে গেল তেমন কোন হদিশ না রেখে, আজ তাদের কথা স্মরণ করতে চাই কিছুটা, শ্রদ্ধায় নয় অবশ্যই, নয় ঘৃণায়ও। নিজেদের ব্র্যান্ডিং করেছিল তারা অসাধারণভাবে, যদিও ওই শব্দের মানেটা নিশ্চয়ই তারা জানতো না। আজকাল যেমন হোন্ডা বলতে বুঝি মটরসাইকেল, কোকা-কোলা বা সংক্ষেপে কোক বললে বুঝি কোমল পানীয় বা প্যাম্পার্স শব্দটা হয়ে উঠেছে বাচ্চাদের ডায়াপারের প্রতিশব্দ, তেমনি তাদের সঙ্ঘটির নাম, তথা নামবাচক বিশেষ্যটি ইতিহাসের পাতায় তো বটেই, একটি টিউটোনিক/ জার্মানিক ভাষাগোষ্ঠীজাত ভাষার শব্দসম্ভার এবং অভিধানে চিরকাল অক্ষয় হয়ে থাকার দাবি নিয়ে রূপ নিয়েছে জাতিবাচক বিশেষ্যে, অর্থও ‘ধর্মীয় গোষ্ঠী’ থেকে হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘আততায়ী’। ভাষাটি ইংরেজি, শব্দটি এ্যাসাসিন (assassin)।
ইতিহাসের পাতায়, পরিহাসমূলকভাবেই বোধকরি, গোষ্ঠীটির সাথে এমন দু’জনের নাম জড়িয়ে আছে, একজনের প্রত্যক্ষভাবে, অন্যজনের পরোক্ষভাবে, যাঁদের একজন কট্টর ধর্মীয় মৌলবাদী এবং গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠাতা, অন্যজন জগদ্ব্যাপী শিক্ষিত লোকেদের কাছে একজন কবি এবং বিজ্ঞানী হিসেবে সুপরিচিত। আর দু’জনের মাঝে যোগসূত্র বেঁধেছিল সেকালের এক অনন্য নগরী, যাকে কবিবরটি প্রিয়ার একটি গালের তিলের বিনিময়ে বিলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন (সাথে আরো একটিকেও অবশ্য)।


সমরখন্দ। কবিবর এবং বিজ্ঞানী ওমর খৈয়ামের সুখ্যাত কর্মভূমি। ওমরের জন্ম বস্তুত নিশাপুরে। ‘খৈয়াম’ কথাটা মূলত ‘’তাঁবু প্রস্তুতকারী’ বোঝায়। সম্ভবত, ওমরের পিতৃপুরুষ ওই কাজ করতেন, কমপক্ষে তাঁর পিতা ইব্রাহিম। ধরা হয় মোটামুটি ১০৭২ খ্রিস্টাব্দে ওমর পা রাখেন এই শহরে, যা তখন ত্রানসাজোনিয়া সাম্রাজ্যের অন্তর্গত। রাজসিংহাসনে তখন তুরুক বংশধর নাসর খান। বলা হয়, ওমরের হাতে সমরখন্দের কাজি আবু তাহের তুলে দেন একটি সাদা পাতার বই, যা কালক্রমে বিশ্বের বহুলপঠিত বইয়ের একটি হয়ে উঠবে। তাই, ওটি পরিচিতই হয়ে উঠেছিল ‘সমরখন্দ পাণ্ডুলিপি’ নামে।
মুসলিম সাম্রাজ্যে তখন সর্বাধিক ক্ষমতাধর নৃপতি তুর্কি সেলজুক বংশের অধিপতি আলফ আরসালান, বয়েস যাঁর প্রায় ৩৮, আর যাঁর সাম্রাজ্য বিস্তৃত কাবুল থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত। এমনকি পূর্ব রোমের সম্রাট রোমেনাস দাইওজেনুসও হার মেনেছেন তাঁর কাছে, বাইজেন্টাইন সম্রাটও পরাভূত। অথচ, কাছের শহর সমরখন্দ তাঁর সাম্রাজ্যের বাইরে! নাসর খান তাঁর সাথে আত্মীয়তা গড়ে তুলেছিলেন। আরসালানের বড় ছেলে জালালউদ্দিন মালেক শাহ বিয়ে করেন নাসর খানের বোন তেরকেন খাতুনকে আর নাসর খান পাণিগ্রহণ করেন আরসালানের কন্যার। নেহাৎ বাইজেন্টাইনদের সাথে লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকায় সমরখন্দ তাঁর কুক্ষিগত হয় নি, নইলে আত্মীয়তার বন্ধন জয়ের আনন্দের চাইতে বেশি আকর্ষণীয় নয় মোটেই। রোম সম্রাটের ভবিষ্যৎ আক্রমণ রোধকল্পে আরসালান তাঁর কাকাতো ভাই সুলাইমান ইবনে কুৎলুমিশকে এশিয়া মাইনরের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন ওই ১০৭২ খ্রিস্টাব্দেই। সুলাইমান ইকনিয়াম নগরীতে বসান নিজের রাজধানী, পরিচিতি ছিলো শহরটার কুনিয়া বা রুম নামেও। ওখানেই জন্ম নেন ‘মসনবি’ বিখ্যাত পারসিক কবি রুমি।
যাইহোক, এগিয়ে আসছেন সেলজুক সম্রাট প্রায় লাখ দুয়েক সৈন্য নিয়ে, পার হয়েছেন জাইহুন নদী, এখন আমরা একে চিনি আমু দরিয়া নামে। পন্টুন ব্রিজ বানিয়ে তার ওপর এই বিশাল অনীকিনী পার করাতে প্রায় দিন বিশেক সময় লাগে। ১০৭৩ সালে খাওয়ারজামের বিদ্রোহীদের শান্ত করতে তাঁর এই আগমন বলে কেউ কেউ দাবি করেন। ইতিহাসের আরেক পরিহাসে খাওয়ারজামের বিদ্রোহী নেতা ইউসুফ ধরা পড়লেও তাঁর হাতেই মারা যান বিশাল সাম্রাজ্যের অধিকারী আরসালান, চারদিন ধরে কষ্ট পেয়ে। কাহিনীটা অদ্ভুত। তবে, এখানে শোনাবো না সেই কথা। সমরখন্দ রক্ষা পেলো সেবারের মতো। এরপর যা ঘটলো তাতে মিলন ঘটলো এমন তিন জনের, যাঁরা সেই আমলে এবং তার পরবর্তীকালে ইতিহাসের অনেক কীর্তিস্তম্ভের স্থাপয়িতা। লেবাননি সাংবাদিক এবং লেখক আমিন মা’আলোফ সমরখন্দ, ওই তিন ব্যক্তিত্ব এবং ওমরের রুবাইয়াতের সংকলন ‘সমরখন্দ পাণ্ডুলিপি’ নিয়ে লিখেছেন তাঁর বহুলপ্রশংসিত এবং একাধিক পুরস্কারে ভূষিত উপন্যাস ‘সমরখন্দ’। দু’জনের কথা আগেই বলেছি, বাকিজন হলেন মালেক শাহের বিখ্যাত প্রধানমন্ত্রী নিজাম-উল-মুল তিনি ছিলেন শ্রদ্ধেয়, তাঁর নাম কেউ উচ্চারণ করতো না (সম্প্রতি গাফফার চৌ:-এর এক লেখায় পড়লাম তিনি ঢাকায় এসে বিস্ময়াপন্ন হয়েছেন, পরিচিত মন্ত্রীরা এমনকি ঘরোয়া বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির নাম না বলে মাননীয়, মহামান্য ইত্যাদি মহদাকৃতির বিশেষণের মাধ্যমে চিহ্নিত করছেন)। বাগদাদের বিখ্যাত নিজামিয়া মাদ্রাসা তাঁরই হাতে স্থাপিত। তাঁর আসল নাম জানা যায় হাসান ইবনে আলি মুলক। রাজনীতিসংক্রান্ত তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘সিয়াসৎনামা’ ১৮৯০-৯১ সালে প্যারিসে অনুবাদসহ প্রকাশিত হয়।
কেউ কেউ বলছেন তিনজন পড়াশোনা করেছিলেন একই পাঠশালায়, নিশাপুরে, শপথ নিয়েছিলেন বড় হয়ে কেউ সুনাম করলে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন অন্যদের জন্যে। কিন্তু, নিজাম ছিলেন হাসানের চাইতে অন্তত কুড়ি বছরের বড়। হাসানের তাঁর পাঠশালা ছিল রে শহরে এবং বাড়ি কোম-এ। জন্ম ধরা হয় তাঁর ১০৩৪-এ। আর ওমরের ১০৪৮/৫০ খ্রিস্টাব্দে।


‘সমরখন্দ পাণ্ডুলিপি’-র দোহাই দিয়ে আমির জানাচ্ছেন, তিনজনের প্রথম দেখা হয়েছিলো মালেক শাহের রাজধানী ইস্পাহান শহরে। হাসান ইবনুল সাব্বাহর জন্ম এক অভিজাত শিয়া পরিবারে। ইসমাইলিদের ব্যাপারে তাদের তেমন শ্রদ্ধা ছিল না। তবে, মজার ব্যাপার হচ্ছে কোম এবং কাশান শহরে ওমর নামটিই ছিল যথেষ্ট ঘৃণিত, কারণ বাসিন্দারা প্রায় সবাই শিয়া। কেমন ঘৃণা করতো তারা দ্বিতীয় খলিফা ওমরের নামটি? প্রতিবছর বেশ জাঁকজমকের মাধ্যমে পালিত হতো ওমরের মৃত্যুবার্ষিকী; নারীরা কেশ আর বেশ সুসজ্জিত করতো; বিলানো হতো মিষ্টি। বাচ্চারা ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসতো, চিৎকার করতো, “আল্লার গজব নামুক ওমরের ওপর”, একই স্লোগানমুখরিত হয়ে উঠতো কোন কোন বড়দের মিছিল; কারোর নাম ওমর শুনলে বলা হতো, “জাহান্নাম তৈরি আছে তোমার জন্যে”; কোম এবং কাশানের মুচিরা জুতোর তলায় লিখে রাখতো ‘ওমর’; পশুপালকেরা ওই নামটা রাখতো খচ্চরের, গালি দিতো ওগুলোকে পেটানোর সময়, আর শিকারীরা শেষ তিরটা ছোঁড়ার সময় অস্ফুটে বলতো, “এটা বিঁধুক ওমরের বুকে”। সেই এলাকার ছেলে হয়ে ওমরের সাথে হাসান সাব্বাহর পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা বেশ কৌতূহল-জাগানিয়া বটে। ওমর অবশ্য তার আগেই যথেষ্ট পরিচিত ও তাঁর রুবাইয়াতে প্রচারিত কিছু দৃশ্যত ‘ফাইলাসুফি’ (মূল শব্দ ‘ফাইলাসুফ’, শব্দটা ‘ফিলসফি’ থেকে এলেও নাস্তিকদেরই নির্দেশ করতো) কিছুটা বিভ্রান্তির শিকারেই বোধকরি পরিণত করেছিলো তাঁকে। তবে, তাঁর পৃষ্ঠপোষকেরা তাঁর রুবাইয়ের চাইতে তাঁর জ্ঞান, বিশেষত জ্যোতির্বিদ্যাসংক্রান্ত দক্ষতা কাজে লাগাতেই উৎসুক ছিলেন বেশি। এছাড়া, গণিতেও তাঁর মেধার প্রকাশ ছিলো অনন্যসাধারণ। নিজেই তিনি জানিয়েছেন:
“অস্তি নাস্তি শেষ করেছি দার্শনিকের গভীর জ্ঞান,
বীজগণিতের তত্ত্বকথা যৌবনে মোর ছিলোই ধ্যান।”
কাজ করেছেন ঘনক সমীকরণ নিয়ে, দ্বিঘাত সমীকরণ নিয়েও। বীজগণিতে অজানা বিষয় বোঝাতে গিয়ে ব্যবহার করেছেন একটি আরবি শব্দ ‘শাই’, যার মানে ‘বস্তু’। স্পেনের বিজ্ঞানীরা একে বলতেন ‘জাই’ আর শব্দটির আদ্যক্ষর থেকেই এসেছে বীজগণিতের আজকের বিশ্বজনীন অজ্ঞাত রাশির প্রতীক ‘এক্স’। এমনকি, অ-ইউক্লিডীয় জ্যামিতিতে তাঁর অবদান আছে বলেও ইউরোপীয় পণ্ডিতেরা মত দেন।
১০৭৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁর ঘরের পাশেই নিশাপুরে একটি মানমন্দির তৈরি করে মালেক শাহ তাঁকে এর অধ্যক্ষ নিযুক্ত করেন। ১০৭৯ ইসায়িতে তৎকালে প্রচলিত পঞ্জিকার ভ্রম সংশোধন করে ওমর ‘জালালি’ সন (Galalaean era) প্রবর্তন করেন। এসম্পর্কে ফিলিপ হিট্টির বহুলপরিচিত ‘হিস্ট্রি অব দ্য আরবস’ গ্রন্থে উল্লিখিত যে, এই বর্ষপঞ্জি “…is even more accurate than the Gregorian Calendar”। কিন্তু, তাঁর প্রথম ভালোবাসাই ছিলো কবিতা। রাজদরবারে হাসানও নিযুক্ত হন, কিন্তু, একটু দ্রুত ছুটতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে ছিটকে পড়লেন তিনি একেবারে রাজসভার বাইরে। পরে অবশ্য এর নির্মম প্রতিশোধ তিনি নিয়েছিলেন এর জন্যে দায়ি নিজামকে ওপরের রাস্তা দেখিয়ে, তাঁরই অন্ধ ভক্তের মাধ্যমে হত্যা করিয়ে। প্রচারক হিসেবে তিনি বিখ্যাত হয়ে উঠেছিলেন ‘ইসমাইলি বাতেনি’ মতবাদ প্রচার করে।
সৈয়দবংশীয় ইমাম জাফর সাদেক তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র ইসমাইলকে ইমাম পদ দেবেন বলে ভাবেন, কিন্তু, ইসমাইলের উচ্ছৃঙ্খলতা ও পানাসক্তির খবর পেয়ে তিনি দ্বিতীয় পুত্র মুসা আল কাজেমকে পরবর্তী ইমাম (সপ্তম) নিযুক্ত করেন। ইসমাইলপ্রেমীরা মনে করেন/দাবি করেন সুরাপান বা এজাতীয় কাজে ইমামের সমস্যা নেই (তুলনীয় অস্মদ্দেশেঃ “যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়িবাড়ি যায়, তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়”)। এজন্যে ইমামতি থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা অনুচিত। আরেক জায়গায় অবশ্য পেয়েছি, ইসমাইল মারা যাওয়ার পর তাঁর পুত্র আরেক ইসমাইলকে ইমাম না করে করা হয় পিতা ইসমাইলের ছোট ভাই মুসাকে। কিন্তু, এটা মেনে নেয় নি ইসমাইলিরা। তাদের মতে, ইসমাইল গুপ্ত ইমাম এবং মুহম্মদ শেষ ‘প্রেরিত পুরুষ’ বা ‘আল তাম্ম’। জগতে শরিয়ত প্রচারের জন্যে, তাদের মতে, অন্তত সাত জন মহাপুরুষ প্রেরিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন, আদম, নুহ, ইব্রাহিম, মুসা, ইসা, মুহম্মদ ও আল তাম্ম। এঁদের প্রত্যেকের দুজনের মধ্যবর্তী সময়ে একজন ‘সামেত’ বা নীরব কর্মী এসেছেন। যেমন: ইসমাইল, হারুন ও আলি প্রমুখ। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ইসমাইল শিগগিরই ইমাম মেহেদি হয়ে আবার অবতীর্ণ হবেন। তাঁদের এই মতবাদকে ‘আল বাতেন’ এবং এই মতবাদে বিশ্বাসীদের ‘বাতেনি’ বা ‘ইসমায়েলি’ বলা হয়।
আবদুল্লাহ ইবনে ময়মুন নামের একজন ইসমাইলি কর্তৃক বাতেনি মতবাদ রূপ নেয় দৃঢ় ধর্মাদর্শে। তিনি প্রথমত বসরা এবং পরে সিরিয়ার সালামিয়া থেকে বাতেনি মতবাদ গুপ্ত অথচ সুশৃঙ্খলভাবে প্রচার করতে থাকেন। ৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে আবদুল্লাহ গত হলে পরে হামাদান আল কারমাত নামে কুফার অধিবাসী তাঁর এক শিষ্য বাতেনিদের ভিন্ন একটি গোত্র (কারমাতিয়া) প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর আবু সাইদ হাসান আল জান্নাবি। তিনি কারমাতিয়া মতবাদের অনুসারী এবং তাঁরই চেষ্টায় পারস্য উপসাগর থেকে এমামা ও ওমান পর্যন্ত ভূভাগ তাঁর শাসনাধীন হয়। ৯০৩ খ্রিস্টাব্দে তাঁর উপযুক্ত সন্তান আবু তাহের সুলতান আল কারমাতি দক্ষিণ ইরাক তছনছ করে হজযাত্রী প্রায় বিশ হাজার মুসলিমের প্রাণনাশ করেন এবং কাবাঘর ও জমজম –এর জল রক্তে লাল করে তোলেন। ‘হজরে আসওয়াদ’-ও তিনি তুলে নিয়ে যান (আনুমানিক সময়কাল: ৯২৯-৩০ খ্রিস্টাব্দ)।
হাসান সাব্বাহ ইমাম গাজ্জালির সতীর্থ ছিলেন বলে কথিত। যুবক বয়েসে তিনি মিশর যান এবং সেখানে কায়রোর একটি শিয়া শিক্ষাকেন্দ্রে প্রায় বছর দেড়েক থাকেন। বলা হয়, সেখানে ছাত্রদের ইসলামি বিভিন্ন মতবাদ নিয়ে প্রশ্ন করতে (বাহাস) এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্যে তাদের ওস্তাদের মতবাদে পৌঁছানোর রাস্তা শেখানো হতো। শাগরিদেরা নয়স্তরী পথ পেরিয়ে অবশেষে পরম সত্যে পৌঁছাতো। কী সেই সত্য? পৃথিবী তৈরি হয়েছে কর্মের মাধ্যমে এবং বিশ্বাস বা ইমান হচ্ছে জনতাকে ভুল বুঝিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের রাস্তা।
ফাতিমীয় বংশের উত্তরাধিকারীর প্রশ্নে হাসান মিশরের রাজার সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। তিনি দাবি করেন যে, খলিফার জ্যেষ্ঠ পুত্র নিজার-ই সিংহাসনের প্রকৃত দাবিদার। এতে ক্ষুব্ধ হন অন্যেরা। তিনি বন্দী হন কারাগারে। একদিন হঠাৎ ধসে যায় কারাকক্ষের দেয়াল। এরপর তিনি পালান মিশর থেকে। মিশরে যাওয়ার আগে তিনি অবশ্য সেলজুক দরবারে কাজ করতেন, যা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। একদিন অবশেষে তিনি উদয় হন আলামুত দুর্গের অধিপতি হিসেবে।
স্থানীয় ভাষায় ‘আলামুত’ মানে ছিল ‘ইগলের বাসা’/ ‘ইগলের শিক্ষা’। বলা হয়, এক রাজা (বাহ সুদান ইবনে মারজুবান) পাহাড়ি এলাকায় একটি দুর্গ তৈরি করতে চান। এলক্ষ্যে তিনি একটি ইগল ছেড়ে দেন, সেটি উড়ে গিয়ে বসে পাহাড়ের খাঁজের বিরাট এক পাথরের ওপর। সেখানেই তিনি দুর্গ নির্মাণের আদেশ দেন। ঘটনাটা প্রায় ৮৬৫ খ্রিস্টাব্দের দিকে। কিভাবে হাসান দুর্গটা পেলেন, সে নিয়েও আছে নানা কাহিনী। এক জায়গায় পাচ্ছি তারিখটা ছিল ৬ সেপ্টেম্বর, ১০৯০। আলামুত ছিল প্রত্যন্ত এক অজপাড়াগাঁ। হাসান প্রথমে তাঁর কিছু অনুচর পাঠান সেখানে বাতেনি মতবাদ প্রচার করতে। তারা মাটি তৈরি করলে এরপর তিনি নিজে গিয়ে সেখানে হাজির হন। দুর্গেশ মাহদি আলাবাতিকে তিন হাজার দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) দিয়ে তিনি দুর্গটা কিনে নেন। আরেকটি কিম্বদন্তী আরো চমকপ্রদ। তিনি দুর্গাধিপতির কাছে একটি গরুর চামড়া যতটুকু জায়গা নেবে শুধু ততটুকু জায়গা চান। মঞ্জুর হলো। এরপরেই খেল। চামড়াটা ফালি ফালি করে করে এতো বিস্তৃত করে ফেলা হলো যে, শেষমেষ ওই চামড়ার টুকরো দিয়ে পুরো দুর্গটাই ঢেকে ফেলা সম্ভব হলো। এরপর , আর কি! দরাদরির শেষে হতভম্ব প্রধানকে রাস্তায় নামিয়ে দুর্গ দখল। (রোমক কবি ভার্জিল-এর ‘ইনিড’ মহাকাব্যে দিদোর কার্থেজ নগরী স্থাপনের সাথে ঘটনাটার বেশ মিল আছে)।
জায়গাটার ভৌগোলিক অবস্থান ছিলো উত্তর পারস্যে, আলবুর্জ পর্বতের ওপরের এক উপত্যকায়। প্রায় দশহাজার ফুট ওপরে। দরিঞ্জান (আরেক জায়গায় দেখছি শাহরুদ) নদী বয়ে যেতো এর পাশ দিয়ে। বসন্তে আলবুর্জ পর্বত থেকে বরফগলা জলের ঢল নামতো পাহাড় বেয়ে, বয়ে যেতো বড় বড় গাছ আর পাথরের চাঁই। ফলে, দুর্গটা ছিল নিতান্তই দুর্জয়। হাসান এখানেই স্থাপন করেন তাঁর শিক্ষাকেন্দ্র এবং অনুসারীদের অভয়ারণ্য, যা পরবর্তী প্রায় ১৫০ বছর ধরে সারা মুসলিম জগতে এবং অন্যত্রও ত্রাস সৃষ্টি করে বেড়াবে। কায়রোর ফাতিমি রাজবংশের বিখ্যাত রাজ্যের কিছুটা রং-রূপ বুঝি তিনি ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন এই বর্ণহীন মরুদেশে।
ইসলামের মূল গঠন, দুটি স্তরের বিভাজনে বিকশিত। একদিকে ঐশ্বরিক আইন (‘শরিয়া’), অন্যদিকে ঐশ্বরিক বা আধ্যাত্মিক মার্গ (‘তরিকা’)। দ্বিতীয়টি দেখা হয় গুহ্য আভ্যন্তর হিসেবে আর আইন হলো বাহ্য আবরণ। ইসমাইলিয়াদের কাছে দুটো একত্রে একটি সত্তা যা কেবল তা’ইল-এর মাধ্যমে ভেদ্য। শরিয়া আর তরিকার মাঝেই লুকিয়ে আছে পরম সত্য (‘হাকিকা’), ধর্মতত্ত্বীয় বচনে পরমেশ্বর স্বয়ং। এই তা’ইল-ই ইসমাইলিয়াদের মূল ধারণা । ইসমাইলি মরমিয়াবাদের কেন্দ্র তা’ইল-এর আসল অর্থ হচ্ছে, “কোন কিছু এর উৎসে বা গভীর তাৎপর্যে প্রকাশ করা।”এমনিতেই শিয়ারা এর আগে থেকেই কোরানের ভেতরকার রহস্য অনুধাবনে মগ্নতা দেখিয়েছিলো। কিছু আয়াতের মর্মভেদ করে তারা দেখাতে চেয়েছিলো যে, ওগুলো আসলে সংকেতের আড়ালে আলি এবং অন্য ইমামদের কথা ঘোষণা করছে। ইসমাইলিরা ব্যাপারটা আরো বৈপ্লবিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যায়।
ইসলাম তাদের কাছে একটি বহিরাবরণ, যার আড়ালে লুকনো আসল সত্য জানতে গেলে তা’ইলের সাহায্যে পুরো ব্যাপারটা সামগ্রিকভাবে উন্মোচন করতে হবে। আর এই উন্মোচনের মাধ্যমে ‘হাকিকা’-য় পৌঁছনো সাধারণ মানুষের কম্মো নয়, এর প্রকাশ ঘটে কেবল একজন পরিপূর্ণ মানুষের মাধ্যমে, এবং তিনি হচ্ছেন ইমাম। ইমামকে জানলেই সেই গূঢ় সত্য জানা যায়, কারণ তাঁর মাধ্যমেই ঈশ্বর স্বপ্রকাশ (ভারতীয় অবতারবাদের সাথে এর মিল স্পষ্ট)। একবার যখন ইমাম জ্ঞাত হলেন, তখন শরিয়া আর তরিকা ধানের তুষের মতো উড়ে ভেসে যায় বাতাসে। এই আভ্যন্তর জ্ঞান মানুষকে বাইরের বাস্তবতা থেকে মুক্তি দেয়। ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জ্ঞানের ওপর বিজয় ঘটে অবশেষে সেই গুহ্য জ্ঞানের।
তবে, কথা হচ্ছে এই যে, এই সব আইন ছুঁড়ে ফেলার ব্যাপারটা ইসলাম যে শুধু ভালো চোখে দেখেনি তাই নয়, বরং এটাকে রীতিমত ধর্মদ্রোহিতার পর্যায়ে ফেলা হয়েছে। শিয়াদের আত্মরক্ষার জন্যে ‘তাকিয়া’ গ্রহণের অনুমতি আছে। এর মানে মৃত্যু বা শাস্তি এড়ানোর জন্যে গোঁড়া মুসলিম হিসেবে অভিনয় করা জায়েজ। আর নিজারি বা বাতেনিদের জন্যে এটা রীতিমত ধর্মাচরণের অঙ্গ। আলামুতে কেবল সর্বোচ্চ পদবিধারীরা ছাড়া হাসান আর সবার জন্যেই এই গোপনীয়তার পোশাক বাধ্যতামূলক করেছিলেন।
সেসময়ে আসলে কে ছিলেন ইমাম? সাব্বাহ নিজে কখনো নন। একবার তিনি এরকমও বলেছিলেন, “ইমামের অবাধ্য সন্তান হওয়ার চাইতে তাঁর বাধ্য অনুগত হতেই আমি পছন্দ করবো।” কথাটা তিনি বলেছিলেন কারণ তখন লোকজন তাঁর সাথে ইমামের কুষ্ঠিঠিকুজি মেলানো শুরু করেছিলো। ফাতিমি রাজবংশের রাজপুত্র নিজার এবং তাঁর সন্তান মারা গেছেন উত্তরাধিকারীহীন অবস্থায়। কিন্তু, আলামুতে তাঁরা সবাই ‘নিজার-এর নামেই’ উপাসনা করতেন। বস্তুত, ইসমাইলিয়াদেরও কিন্তু তিনটে উপগোত্র হয়ে যায় ইমাম এবং অন্য ব্যাপারের জের ধরে। ফাতিমিয়া, নিজারিয়া আর কারমাতিয়া।
আলামুতে নতুন নাজিরিদের সাতধাপের মাধ্যমে শিক্ষা দেয়া হতো। এদের হয় সংগ্রহ করা হতো কম বয়েসে আশপাশের এলাকা থেকে অথবা মগজধোলাই করে নিয়ে আসা হতো অন্য জায়গা থেকে। পরবর্তী সময়ে অবশ্য দুর্গের অধিবাসীদের বংশধরেরাই সংখ্যায় যথেষ্ট ছিলো। তবে, বিশ্বাসান্তরকরণ চলছিলোই। আলামুতে রীতিমত আমলাতান্ত্রিক স্তরবিন্যাস বর্তমান ছিলো। সর্বোচ্চ স্তরে ছিলেন সৈয়দেনা হাসান ইবনে সাব্বাহ, প্রধান গুরু এবং প্রচারক, সব গূঢ় বিষয়ের রক্ষাকারী, ‘শাখ্ আল জাবাল’, ক্রুসেডারদের কাছে অনুবাদে ‘দ্য ওল্ড ম্যান অব দ্য মাউন্টেন’; তাঁর আশেপাশে মাত্র কয়েকজনই থাকতো। তাদের নাম ছিলো দা’ই। এদের মধ্যে ছিলো তিনজন প্রশাসক-একজন পূর্ব পারস্যের জন্যে, একজন খোরাসান এবং একজন কুহিস্তানের-ত্রানসাজোনিয়ার জন্যে। তাদের নিচে ছিল রফিক-এরাই একনিষ্ঠ কর্মী। দুর্গ থেকে নির্দেশ এলে তা সুনির্দিষ্ট নিয়মে এদের মাধ্যমেই পরিপালিত হতো। সংগঠনের নিচের স্তরে লাসেকদের অবস্থান। এরা মতবাদে ছিলো আস্থাশীল, কিন্তু তেমন কোনো দায়িত্ব এদের ওপর ছিলো না।
এছাড়া ছিলো মুজিব। এরা একটু পড়াশুনো-করা উত্তরদাতা। মতাদর্শ নিয়ে তাদের কিছু শিক্ষা দেয়া হতো, নিজেরাও পড়ে নিয়ে জ্ঞান বাড়াতো, উত্তর দিতো লোকেদের অভিযোগের। তারাই ছিলো মূলত প্রচারকের দায়িত্বে।
সবার নিচে ছিলো ফেদা’ইরা/ফিদা’ইরা। এরাই ছিলো মূল আত্মঘাতী। ফেদা’ই শব্দটা এসেছে ‘ফিদা’ মানে ‘আত্মোৎসর্গ’ থেকে। পড়াশুনো তাদের সামান্যই ছিলো, তবে যুদ্ধবিদ্যা তাদের শিখতেই হতো। এদের কারণেই নাজিরি ইসমাইলিয়ারা অ্যাসাসিন হিসেবে এতো খ্যাতিমান হয়ে ওঠে। পরনে থাকতো তাদের সাদা জোব্বা আর লাল কোমরবন্দ। সবসময় এরা প্রস্তুত থাকতো জীবন বিসর্জনের জন্যে। তাদের প্রশিক্ষণ হতো স্বয়ং হাসানের হাতে। তারা শিখতো জোব্বার নিচে ডাকের পায়রা লুকিয়ে-রাখা, যে-কোন পরিস্থিতিতে খবর-দেয়ার কৌশল, কেমন করে লুকিয়ে রাখতে হবে ছোরা, কেমন করে আচমকা ওটা বের করে আনতে হবে আর বসিয়ে দিতে হবে শিকারের বুকে। কাউকে শেখানো হতো কোন বিশেষ অঞ্চলের ভাষা বা উচ্চারণ। অন্য অঞ্চলের জামাকাপড়-পরা বা আচারব্যবহারও শিখতে হতো তাদের। শিকার বিশিষ্ট হলে প্রশিক্ষণও হয়ে উঠতো বিশেষরকমের। শিকারের অভ্যাস, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, কোথায়, কখন তার যাওয়া-আসা, তার সহচরদের তথ্য-এগুলোও জানতে হতো তাদের। তবে, সবার উপরে তাদের শিক্ষার মূল বিষয় ছিলো-বিশ্বাস ও মৃত্যুসংক্রান্ত। তাদের বিশ্বাস ছিলো শত্রুদের হত্যা করে আত্মঘাতী হলে বা ধরা পড়ে মৃত্যুবরণ করলে তারা বেহেস্তগামী হবে-শহিদ হিসেবে।
প্রিয় পাঠকগণ, এতক্ষণ যে-বিবরণ শুনলেন তাতে বাংলার কোন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের কথা মনে কি দোলা দিয়ে যায় নি? যদি না যায়, তা’লে আপনি মশাই এবাংলার লোকই নন।
সাধারণ্যে তারা ‘অ্যাসাসিন’ হিসেবে পরিচিত কেন? এই নামের পেছনে যে-কাহিনি কাজ করে, তা হলো এই যে, তাদের হত্যার আগে হাশিশ নামে একরকম উত্তেজক মাদক খাইয়ে পাঠানো হতো হত্যাকাণ্ডে, যাতে তাদের অন্য কোনো ধারণা মাথায় ঠাঁই-ই না পায়। তাদের অবশ্য এর আগে কিছুটা বেহেশতি স্বাদ দেয়া হতো।
কিভাবে?
(আগামী সংখ্যায় সমাপ‌্য)
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×