somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সংসদ নির্বাচনে যে সব কারণে প্রার্থীতা বাতিল হতে পারে

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতা নিয়ে কথা চলছে। তবে এক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা বা কারণ আপনাকে জানতে হবে। তা হলোঃ
১। সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হতে আগ্রহীকে বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে। যার বয়স হবে অন্তত ২৫ বছর। কোন ভোটার এলাকার ভোটার হতে হবে।
২। এদিকে প্রার্থীর অযোগ্যতা হিসেবে কারণের মধ্যে যদি কেউ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন বা হারান, কোনো উপযুক্ত আদালতের বিচারে অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হন ও দেউলিয়া ঘোষিত হন এবং দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় থেকে অব্যহতি লাভ না করে থাকেন, তবে তিনি সংসদ সদস্য প্রার্থী পদে নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হবেন।
৩। এছাড়া যদি কোনো ব্যক্তি কোনো ফৌজদারি বা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং মুক্তি পাওয়ার পর যদি পাঁচ বছর সময় অতিবাহিত না হয় তাহলে তিনি নির্বাচনের অযোগ্য হবেন। ( তবে ‘দণ্ডিত যদি উচ্চ আদালতে আবেদন করে এবং আবেদনের যুক্তি দেখে আদালত সন্তুষ্টি সাপেক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিলের অনুমতি দেন, সে ক্ষেত্রে [দণ্ডিত] নির্বাচনে অংশ নিতে পারে)
৪। কেউ যদি প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে সার্বক্ষণিক অধিষ্ঠিত থাকেন তিনিও নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
৫। বিদেশি কোনো রাষ্ট্র থেকে অনুদান বা তহবিল গ্রহণ করে এ ধরনের বেসরকারি সংস্থার প্রধান কার্যনির্বাহী পদে থেকে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণ করেন বা পদচ্যূতির পর এক বছর অতিবাহিত না হয় তাহলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন।
৬। সরকারি বা আধা সরকারি দফতর, কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সমবায় সমিতি বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের চাকরি থেকে নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি, অসদাচরণ ইত্যাদি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে চাকরিচ্যুত, অপসারিত হলে বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পাঁচ বছর অতিবাহিত না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন।
৭। কোন সমবায় সমিতি এবং সরকারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ছাড়া সংশ্নিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় সরকারকে পণ্য সরবরাহ করার জন্য বা সরকার গৃহীত কোনো চুক্তির বাস্তবায়ন বা সেবা কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য কোনো ব্যক্তি তার নিজের নামে বা তার ট্রাস্টি হিসেবে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নামে বা তার সুবিধার্থে বা তার উপলক্ষে কোনো হিন্দু যৌথ পরিবারের সদস্য হিসেবে তার কোনো অংশ বা স্বার্থ আছে এমন চুক্তি করেন তবে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।
৮। অন্যদিকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনও কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের থেকে গৃহীত ঋণ মেয়াদত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ী রাখলে নির্বাচন করা যাবে না। এক্ষেত্রে গৃহনির্মাণ ও ক্ষুদ্র কৃষিঋণ অন্তর্ভুক্ত হবে না।
৯। এমন কোনো কোম্পানির পরিচালক বা ফার্মের অংশীদাররা যারা কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত কোনো ঋণ বা তার কোনো কিস্তি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখে খেলাপি রাখেন তবে এ ধরনের ব্যক্তিও নির্বাচনের অযোগ্য হিসেবে গণ্য হবেন।
১০। দণ্ডবিধির ১৮৯, ১৯২, ২১৩, ৩৩২, ৩৩৩ ও ৩৫৩ ধারার অধীনে নির্বাচনের পাঁচ বছর আগে যেকোনো সময়ে কোনো ব্যক্তি সাজাপ্রাপ্ত হলে বা আদালত ঘোষিত ফেরারি আসামি হলে এবং কোনো আদালত বা ট্রাইব্যুনালের বিচারে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত হলে তিনিও নির্বাচনের যোগ্যতা হারাবেন।
এ সংক্রান্তে সংবিধানের বিধানঃ
সংসদে নির্বাচিত হইবার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা ৬৬। (১) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হইলে এবং তাঁহার বয়স পঁচিশ বৎসর পূর্ণ হইলে এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত বিধান-সাপেক্ষে তিনি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন। 
(২) কোন ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি 
(ক) কোন উপযুক্ত আদালত তাঁহাকে অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা করেন; 
(খ) তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন; 
(গ) তিনি কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোন বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন; 
(ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অনূ্যন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে; 
১[ ***]
২[ (ঙ) তিনি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন যে কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত হইয়া থাকেন;
(চ) আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করিতেছে না, এমন পদ ব্যতীত তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন; অথবা]
(ছ) তিনি কোন আইনের দ্বারা বা অধীন অনুরূপ নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হন। 
৩[ (২ক) এই অনুচ্ছেদের (২) দফার (গ) উপ-দফা তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হইয়া কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করিলে এবং পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তি-
(ক) দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে, বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করিলে; কিংবা
(খ) অন্য ক্ষেত্রে, পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করিলে- 
এই অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য সাধনকল্পে তিনি বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন না।] 
৪[ (৩) এই অনুচেছদের উদ্দেশ্য সাধনকল্পে কোন ব্যক্তি কেবল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, ডেপুটি স্পীকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী হইবার কারণে প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত বলিয়া গণ্য হইবেন না।] 
(৪) কোন সংসদ-সদস্য তাঁহার নির্বাচনের পর এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত অযোগ্যতার অধীন হইয়াছেন কিনা কিংবা এই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুসারে কোন সংসদ-সদস্যের আসন শূন্য হইবে কিনা, সে সম্পর্কে কোন বিতর্ক দেখা দিলে শুনানী ও নিষ্পত্তির জন্য প্রশ্নটি নির্বাচন কমিশনের নিকট প্রেরিত হইবে এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে। 
(৫) এই অনুচ্ছেদের (৪) দফার বিধানাবলী যাহাতে পূর্ণ কার্যকরতা লাভ করিতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতাদানের জন্য সংসদ যেরূপ প্রয়োজন বোধ করিবেন, আইনের দ্বারা সেইরূপ বিধান করিতে পারিবেন।

- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)

লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু" এবং 'অসমাপ্ত জবানবন্দী', মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:০১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×