(আমাদের ক্যাচাল গ্রুপের একটা বন্ধু ছিল। আড্ডাতে কোন উত্তেজনার বা ক্যাচালের কথা শুনলেই উত্তেজিত হয়ে উঠতো। চোখ মুখ গরম করে মুস্টিবদ্ধ হাত উচিয়ে বার বার বলতো "মাইরালামু, কাইট্যালামু, খাইয়ালামু।"
দেশের ইস্যুতে লিখতে গিয়ে নিজেকে ওই বন্ধুর মত মনে হচ্ছে। কথা আছে কিন্ত কর্ম নেই। নাকি যোগ্যতা নেই? নাকি আমাদের সবার শক্তি ওই চোয়ালেই আটকে আছে? )
টিপাইমুখ বাধ নির্মান শুরু হয়ে গিয়েছে। সেখানে আমাদের অর্থমন্ত্রি আবার বিনিয়োগ করবারও ঘোষনা দিয়েছেন। থাপড় খেয়েছি আমরা, অথচ থাপড়দাতা হাতে ব্যাথা পাওয়াতে ঔষধ পথ্যের দামটাও আমরাই পকেট থেকে দেবো। মনে হয় না যে মীর জাফরও দালালিতে এদের ধারে কাছে আসতে পারবে।
সে যাই হোক। প্রথম কিস্তিতে টিপাইমুখের বিরুদ্ধে লেখায় লেখায় ব্লগ ভরে গিয়েছিল। এমনকি তেতো চিরতা গেলার মত এ সংক্রান্ত একটি পোস্টও সামুতে স্টীকি হয়েছিল। প্রতিবাদে সরগরম হয়ে পড়েছিল সমস্ত ব্লগ।
দ্বিতীয় কিস্তিতে কি হলো? টিপাই সংক্রান্ত ভালো লেখকদের (দিন মজুর) পোস্টে ঘু ঘু চড়লো। বিচ্ছিন্নভাবে বেশ কয়েকজন প্রতিবাদ করলেন। এর পর সবাই সব ভুলে গেলো। যেন সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। কারো কোন বিকার নেই। প্রতিক্রিয়া নেই। কেমন ঠান্ডা মেরে গেলো।
ভারতকে কড়িডোর দেয়া নিয়েও একই হাল। সরকার আর তার পদলেহি দুই উপদেস্টার মুখে সিঙ্গাপুর ব্যাংকক ইত্যাদি কত কিছু শুনলাম। জানলাম স্বাধীন দেশের মধ্যে বিদেশের যান চলবে, ট্রাক ড্রাইভারদের জন্য চায়ের দোকান খুলে আমরা কোটিপতি হয়ে যাবো, শুল্ক নিলে আমরা নাকি অসভ্য বলে গণ্য হবো, আরো কত্ত কি !
নাহ এর পরেও আমরা ওই মাইরালামু কাইটালামুর বিবর্তেই ঘুরপাক খাচ্ছি।
এখন একুশে টিভির একটা প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে আবর আমাদের সরব হতে দেখা যাচ্ছে। তিতাস নদীর গলায় ফাস দিয়ে ভারতের জন্য কড়িডোরের রাস্তা বানিয়ে লাখ লাখ মানুষের জীবিকার উপর লাত্থি দেয়া হয়েছে। কোন সংবিধান, আইন মানা হয়নি। আমরা এখনো নির্বিকার।
ভারতী সিনেমা প্রদর্শনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য কেউ কেউ বি এন পি এবং খালেদা জিয়ার আহবানের জন্য অপেক্ষা করছেন। কেন? দেশটা কি শুধু তাদের? আমার আপনার নয়? আমরা আছি বলেই তো তারা আছেন, নাকি? তাহলে তাদের ডাকের অপেক্ষায় আমাদের বসে থাকলে চলবে?
আমাদের প্রতিবাদের স্থানটি শহীদ মিনারের চত্ত্বর ছাড়িয়ে আরো প্রশস্ত করা দরকার। তিতাস নদীর বুক চিড়ে যে পরাধীনতার হিংস্র নখর বসে আছে, তার বিরুদ্ধে একটি করে কোদালের কোপ পড়লেই তো যথেষ্ঠ। আমরা নিজেরাই সংগঠিত হয়ে কোদাল হাতে পথে নামলে সাথে থাকবে লক্ষ লক্ষ জনতা। আর বাঙ্গালির হাত মুস্টিবদ্ধ হলে কি ঘটে যেতে পারে, সেটা বিশ্ববাসি সেই ৭১এই দেখেছে।
কিছুদিন আগে আরো ৪ জন বাংলাদেশিকে পাশের দেশের হিংস্র কুকুর বাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে। নতুন কিছু না। আর এক সময়ের ব্যাঘ্র শার্দুলদের নাম এবং চরিত্র এমনভাবে বদলে দেয়া হয়েছে, যে মানুষ ওদের আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম ডেকে থাকে।
এই ইস্যু নিয়েও আমরা অন্তর্জালে অনেক কথার কথা বলেছি , প্রতিবাদ করেছি। সীমান্তের একজন বাংলাদেশি মারা যাবার খবর পেলে যা যা করা যেতে পারে তা হলো,
হাতের সামনে যে ডিস লাইনই পাবেন কেটে দিন। নিজে না পারলে ১০-২০ টাকা খরচ করলে যে কোন দুস্ট পোলাপান কাজটা করে দিতে পারে।
আপনার মহল্লায় কোন ভারতীয় ভাড়া থাকলে মহল্লার সবাই মিলে তাকে এক ঘরে করে রাখুন।
ভারতীয় কোন নাগরিকের কাছে যে কোন দোকানদার কোন কিছু বিক্রি না করতে পারে, সেটা নিশ্চিতকরণ।মহল্লার তরূন যুবকরা সবাই যদি দোকানদারকে শক্তভাবে অনুরোধ করে, তাহলে সে অনুরোধ ন্ না রক্ষা করার মত বদসাহস দোকানির হবে বলে মনে হয় না।
ভারতীয় নাগরিকদের সাথে কথায় কথায় আলাপ করে জেনে নিন, ওর অভিবাসনের হাল। এর পর ভিসা অতিক্রান্ত বা ভিসা নেই এমন অভিবাসি ভারতীয় নাগরিকদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করুন। সেই সাথে ইন্ডিয়ানটির নাম ঠিকানা সহ পত্রিকায় খবর পাঠান।
এ রকম ছোট ছোট প্রতিক্রিয়া শুধু মাত্র ঢাকা শহরে দেখাতে পারলেই, ইন্ডীয়া বাপ বাপ করে সিধা হতে বাধ্য হবে।
তবে এ সংক্রান্ত আপনাদের আরো কোন পরামর্শ থাকলে দিতে পারেন।
সরকার কিছু করবে না, বিরোধী দলের মুখে দিয়ে তাকিয়ে সময় নস্ট হবে। তাই সময় এসেছে বাস্তব কিংবা অপরবাস্তবে সমানভাবে প্রতিকার খুজে নেবার।