হাসিনা - খালেদার ফোনালাপের একটি নির্মোহ বিশ্লেষন
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
সাবেক প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ফোনালাপ এখন টক অফ দা টাউন। এই ফোনালাপের ব্যাপারে অনেক উৎসাহি চোখ টিভির পর্দায় ছিল। ব্যাক্তিগত পর্যবেক্ষণে আমি যা দেখলাম, সেটা অভিযোগ পালটা অভিযোগ এবং একই রেকর্ড বার বার বাজানো হলো। কাজের কাজ কি হবে, বা জাতি কি পেলো, সেটা বিচারের জন্য একটি মাত্র ফোনালাপই যথেষ্ট নয় বলেই মনে করি।
কি পেলেন হাসিনাঃ সমালোচকরা যখন বার বার সরকার প্রধানের উদ্যোগের কথা বলছিলেন, তখন অন্তত সাবেক সরকার প্রধান হিসাবে এই ফোনালাপ , নিন্দুকদের সাময়িক সমালোচনা বন্ধ করলো। তাছাড়া বিএনপির ডাকা হরতালের তীব্রতা কিছুটা হলেও স্তিমিত করতে কাজে লাগলো।
কি পেলেন খালেদা জিয়াঃ সাধারণ মানুষের তো সাধ্য নেই সরকার প্রধানের মুখের উপর উচিত কথা বলা। অন্তত বৃহত্তর একটি দলের নেত্রি হিসাবে তিনি হাসিনাকে সেই কথাগুলিই শুনিয়েছেন। বলা হয়ে থাকে যে, মনের গুমোট বাতাস বের হয়ে গেলে, রাগ অভিমান ঘৃণা ইত্যাদির তীব্রতাও কমে যায়। তাছাড়া এই কথাগুলি হাসিনার শোনার দরকার ছিল। নতুবা চাটূকার পরিবেস্টনে থাকার কারণে হাসিনা একটি স্বপ্ন জগতে ছিলেন। এই কথাগুলি শোনার পর তার কিঞ্চিত শুভ বুদ্ধির উদয় হলে হতেও পারে।
সাধারণ মানুষ তথা বাংলাদেশ কি পেলো? বলতে গেলে কিছুই না। কারণ হাসিনা খালেদা যার যার অবস্থানে অনড়। সত্যি কথা হলো, আমাদের দেশের মানুষদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনা বলতে চায়ের কাপে ঝড় তোলা। তাও সেটা মধ্যবিত্তের মধ্যেই। উচ্চ বিত্তদের এ সবে উৎসাহ নেই। আর নিম্নবিত্তের প্রতিদিনের সমস্যা সমাধানেই দিন চলে যায়। তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হলো কি হলো না, রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র হলে সুন্দরবন ধবংস হবে কি হবে না, টিপাইমুখ বাধের কারণে পরিবেশের সুদুর প্রসারি ক্ষতি কি হতে পারে ইত্যাদি তাদের চিন্তা চেতনায় আঘাত করে না। বরং চাল ডাল আর পেয়াজের আকাশছোয়া মুল্যের কারণে স্বাদের আর পরিমানের তারতম্যই তাদের প্রধান আলোচ্য এবং বিবেচ্য।
এই অবস্থায় হাসিনা খালেদার পারস্পরিক ফোনালাপ দেশ বা জাতির জন্য সামগ্রিকভাবে কিছুই বয়ে আনেনি।
তবে হ্যা, যেহেতু আওয়ামি লিগ আর বিএনপি ছাড়া দেশের ক্ষমতায় আসবার মত কোন তৃতীয় শক্তি আর কেউ নেই, সেই যুক্তিতে দুই প্রধান দলের নেত্রির মাঝে বরফ গলতে শুরু করেছে, তাও বা কম কিসে? চরম আশাবাদি মানুষ এটা আশা করতেই পারেন যে দুই প্রধান দলের মধ্যে সতীন সুলভ সম্পর্ক বিদায় নিয়ে স্বাভাবিক রাজনৈতিক দলের মতই সম্পর্ক বিদ্যমান হোক এটাই কামনা।
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?
যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।
নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন
আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত
বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!
কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?
এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন