মানব জীবনে অন্যান্য যেকোন উপাদানের চেয়ে [গাঢ়] যৌনতাকে [/গাঢ়] বেশির ভাগ মানুষ অযৌক্তিকভাবে দেখে থাকে। বুকের ভেতর এটা চেপে রেখে নিজেদের বুজর্গ মানুষ প্রমাণ করায় সচেষ্ট তারা। অথচ তারা সুযোগ পায় না বলেই সাধু সন্ন্যাসী সাজায় মনোনিবেশিত হন। যদিও বর্তমান সময়ে যৌনতার বিষয়টি পরিস্কার হয়ে আসছে। আধুনিক জীবন ব্যবস্থা এমনভাবে কাজ করছে যাতে যৌনতার প্রতি আচরন ও মনোভাব পরিবতর্ীত হয়ে যাচ্ছে। মানব সমাজ সম্বন্ধে যতদূর জানা যায় তার ভিত্তিতে বলা যায় এমন কোন সমাজ গঠন একেবারে অসম্ভব যেখানে বিবাহের বাইরে যৌন মিলন ঘটবে না। এর জন্য যে সব শর্ত একান্ত প্রয়োজন তা বর্তমান জীবনে কোনভাবেই মেনে চলা সম্ভব নয়। কারন, কর্মের কারনেই হোক কিংবা যেকোন কারনেই হোক মানব/মানবীকে বাড়ির বাহিরে বের হতে হবেই। বাড়ির বাইরে বের হলে মানব/মানবীর পক্ষে যৌন আবেদনে সাড়া না দেয়া অসম্ভব। এক পক্ষ সাড়া না দিক; অপর পক্ষতো এর রসদ জোগাচ্ছে! কোনো কোনো সময় জোর করেই এসব ঘটাচ্ছে। এমনকি ছোট বাচ্চারাও বাদ যাচ্ছেনা। কেউ কেউ বলবেন, নিজেকে পর্দার ভেতর ঢেকে বাহিরে বের হবার মাধ্যমে এটাকে রোধ করা যায়। মানতে পারলাম না। যারা পর্দার বাহিরে রয়েছেন, তাদের দেখে যিনি পর্দার আড়ালে ঢেকে রয়েছেন তার ভেতরে কতটুকু যৌন আবেদন ঢুকে যাচ্ছে সেটারও মাপঝোক করা উচিৎ। নয় কি? পর্দার ভেতরে থেকে একটা হ্যান্ডসাম ছেলে দেখে একজন নারী মনে মনে অনেক কিছু কল্পনা করতে পারেন... এই কল্পনা এবং এর পরবতর্ী সময়ের কর্মকান্ড/শীথিলতা যে কাউকেই পরকিয়া কিংবা অবৈধ যৌন কর্মকান্ডে প্রভাবিত করে। এসবই প্রমাণ করে বর্তমান সময়ে বসে রক্ষনশীল সমাজের কল্পনা করা দূরহ ব্যপার। যৌনতাকে আড়াল না করার পক্ষপাতি আমি। কারন, নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানবকুলের চিরন্তন আকর্ষন বিদ্যমান। আমার মতে ছোট ছেলে মেয়েদের সকল প্রশ্নের জবাব দেয়া প্রতিটি অভিভাবকদের উচিৎ। অভিভাবকদের উচিৎ সন্তানদের প্রশ্নের সময় উপযোগী উত্তর দিয়ে তাদের প্রগতিশীল করা। যৌনতাকে আড়াল করে এর প্রতি তাদের আকর্ষন বাড়ানো উচিৎ না। দেখা গেছে, যারা রক্ষনশীল পরিবারের সন্তান তাদের ভেতর যৌন কর্মকান্ডের প্রভাব সবচে' বেশি।
আমি যৌনতাকে অর্থের মাপকাঠিতে মাপা উচিৎ বলে মনে করিনা। অর্থনৈতিক দূষন থেকে যৌনতাকে মুক্ত করতে সম্ভবপর সব কাজই করা উচিৎ। অর্থের বিনিময় যৌন সুখ বিকিকিনি'র বিপক্ষে আমি। যারা করছে, তাদের পুনবার্সন করা উচিৎ। নগরের একটা নির্দিষ্ট কোনায় এ সুখ অর্থের বিনিময়ে বিলি করা হয় জানলে কারো পক্ষেই অনৈতিক কিছু করা অসম্ভব না।
যৌনতাকে সহজ চোখে দেখা উচিৎ। এর সম্বন্ধে ভ্রান্তিকর কুসংস্কার উচ্ছেদ করা উচিৎ। এটা সম্ভব হলে, দেশে কিছু শব্দের বিলুপ্তি ঘটবে; ধর্ষন, শ্লিতহানি, শারিরীক হয়রানী, শিশু নির্যাতন জাতীয় শব্দ ছাড়াও আরো বেশ কিছু শব্দের বিলুপ্তি হবে বলে আমার বিশ্বাস। সহজ স্বাভাবিক জীবন যাপনে যৌনতাও একটা অংশ। এটাকে স্বাভাবিক মাপকাঠিতে মাপঝোঁক করলে, সমাজে এতটা বিশৃঙ্খলা হবার কথা না।
[গাঢ়] পরিশেষে, আমার এসব অকপট কথা কারো কাছে অনৈতিক ঠেকতে পারে। কিন্তু মানব চরিত্রের গভীর মূলে যৌনতা রয়েছে। যৌনতা ছাড়া মানবের বিস্তার কল্পনাতীত এবং আমি এটুকু অন্তত জানি, যৌনতা সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারনা পোষন করি বিধায়, বিপরীত লিঙ্গ আমার দ্বারা অনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত। [/গাঢ়]
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০