somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিও অলিম্পিক-২০১৬ এবং বাংলাদেশের প্রত্যাশা

১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশে প্রতিদিন কয়েক হাজার শিশু জন্মায় কিন্তু একজন অলিম্পিক গোল্ড মেডেলিস্টও জন্মায় না। কথাটা শুনতে অদ্ভুত লাগছে জানি। কোন শিশুই অলিম্পিকের জলপাই পাতার ছবিওয়ালা সোনার পদকটা গলায় দিয়ে এই ধরার ধুলায় আসে না। প্রত্যেকটা অলিম্পিয়ানকে নিবিড় যত্নে তৈরী করা হয়। বিশাল সময় আর প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করা হয়। এরপর আসে মোটিভেশানের প্রশ্ন। একজন অলিম্পিয়ানকে যতভাবে সম্ভব মোটিভেট করবার পরেই পাঠানো হয় অলিম্পিকের পদক লড়াইয়ে।

এবার আসি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে। অনেকগুলো দেশ কোনদিন অলিম্পিক পদক পায়নি। সেই দেশ গুলোর মধ্যে বাংলাদেশের জনসংখ্যা সর্বোচ্চ! ১৭০-১৮০ মিলিয়ন লোকের মধ্য থেকে আমরা গুতিয়ে গাতিয়ে ৪ বছরে ৭ জন অলিম্পিয়ান বের করতে পেরেছে। এরমধ্যে ৬ জন ওয়াইল্ড কার্ডে খেলতে যাচ্ছে! সিদ্দিকুর ইতিহাসের প্রথম বাংলাদেশী অলিম্পিয়ান যে ওয়াইল্ড কার্ড ছাড়া সরাসরি অলিম্পিক খেলতে গিয়েছে! কি ভয়ঙ্কর ব্যাপার!

এই ব্যাপারটার সাথে ডেডিকেশানের ব্যপক সম্পর্ক আছে। শুধু অ্যাথলেটের ডেডিকেশান না। অ্যাথলেটদের সাথে ফেডারেশান, অলিম্পিক এসোসিয়াশান এবং রাষ্ট্র অর্থ্যাৎ পুরো সিস্টেমের ডেডিকেশান জরুরী। আমরা যদি বেইজিং অলিম্পিকের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো, নিজ মাটিতে অলিম্পিকে সেরা হবার জন্য চৈনিকদের ডেডিকেশান লেভেল। তাঁরা কিই না করেছে প্রতিটা ডিসিপ্লিনে পদক জেতার জন্য। চীনে ৫টা ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় আছে। আছে কয়েকহাজার আঞ্চলিক ক্রীড়া কেন্দ্র। একতা শিশুর ৪-৫ বছর বয়সেই তাঁদের সেই ক্রীড়া কেন্দ্রগুলিতে পাঠানো হয়। এরপর শুরু হয় তাঁদের এক অদ্ভূত জীবম। ধরেন টার্গেট করা হলো আগামী ১২ বছর পর এই বাচ্চাটাকে সোনা জেতানো হবে! এবং সেই আবর্তেই তাঁর জীবন চলতে থাকে তখন থেকে! তাঁরা সেই বারো বছরের প্রথম ৪-৫ বছর বেসিক শিখবে। পরের ৩-৪ বছর চলবে নিজের সাথে নিজের লড়াই। নিজেকে ছাপিয়ে যাবার চেষ্টা চলবে এই সময়ে। এর পরের ৪-৫ বছর তাঁকে সুযোগ দেয়া হবে অসংখ্য টূর্নামেন্ট খেলে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আর পদক অর্জনের। এর ভেতর সেই অ্যাথলেট বিভিন্ন আঞ্চলিক টূর্নামেন্ট খেলবে। খেলবে এশিয়া কাপ। সংস্লিষ্ট ইভেন্টের অসংখ্য আন্তর্জাতিক আসর। সাবেক বৃটিশ কলোনি হলে কমনওয়েলথে নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করবে। এবং নিজেকে ইস্পাতের মতো দৃঢ় করেই সেই অলিম্পিয়ান হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করবে।

এরপর সে যাবে অলিম্পিকে। অভিজ্ঞতা অর্জন করতে না। বিপুল অভিজ্ঞতা নিয়ে। সেখানে সে যদি কোন কিছু অর্জন করতে যায়, তাঁর নাম গ্লোরি। কোন অভিজ্ঞতা টভিজ্ঞতা না। কারণ অলিম্পিক সম্মান অর্জনের সর্বোচ্চ জায়গা। অভিজ্ঞতা অর্জনের না।

এবার আমাদের দেশের ব্যাপারে আসি। যদি কোন সন্তান ছোট থেকেই খেলাধুলায় আগ্রহী হয়ে উঠে তবে তাঁকে ছোট থেকেই হাজারো চাপের সম্মুখীন হতে হয়। অধিকাংশের স্বপ্ন অংকুরেই ঝড়ে যায়। কারণ অ্যাথলেট হবার চেয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়াটা বেশী লাভদায়ক। যারা টিকে থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁরা অতি দরিদ্র পরিবারের সদস্য। তাঁদের বাবা-মায়েরা তাঁদের কোন গ্লোরির আশায় খেলতে পাঠান না। তাঁরা ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার অন্যমতি দেন শুধুমাত্র সার্ভিসেস দলগুলোতে একটা চাকরীর জন্য! তিক্ত হলেও এটা সত্য!

আমাদের অ্যাথলেটরা সারা বছর বাসায় বসে থাকেন। বছরে ১টা টূর্নামেন্ট হয় ডমেস্টিক। তাও আবার প্রতি বছর না। মন্দের ভালো হিসেবে আবারোও বাংলাদেশ গেমস শুরু হয়েছে। কোন আন্তর্জাতিক টূর্নামেন্টে যদি যাবার সুযোগ হয়েই যায় তবে তাঁর সামান্য কিছু আগে ফেডারেশনগুলো ক্যাম্প শুরু করে। ক্যাম্পগুলোর অবস্থা সবাই জানি আমরা। এই নিয়ে একতা কথা বলবো না বলতে লজ্জা লাগে! টূর্নামেন্ট না খেলতে পারলে র্যাএঙ্কিয়ে উন্নতি হবার কোন সুযোগ আছে? অতএব ওয়াইল্ড কার্ডই ভরসা। :)

দিনের পর দিন টূর্নামেন্ট না খেলা। একেবারের অভিজ্ঞতা ছাড়া অলিম্পিক্স ভিলেজে যাওয়া। সোজা হয়ে হাটতে না পারা, অপুষ্টিতে ভোগা অ্যাথলেটরা আর যাই হোক আপনাকে অলিম্পিকে পদক এনে দিতে পারবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×