আমি খুলনা শহরের ছেলে, নব্বই দশকে আমাদের খুলনা শহরের সকল পর্যায়ের ছোট বড় সন্ত্রাসীর রাজনৈতিক পরিচয় দেখেছি জাতীয় পার্টির পরিচয়। এরশাদ সরকারের পতনের পরে অনেকের মুখেই নতুন করে শুনতে লাগলাম জাতীয় পার্টি করেছি তবে আমার নেতা সব সময়েই ছিল বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে তার সাথে কারো তুলনা হতে পারে না।
একানব্বইয়ে বি এন পি ক্ষমতায় আসার পরে এরা হয়ে গেলো জিয়ার সৈনিক, তাদের তখন খুব ভালো লাগতো জিয়ার খাল কাটা কর্মসূচী। জিয়ার প্রশংসায় কতো শতবার এদের চায়ের কাপে ঝড় তুলতে দেখেছি তা গুনে শেষ করা যাবে না। একানব্বইয়ে ক্ষমতাসীনদের প্রচ্ছন্ন প্রস্রয়ে ক্ষমতার দাপট দেখেছি ফ্রিডম পার্টির। খুলনা শহর দাপিয়ে বেরানো ফ্রিডম পার্টির কর্মসূচীতে দেখেছি স্থানিয় সন্ত্রাসীদের, যাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান সত্ত্বেও অর্থ ও ক্ষমতার মোহে আদর্শ হত্যা করতে দ্বিধা করেনি ঐ সকল সন্ত্রাসীরা।
ছিয়ানব্বইর পরিবর্তনের পরে এরা প্রায় সকলেই হয়ে গেলো মুজিব সৈনিক। পঁচাত্তর থেকে ছিয়ানব্বই পর্যন্ত যারা জেল - জুলুম - নির্যাতন সহ্য করে রাজনীতি করেছে তারা অনেকেই পেশি শক্তি ও অর্থ শক্তির কাছে পরাজিত হতে শুরু করলো। আদর্শহীনের কাছে পরাজিত হতে থাকলো আদর্শ।
বর্তমানের অবস্থাও ঠিক সেই আগের মত, আদর্শ আজও পিছনে পরে আছে, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বেড়ায় সেই সেদিনের শকুন।
হায়না - শকুনের কাজ শিকার ধরা, আদর্শ লালন করা নয়।
বর্তমানের এক ধরনের বুদ্ধিজীবীও এই শকুনদের রাজনৈতিক পরিচয় খুঁজে, বিতর্কিত করে একটি রাজনৈতিক দলকে।
স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির যে কোন অপকর্মকে পরিচয় বিহীন সন্ত্রাস বলে সঠিক সত্য এড়িয়ে যায়।
আর, স্বার্থান্বেষী শকুনদের পরিচয় তুলে ধরে একটা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে।
সন্ত্রাসীর কেন রাজনৈতিক পরিচয় থাকবে, সন্ত্রাসী যদি কোন দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকেও তাহলেও সে সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসকে চিহ্নিত করতে হবে অপরাধ হিশেবে, অপরাধ সংগঠকের পরিচয় অপরাধী। অপরাধীর অন্য কোন পরিচয় কেন থাকতে হবে ?
অপরাধীকে বিবেচনা করা হোক অপরাধী হিশেবে, রাজনৈতিক পরিচয়ে নয়।
আমাদের সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।