somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি একজন এ্যান্টিহিরো, আমি এক ওয়ান ম্যান আর্মি

২৯ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছুই করিনি জীবনে, না চাকরী না অন্যকিছু। সোনার হরিণ-কে তো তিনবার পেয়েও ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু লেখাপড়া তো ছাড়া যায় না। পড়াশানা করতে যেয়ে স্বাভাবিকভাবেই অনেকের সাথেই মিশতে হয়। কিন্তু আমি হলাম এক অদ্ভূত প্রজাতি। কারো সাথে ঠিক মিশে চলতে পারিনা। কিছুদিন আগে কিছু !বন্ধুর ! সাথে দাড়িয়ে আছি। একজন হিন্দু মহিলা পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছে। বয়স না হলেও ৪০ এর উপরে। অদ্ভূত ব্যাপার হলো এই চল্লিশার্ধ্য মহিলাটা আমার সেই !বন্ধু!দের ইভটিজিং এর হাত থেকে রক্ষা পেলনা। নোংরা কিছু মন্তব্য শুনে, ব্যাথিত চোখে কিছু ছেলের বয়সী ছেলের দিকে তাকিয়ে তিনি চলে গেলেন। ঘেন্না হয় নিজের প্রতি, সেই ছেলেগুলোর একজন আমিও। যদিও আমি কোন টিজ করিনি, মায়ের বয়সী একজন মহিলাকে মায়ের মতোই দেখি, তবু। তবু ওদের সাথেই তো ছিলাম আমি। সেদিনই ওদের সাথে আড্ডাবাজি বন্ধ করে দিলাম। দরকার নাই আমার ওমন বন্ধুত্ব।

শুধু একদিনের কথা না। দিনে পর দিন, মানুষের মধ্যে এ ধরনের নোংরা মানসিকতা দেখে হাফিয়ে উঠেছি আমি। মজার ব্যাপার হলো, দশজন খারাপ মানুষের মধ্যে, তাদের অন্যায় কাজের বিরূদ্ধে আপনি যদি তাদের খারাপ কাজটার প্রতিবাদ করেন, তাহলে খারাপ কিন্তু আপনাকেই হতে হবে। তাদের অন্যায় কাজ, তাদের নোংরা মন্তব্যই হলো তাদের আদর্শ। সেই আদর্শের বিরূদ্ধে আপনি কিভাবে যাবেন? গেলে, আপনাকেই সবার সামনে অপরাধী হতে হবে।

আমি নিজের একটা কথা বলি। ফেসবুকে একটা গ্রুপে ছিলাম আমি। দশ থেকে বারোজনের একটা গ্রুপ। সবার মধ্যে অসাধারন বন্ধুত্ব। খুব গর্ব হলো যখন নিজেকে ওই গ্রুপের একজন মেম্বার হিসেবে দেখলাম। বিশ্বাস করেন, গ্রুপের প্রত্যেকটা মেম্বারকে প্রচন্ড ভালো বাসতাম আমি, এখনও বাসি। ওই গ্রুপের একজন মেয়ে মেম্বারকে ইয়ারকির ছলে ফান হিসেবেই একটা কথা বলে বসেছিলাম। খুবই সামান্য একটা কথা। কথাটা বলার সময় আমার খেয়াল ছিল না, যাকে কথাটা বলছি- সে ছেলে না মেয়ে। অন্যান্নদের সাথে ওধরনের কথা বলতাম, মুখ ফসকে মেয়েটার সাথেও ভুল করে ফান করে ফেললাম। হয়ত কেউ খেয়ালও করতোনা ব্যপারটা। কিন্তু আমি নিজেই যে খেয়াল করেছি। অন্যের কাছে জবাব দেওয়ার চেয়ে নিজেকে জবাব দেওয়া অনেক কঠিন। সেদিনই গ্রুপ থেকে লিভ করলাম আমি। আমার ভালোবাসার গ্রুপটাকে চিরদিনের মতো ছেড়ে দিলাম। পরে মেয়েটার সাথে আমার বহুবার কথা হয়েছে, এখনও হয়। আমার সৌভাগ্য, সে আমার সেই ফানটার জন্য আমার উপর রাগ করেনি এবং আমাকে কখনই খারাপ চোখে দেখেনি। হয়ত আমি আসার পরে আমার নিয়ে অন্যরা আলোচনা করেছে, করতেই পারে। ভালো কিছু বলার কোন কারন নাই, হয়ত খারাপই বলেছে। বলাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কি করে বোঝাবো আমি, আমার মনে কোনই কপটতা ছিলনা। ওর চেয়ে হাজার গুন খারাপ কথা এই ব্লগে, ফেসবুকে অনেকেই অহরহ বলছে। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, এরা বিবেকের কাছে কোনদিনও লজ্জিত হয় না।

যখনই, যে আড্ডাতেই যাইনা কেন, সবখানেই দেখি শুধু নোংরামীর ছড়াছড়ি। ভালো কথা, ভালো কিছুর কোথাওই কোন দাম নাই। আপনার গলা যত বড়, আপনার অন্যকে অপমান করার শক্তি যত বেশী, আপনার গুন্ডামী পাওয়ার যত বেশী- আপনি ততই মানুষের কাছে জনপ্রিয়। সবখানেই দেখি একে অন্যকে ছোট করে নিজে বড় হতে চায়। ওদের কি এতটুকু সেন্স নাই, অন্যকে ছোট করে নিজে বড় হওয়া যায়না? আজ হোক-কাল হোক সেও একদিন ছোট হতে পারে?

মানুষের সাপোর্ট পেতে হলে, বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে হলে, তাদের নোংরামীর সাথে আমাকেও তাল দিতে হবে। দিলাম না আমি তাল, দরকার নাই আমার কোন নোংরা বন্ধু। প্রয়োজনে আমি বন্ধু ছাড়াই চলবো, ওয়ান ম্যান আর্মি। মানুষের চোখে হিরো হতে গেলে আজ গুন্ডা হতে হবে, গলার নোংরা জোর থাকতে হবে। দরকার নাই আমার হিরো হওয়ার।

আমি হিরো হতে চাই না, আমি এ্যান্টিহিরোই থাকবো।
৩৬টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×