somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ভাঙা তরী
ভুলেও ভাবা যাবে না আমি কোন রাজনীতির সাথে জড়িত! আমি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক মুক্ত আগাছা। ছোটবেলা থেকেই বাবা আর মায়ের উপর নির্ভর করে চলছি। এখনও চলছি তাদের পিছু-পিছু...জানিনা কবে আমার এই পিছু চলা বন্ধ হবে!!!

অবশেষে চাকুরিটা চলেই গেল..............

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকটা দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। রাত-দিন ছুটাছুটি করতে হয়েছে এপাড়-ওপার। মজবুত খুঁটিতে ভর করে দাঁড়াতে হয়েছে। এতকিছু তাও আবার লিখিত পরীক্ষা, ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরের অবস্থা। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলাম আমরা ২৭ জন। সেখান থেকে ভাইভা বোর্ডে নির্বাচিত হলাম আমরা ৩জন। সেই ৩ জনের একজন আমি। চাকুরিটা হতো না, হয়েছে কেবল মামার জোরে। মামু না থাকলে যে আজকাল ভাইগ....নাদের মাথা গুজবার সুযোগ হয়ে উঠে না তা আমি ওইদিন হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। যাক স্মরণীয় এক স্নায়ুযুদ্ধ শেষ করে জয়েন করলাম। দিন ভালই কাটছিলো, চাকুরি জীবনের প্রথম মুর্হূতগুলোর সাথে বেশ ভালই মানিয়ে নিচ্ছিলাম। কিছুদিন পরেই আমার চাকুরী জীবনে নেমে আসল ভয়াবহতা, দেখা দিল খড়া। দিনকে দিন বিমর্ষ হয়ে পড়ছি। কি করব তাই বুঝে উঠতে পারছি না। চাকুরী জীবনে অন্ধকার ছায়া নেমে আসার কারণ হলো কোম্পানীর জেনারেল ম্যানেজার। তার পদত্যাগ। ও আচ্ছা..........বলাই হল না, আমার চাকুরিটা সরকারি নয়, বেসরকারি একটি চাকুরী। দেশের প্রতিষ্ঠিত একটি কোম্পানী এটি। অডিট অফিসার পদে চাকুরিতে জয়েন করেছিলাম। ওই স্যারের চলে যাওয়ার পরপর কোম্পানীর ভাল-মন্দের দেখভালের দায়িত্ব পরল ............. স্যারের উপর। তার হাতে হঠাৎ করে ওইদিন দেখলাম আলাদিনের চেরাগ! সকাল সকাল অফিসে গিয়েই দেখি তিনি আলাদিনের চেরাগ হাতে নিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন, এখন আমি যা চাইবো তাই পাবো। আমি নির্দেশ দিলেই সব হয়ে যাবে।
ওই আলাদিনের চেরাগের সামনে হয়তবা তিনি আমার চেহারা দেখতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন, তাই তো চাকুরি..........টা গেল চলে। আফসোস............ আমার। হঠাৎ আলাদিনের চেরাগ মানুষের জীবনকে আলোকিত করার পরিবর্তে যে অন্ধকার ডেকে আনবে তা আমি কল্পনাও করতে পারলাম না। সেটি আজ কল্পনা নয়, বাস্তবেই এসে ধরা দিল। সেই আলাদিনের চেরাগ আমার চাকুরিটাকে বিধ্বস্ত করলো, আঘাত করলো, ধুর........ ধুর করে তাড়িয়ে দিল। চাকুরিটা আর থাকলো না আমার। এই চিন্তায় বিভোর হয়ে বসে রইলাম লেকের পাড়ে। আর ভাবতে থাকলাম এখন কি করবো আমি??? সরকারি চাকুরি তো নয় এটা, বেসরকারি চাকুরি সেটা পাওয়ার জন্যও ধর্ণা দিতে হয়েছে মানুষের দ্বারে দ্বারে। আর অফিসে বসদের মধ্যে রেষারেষি, নোংরা রাজনীতির প্রভাব কায়েমের কারণে আমাকে আজ চাকুরি থেকে অব্যাহতি নিতে হয়েছে। আমার জায়গায় নাকি .........স্যারের কোন দূর সর্ম্পকের আত্মীয়কে জয়েন করাবেন। অনেক দিন ধরে ইচ্ছে তার আমার স্থলাভিষিক্ত করার। কিন্তু জিএম স্যারের জন্য পারছিলেন না। যেই না জিএম স্যার পদত্যাগ করলেন সাথে সাথেই আমাকেও চাকুরি থেকে বরখাস্থ করা হল। অজুহাত দেখানো হল আমি নাকি এতটা এক্সপার্ট না। ‍"আনএক্সপার্ট" শব্দটা যদিও অফিসের অন্যান্য কলিগদের মুখে শুনিনি কখনো, সেটা কেবল তার মুখেই শুনেছি। আসলে তার টার্গেটতো ওইযে তার দূরের আত্মীয়কে চাকুরির ব্যবস্থা করানো। যাক ওসব কথা ছাড়ি। ভাবনাগুলোর অবসান ঘটিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে ছুটে যেতে লাগলাম। একসময় বাসায় পৌঁছে যে কখন ঘুমিয়ে পড়লাম, টেরই পেলাম না। ঘুম থেকে উঠেই লিখতে বসলাম।
সরকারি চাকুরি তো নয়, বেসরকারি চাকুরি। প্রাইভেট কোম্পানি। সেখানে রাজনীতির প্রভাব। সেখানেও গ্রুপিং। সেখানেও স্বজন-প্রীতি। সরকারি চাকুরির আশায় আজ আমার মত বহু ভাই-বোন ছুটাছুটি করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। পায়ের স্যান্ডেল ক্ষয় করে যে কখন নতুন জুতো নিয়েছেন সেটাও তাদের মাথায় নেই। সরকারি চাকুরি না পেয়ে নিরুপায় হয়ে অবশেষে প্রাইভেট একটা কোম্পানিতে জয়েন করলাম। হালকা ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকবো-এই আশা নিয়ে নতুন স্বপ্নের বীজ বুকের মধ্যে বপন করলাম, আর সেটা অঙ্কুরিত হওয়ার আগেই বিনষ্ট হয়ে যাবে, সেটা যে আমি এখন মেনে নিতে পারছি না। আজ আমি নিজেকে যে আর পোষ মানাতে পারছি না। মনকে কি বলে সান্ত্বনা দিবো, সেটাই খুঁজে পাচ্ছি না। কেন এমন হল????

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৩
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×