somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাকিনী part4

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৬:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পরদিন কোর্টে বাবার হেয়ারিং ছিল। সাবজজ-১-এর কোর্টে কেস। বিশ-পঁচিশটা ফৌজদারি মামলার শুনানি হবে। কার কেস কখন উঠবে আগে থেকে বলার উপায় নেই। অফিস সকাল ন’টায় শুরু হলেও জজ সাহেব এগারোটার আগে এজলাসে ওঠেন না। কেসের শুনানি চলে একটানা বিকেল চারটে অব্দি। এর ভেতর লাঞ্চ ব্রেক, নামাজের ওয়াক্ত এসব আছে। সকাল ন’টার ভেতরই জেল থেকে প্রিজনভ্যানে সব আসামি এনে পুলিশেরা কোর্ট-হাজতে রাখে। দশ টাকা, বিশ টাকা দিলে হাজতিকে জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়াতে দেয় তারা। আত্মীয়স্বজনের সাথে দেখা হয়। দর্শনার্থীদের ভেতর গ্রামের বৌ-ঝিরাই বেশি। কোলে-কাঁখে দু-তিনটা ছেলেমেয়ে। সিকনি গড়িয়ে পড়ছে বাচ্চাগুলোর নাক দিয়ে। হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে এর খানিকটা গালেও মেখেছে তারা। শুকিয়ে চড়চড় করছে গাল। সব কটার পা খালি। এদের মায়েদের স্পঞ্জের স্যান্ডেল পরা ধুলোভরা পা দেখে এত মন খারাপ হয়! একটা ছোট ছেলে তার হাজতি বাবাকে বলছে, ‘আব্বা, আমাকে একটা পাউরু টি কিনে দেন না।’ শহরের মানুষের কাছে পাউরু টি কিছু না। গ্রামের মানুষের কাছে ওটা স্বপ্নের খাবার। আমাদের গাঁয়ের একটি খুব বুড়ো লোককে চিনতাম। অনেক দিন থেকেই রোগে ভুগছিল। মরণ ঘনিয়ে এসেছে বুঝতে পেরে মেয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘আব্বা, কী খেতে মন চায়?’ ‘আমাকে একটা পাউরু টি খাওয়াতি পারবি?’ জবাব দিলেন বাবা। গ্রাম থেকে রেলস্টেশন সাতাশ মাইল দূরে। পাউরু টি পাওয়া যায় শুধু সেখানেই। পায়ে হেঁটে একজন রওনা হলো পাউরু টি আনতে। পরদিন বাসি পাউরু টি এসে যখন পৌঁছাল বুড়ো তখন পরপারে। একটা পাউরু টির দাম ষাট পয়সা। বাবার চোখ ছলছল করছে। তার কাছে এক টাকাও নেই।

আগেই বলেছি, কার কেস কখন উঠবে বলা যায় না। এ হচ্ছে ‘শেষ পুরোহিত কঙ্কালের পাশা খেলা।’ সাক্ষী-সাবুদ, আসামি সব বসে আছে সকাল থেকে। উকিলরা দু-তিনটা কোর্টে দৌড়াদৌড়ি করছে। আরিচা ঘাটে ফেরি-ধরা টেনশন। কোর্টে কেস উঠল। সত্য-মিথ্যা সব সাক্ষী রেডি। আসামি হাজির। জজ সাহেব অপেক্ষা করছেন। উকিলের দেখা নেই। কিছুক্ষণ দেখে জজ সাহেব সে কেস বাদ দিয়ে আরেকটি ধরলেন। নেক্সট হেয়ারিং ডেট তিন সপ্তাহ পরও পড়তে পারে, দু মাস পরও পড়তে পারে। আসামি আবারও প্রিজনভ্যানে। গন্তব্য কারার ঐ লৌহকপাট। কার গোয়ালে কে দেয় ধুঁয়ো। বাবার কেস ওঠা নিয়ে রাশিয়ান রু লেত খেলা চলে না। পেশকারকে দুশো টাকা দিয়েছি। প্রথমেই যাতে বাবার কেসটা জজ সাহেবের হাতে ধরিয়ে দেয় সে। হেয়ারিং হলে আরও পঞ্চাশ। উকিলকে ধরে এনে বসিয়ে রেখেছি। তিনজন সাক্ষীকে একশো টাকা করে দিতে হয়েছে। ভালো হোটেলে গোস্ত-পরটা খেয়েছে সকালে। কোর্টে এসে চা, পান, সিগারেট। মুহুরিকে বিশ টাকা দিয়ে হাজিরা জমা করে বসে আছি। ওপারের ডাক যদি আসে। দুহাত বুকের সমানে জড়ো করে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছেন বাবা। হাতে বেড়ি, পায়ে বেড়ি, পরনে পাজামা-পাঞ্জাবি। ক্ষুদিরামের খালু। তাকিয়ে আছেন জানালার বাইরে ড্রেনের ধারে কচুগাছের দিকে। মনের জানালা ধরে উঁকি দিয়ে গেছে! পয়সাঅলা মানুষদের চেহারায় যে তেলতেলে ভাব থাকে তার ছিটেফোঁটাও এখন নেই তার ভেতর। উকিল একবার উঠে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘ধন বাবু (বাবার নাম ধনঞ্জয়), ভালো তো?’ বাবা পাত্তাও দিলেন না। তার চোখে সক্রেটিসের উদাসীনতা। পাথরের বাটিতে কখন হেমলক পরিবেশন করা হবে তার অপেক্ষা।

বাবার কেস উঠল ঠিকই তবে হেয়ারিং হলো না। মোটা মোসলেম আসেনি। জাগ দলের জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকায় গেছে। রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত। তার উকিল টাইম প্রেয়ার দিয়েছে। পরের হেয়ারিং ডেট পড়ল তিন সপ্তাহ পর। ছোট্ট টিফিন ক্যারিয়ারে বাবার জন্য ইলিশ মাছ ভাজি, লাউ দিয়ে রান্না মাস কলাইয়ের ডাল পাঠিয়েছিলেন মা। এক জেল পুলিশকে পঞ্চাশ টাকা দিয়ে বললাম টিফিন ক্যারিয়ারটা বাবাকে দিতে। পুলিশ বলল, ‘জেলে গিয়া দিমুআনে।’ শুদ্ধ ভাষায় কথা বলা পুলিশ আজও পেলাম না।

পরদিন দুপুরে খেয়ে খবরের কাগজ হাতে নিয়ে বিছানায় শুয়েছি। বাইরে শুরু হলো বৃষ্টি। কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনা। মা ঘুম ভাঙিয়ে বললেন অমিয় জুয়েলার্স থেকে ফোন এসেছে। চৌধুরী সাহেব সন্ধের সময় দোকানে দেখা করতে বলেছেন। বুড়ির বাসার ঠিকানা পাওয়া গেছে।


রিকশা করে আমাকে সাথে নিয়ে রওনা হলেন চৌধুরী বাবু। কালীঘাট এলাকায় আগে কখনো আসিনি আমি। সরু রাস্তার দুপাশে পুরোনো সব টিনের বাড়ি। অনেকেই ধুনুচি জ্বালিয়ে সন্ধ্যা আরতি দিয়েছে। বাতাসে ধূপধুনোর গন্ধ ম ম করছে। সরু গলির মাথায় ছোট ছোট ইটে গাঁথা আদ্যিকালের বাড়ি। পলেস্তারা খসে ইট বের হয়ে সেই ইট পর্যন্ত ক্ষয়ে গেছে। চারদিকে ভাঙাচোরা ইটের স্তূপ। মানগাছ, কচুগাছের ঝোপ। এর মাঝে দুখানা মাত্র ঘর কোনোরকম টিকে আছে। ছোট জানালায় চটের পর্দা ঝুলছে। ভেতরে কুপি জ্বলছে বলে মনে হলো। এ বাড়িতে কারেন্টের কারবার নেই। সামনেই সরু কাঠের দরজা। বারান্দা-সিঁড়ি এসবের কোনো বালাই নেই। কোনো কালে হয়তো ছিল। ঢোকার সরু দরজাটা পুরোনো ভাঙাচোরা হলেও এর জটিল নকশা দেখে বোঝা যায়, একসময় কত সুন্দর ছিল ওটা। দরজার ওপরে শেকল, মাঝে দুটো কড়া। খুব জোরে কড়া নাড়লেন চৌধুরী সাহেব। বেশির ভাগ মানুষের ধারণা, বুড়োরা কানে কম শোনে। প্রায় সাথে সাথেই মাঝবয়সী শ্যামলা এক ভদ্রলোক দরজা খুললেন। পরনে ধুতি-পাঞ্জাবি, গলায় কাঠের মালা। কামানো মাথার পেছনে ছোট একটা টিকি ঝুলছে। দেখেই বোঝা যায়, মন্দিরের পুরু ত ঠাকুর। ভদ্রলোক বের হচ্ছিলেন বোধ হয়।
‘আজ্ঞে, আপনারা?’ কিছুটা অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করলেন পুরু ত।
‘আমার নাম মন্ময় চৌধুরী। অমিয় জুয়েলার্স থেকে আসছি। আমরা কাদম্বিনী দেবীর কাছে এসেছি।’
‘আমি ওর নাতজামাই। তেনার শরীরটা খারাপ। কী দরকার জানা যাবে?’
‘উনি কিছু টাকা পাবেন। দেওয়ার জন্য এসেছি’, বললাম আমি।
‘আপনারা বসেন। দেখি কী করা যায়?’
ঘরের মেঝে স্যাঁতসেঁতে। নোনা ধরা দেয়াল। পায়া ভাঙা শাল কাঠের চকির ওপর পাটি বিছানো। পুরু ধুলো জমে আছে ওপরে। কড়ি-বর্গা দেওয়া ছাদ থেকে আগের আমলের শেকলে বাঁধা ঝাড়লন্ঠন ঝুলছে। ঝুলকালিতে দেখতে হয়েছে কাকের বাসা। বুড়ি ওটাকে এত দিন বেচে দেয়নি কেন? যেভাবে লোহার শেকল দিয়ে বাঁধা তাতে নামানোর পারিশ্রমিক বিক্রীত মূল্যের চেয়ে বেশি হবে। ঝাড়লন্ঠন বিলুপ্ত না হওয়ার পেছনে ওটাই প্রধান কারণ।

‘ঠাম্মা বাতের ব্যথায় খুব কষ্ট পাচ্ছেন। উনি উঠে আসতে পারবেন না। আপনাকেই ওর কাছে যেতে হবে।’ ফিরে এসে বলল পুরু ত।
পুরু তের পেছন পেছন যে কামরায় এসে ঢুকলাম সেবা প্রকাশনীর বইয়ের ভাষায় সেখানে দারিদ্র্য ‘মুখ ব্যাদান’ করে আছে। বিমূর্ত দারিদ্র্য এখানে মূর্ত। পভার্টি ইজ আ কার্স। অভিশাপ নয়, এখানে পভার্টির গজব নাজিল হয়েছে। জরাজীর্ণ ছোট এক খাটের ওপর চাঁদিছিলা জাজিম। তুলো নারকোলের ছোবড়া এত কালো হয়ে বেরিয়ে পড়েছে যে ওগুলো তেলতেলে হয়ে গেছে। জাজিমের ওপর আঁশ ছেঁড়া শীতলপাটিতে শুয়ে আছে ফ্রানৎজ কাফকার ‘দ্য হাঙ্গার আর্টিস্ট’। স্রেফ হাড়ের ওপর কোঁচকানো চামড়ার জীবন্ত বিভীষিকা। বুড়ির বয়সের গাছ-পাথর নেই। টি এস এলিয়টের ‘দ্য ওয়েস্টল্যান্ড’ কবিতার দ্য সিবিল অভ ক্যুমা। ঘরের সিলিংয়ের নিচে পলিথিন টাঙানো। বৃষ্টি হলে ছাদ থেকে মনে হয় জল পড়ে। দেয়ালের এক কোণ ভেঙে ইট গেঁথে ড্রেনের মতো করা হয়েছে। বুড়ির বাথরু ম। সেখানে এক বালতি পানিতে লাল রঙের প্লাস্টিকের মগ ভাসছে। খাটের পাশে চিলুঞ্চি। কফ, থুতু চিলুঞ্চির ভেতরে যত, বাইরে তার শত গুণ। ঢাকা শহরের ডিআইটি ডাস্টবিন। মনে হলো, ঘরের ভেতরে ভেসে আছে ‘অনাদি কালের বিরহ বেদনা।’ নাকে এসে লাগল গা গুলিয়ে ওঠা তীব্র আঁশটে গন্ধ। হাতল ভাঙা কাঠের চেয়ারে বসলেন মন্ময় চৌধুরী। চেয়ার একটাই। পুরু ত ঠাকুর বুড়ির মাজার কাছে বিছানায় বসেছে। আমি দাঁড়িয়ে।
‘ঠাম্মা, উনার নাম মন্ময় চৌধুরী। আপনার সাথে আলাপ করতে চান।’ শুরু করল পুরু ত।
ছানিপড়া চোখ তুলে মন্ময় চৌধুরীর দিকে তাকালেন বৃদ্ধা। কিছু দেখতে পেয়েছেন বলে মনে হলো না। পকেট থেকে বালা দুটো বের করে বুড়ির দিকে এগিয়ে দিলেন মন্ময়। বললেন,
‘দেখুন তো এগুলো চিনতে পারেন কি না?’
বালা হাতে নিয়ে ছুঁয়ে দেখল বুড়ি। তারপর রিনরিনে অথচ স্পষ্ট করে বলল,
‘চিনতে পেরেছি, বাবা। সারা জীবন ওগুলো নাড়াচাড়া করেছি। এর প্রতিটি ঘাট আমার মুখস্থ।’
‘ওগুলো কে দিয়েছিল আপনাকে?’
‘কেউ দেয়নি। মায়ের কাছে ছিল। মা মারা যাওয়ার আগে দিয়ে গেছেন। মায়ের দেওয়া জিনিস শত কষ্টের ভেতরও বাঁচিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো কোথায়?’
‘আপনার মা ওগুলো পেলেন কোথায়, সে ব্যাপারে কিছু জানেন?’
‘আমার বাবা তাকে দিয়েছিলেন। সে অনেক কাল আগের কথা, বাবা। তখন এই শহরে অনেক সাহেব ব্যবসায়ী ছিল। এদের একজনের সাথে বাবার খাতির ছিল খুব। এই খুলনা শহরের নাম ছিল রোয়ালে বদেরপুর। রূপসা নদীর ধারে অনেক কাল আগের একটা মন্দির আছে। ওটা খুল্লনা দেবীর। ওর নাম থেকেই এই এলাকার নাম খুলনা। বাবা ওই মন্দিরের সেবায়েত ছিলেন। পরে এই বাড়িতে চলে আসেন। এই বাড়িটা আগে থেকেই ছিল। এর মালিক ছিল নানাভাই ধূনজী। কলকাতার ব্যবসায়ী। বিখ্যাত ধনী। আমার জন্ম এ বাড়িতেই। তখন আমাদের অবস্থা ভালো ছিল। মন্দিরে বাবা আর ফিরে যাননি। বাকি জীবন তন্ত্র সাধনা করে কাটিয়েছেন। ওই সাহেব প্রায়ই আমাদের বাড়িতে আসতেন। দক্ষিণে আলাদা একটা ঘর ছিল। আমরা বলতাম কালীমন্দির। বাবার সাথে ওখানেই দেখা করতেন সাহেব।’
‘সাহেবের নামটা বলতে পারবেন?’ বুড়িকে থামিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন মন্ময়।
আসল প্রশ্নের উত্তরের ধারেকাছেও বুড়ি এখনো আসেনি। হাজার এক রজনী গল্পের ভূমিকা একে দিয়ে লেখালে ভালো হতো।
‘উনাকে সবাই ঠাকরে সাহেব বলে ডাকত। লাল টকটকে চেহারা। সারা গায়ে ভালুকের মতো লোম। খুব শক্তিমান পুরুষ। দেখলে ভয় হয়। এ বাড়িতে আসার কিছুদিন আগে বাবার ক্যাশ বাক্সের ভেতর মা ও দুটো দেখতে পান। ভীষণ অবাক হন ওগুলো দেখে। সোনার বালা নিজের কাছে কেন রাখবেন বাবা? গয়না আগলে বসে আছে এ-জাতীয় পুরু ষ বিরল। বাবা ওই গোত্রের লোক ছিলেন না মোটেও। এ ছাড়া মা’র এ-ও মনে হলো, ওগুলো আগে কোথাও দেখেছেন। আগের দিনে অনেকেই মূল্যবান জিনিস, সোনাদানা, টাকাপয়সা মন্দিরে জমা রাখত। কেউ কেউ প্রতিমাকে অনেক কিছু দানও করত। মন্দিরে রাধা-কৃষ্ণের জোড় মূর্তির পেছনে ছোট্ট একটা ঘরে ওগুলো জমা করে রাখা হতো। বছরে একবার বের করে হিসাব মেলানো হতো, ঝাড়পোঁছ করা হতো। এসব কাজে মাকেও সাহায্য করতে হয়েছে। সে সময়ই মা বালাগুলো দেখে থাকবেন। বাবাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলেন মা। বাবা বলেছিলেন, কয়েক দিনের জন্য বালাগুলো নিজের কাছে রেখেছেন। বিশেষ দরকার। পরে ফিরিয়ে দেবেন। ফিরিয়ে আর দেননি। আষাঢ় মাসে অমাবস্যার এক রাতে কালীমন্দিরে সাধনায় বসেন বাবা। রাতে তার কাছে মন্দিরে যাওয়া মানা ছিল। সকালে মা গিয়ে দেখেন বাবা মরে পড়ে আছেন। সবার ধারণা, সন্ন্যাস রোগে মারা গিয়েছিলেন বাবা। কিন্তু মা বলতেন, অপঘাতে মৃত্যু হয় তাঁর।’
‘নানাভাই ধূনজীর সাথে কখনো দেখা হয়েছে আপনার?’
‘ঠাকরে সাহেবের সাথে দু-একবার এখানে এসেছিলেন। বাবার সাথে মন্দিরে দেখা করতেন। লম্বা চুল-দাড়িঅলা খুব মোটা লোক। ধবধবে ফরসা গায়ের রং।’
‘আলাপ করে অনেক ভালো লাগল। আশা করি, শীঘ্রি ভালো হয়ে উঠবেন।’
‘আমার আর ভালো-মন্দ, বাবা। ভগবানের ডাক আসলে বাঁচি। যে অবস্থায় আছি তা মরারও অধম।’

আমি এগিয়ে গিয়ে বুড়ির একটি হাত ধরলাম। তাকে দুহাজার টাকা দিলাম। বুড়ি জিজ্ঞেস করল,
‘টাকা কিসের জন্য, বাবা?’
‘আপনার ওই বালা দুটো, যার সাথে এতক্ষণ কথা বললেন, তিনি কিনে নিয়েছেন। আমার বাবার কাছে ওগুলো বন্ধক রেখেছিলেন, মনে আছে? পুরো টাকাটা তো নেননি তখন। এখন কিছু রাখেন।’
বুড়ি খুশি হলো কি না বুঝতে পারলাম না। তবে নাতজামাই যে খুশি হয়েছে, সেটা বোঝা গেল। ফেরার সময় চৌধুরী এবং আমাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাল। বলল,
‘দরকার হলে আবারও আসবেন। আপনাদের সাথে পরিচিত হয়ে খুশি হলাম।’ বৃক্ষ তোমার নাম কী, ফলে পরিচয়!

(চলবে)

লেখকের ফেসবুক আইডি

http://www.facebook.com/muhammad.toimoor
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×