somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টিপাইমুখ বাঁধ (নাকি ব্যারেজ?) এর উদ্দেশ্য ও প্রক্রিয়া...... এর প্রভাব .........

১৯ শে জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৫:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

টিপাইমুখ বাঁধ নিয়া কিছু ব্লগারের বেহুদা প্যাঁচাল ও প্রাপ্ত তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন না করে বিষয়টিকে পেঁচিয়ে পাঠকদের বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টার কারনে আমার এই পোস্ট।

টিপাইমুখের যে বিষয় গুলো ইতমধ্যে অনেকেই জেনেছেন তা হল,
১. বিদ্যুৎ উৎপাদন
২. শুষ্ক মওসুমে সেচের ব্যবস্থা

কিন্তু বিষয় গুলো বাস্তবে ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় কাজ করে এবং এতে বর্তমান অবস্থায় বাংলাদেশের কতটুকু লাভ/ক্ষতি সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার চেষ্টা করার দরকার। ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ নদী গুলোর বর্তমান অবস্থা,
১. যৌথ নদী ৫৪ টি
২. ভারত ইতমধ্যেই তার নিজস্ব এলাকায় যৌথ নদী গুলোর প্রায় সব গুলোতেই এক বা একাধিক বাঁধ/ব্যারেজ নির্মান করেছে। এখানে দেখুন (৫:৩০)
৩. এসব বাঁধ/ব্যারেজের ফল সরূপ ভাটি এলাকায় (বাংলাদেশ) প্রায় ৩০টি নদী বা শাখা নদী (সংবাদপত্রের ভাষ্য অনুযায়ী) তার নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে। আর নাব্যতা হারাতে বসার কারনে আমাদের নদী খেকো ভূমিদূস্যরা (নদী চোরেরা!!) নদীর জায়গা বাঁধ দিয়ে দখল করে এই প্রক্রিয়াটি তরান্বিত করছে!
৪. এক ফারাক্কার কারনেই পদ্মা নদীর পানি প্রবাহ ব্যাপক কমে যাওয়ায় এর অনেক শাখা/উপ নদী তার নাব্যতা হারিয়ে খালে পরিনত হয়েছে ও বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমান্চ্ঞলের পরিবেশ বিপর্যয় ঘটেছে।

ভারতের লক্ষ্য,
১. ২০২৫ সাল নাগাদ ৮ লক্ষ্ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন।
২. এ লক্ষ্যে যথাসম্ভব বাঁধ/ব্যারেজ স্থাপন। ইতমধ্যেই ভারত ৯০ এর অধিক বাঁধ/ব্যারেজ (নেপাল/ভুটান সহ) নির্মান করেছে এবং আরো ৩৯টি নির্মানাধীন।
৩. ভারত এখনই এসব যৌথ নদীর প্রবাহিত পানির ৫৮% ভাগই সরিয়ে নিচ্ছে এবং লক্ষ্য পূরনের জন্য আরও ২৮% ভাগ অর্থাৎ মোট ৮৬% ভাগ পানি তারা সরিয়ে নিতে চাচ্ছে। (ওয়ার্লড ব্যাংক কর্তৃক ভারতের উপর ২০০৮ এ প্রকাশিত একটি রিপোর্ট)

যৌথ নদী বিষয়ে ভারতের সাথে অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র গুলোর অবস্থা,
১. নেপাল/ভুটান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে ভারতের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তাদের যৌথ নদীগুলোর উপর নির্মিত বাঁধ/ব্যারেজ গুলোর চুক্তি একপেশে। তাছাড়া উজানের দেশ হওয়ায় পানির সল্পতা নিয়ে আমাদের মত সমস্যা তাদের নেই।
২. পাকিস্তান নিউক্লয়ার পাওয়ারধারী হওয়ায় এই দুই দেশের মধ্যে চুক্তি গুলো একপেশে নয় এবং এই চুক্তি/সমঝোতা গুলো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পরিবর্তে প্রাশাসনিক ও বিশেষজ্ঞদের দ্বারা নির্ধারিত হয়। প্রয়োজনে তৃতীয় পক্ষের সাথে আলোচনার সুযোগ চুক্তি গুলোতে আছে।

কিন্তু এই লক্ষ্য পূরনে বাধা হচ্ছে বাঁধ/ব্যারেজ তৈরি করে ভারত সর্বোচ্চ ৪ লক্ষ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে যা লক্ষ্যের অর্ধেক। তাছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনজনিত কারন ছাড়াও সেচ ও প্রাকৃতিক কারনেই এসব সন্চ্ঞিত পানির বড় অংশই স্বাভাবিক প্রবাহ পথ থেকে সরে যাবে। এমনকি নির্মানের কার্যাদেশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে এটাকে ব্যারেজ বলা হচ্ছে।

আর এই বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া সবসময় মওসুমের সাথে তাল মিলিয়ে চলবে অর্থাৎ শুষ্ক মওসুম জুড়ে সর্বদাই পানি প্রত্যাহার হবে এবং শুধুমাত্র বর্ষা মওসুমেই পানি ধীরে ধীরে সন্চ্ঞিত হবে ব্যাপারটা মোটেই সেরকম নয় এবং বিজ্ঞানসম্মতও নয় (যদিও কিছু ব্লগার বিষয়টিকে অনেকটা এভাবেই উপস্থাপনের চেষ্টা করেছিলেন)। যদি তাই হত তাহলে আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে ভারতকে শুধু সমর্থন নয় বরং এধরনের বাঁধ নির্মান ও ব্যবহারে যৌথ কমিশন গঠন করা হোক!

যেহেতু বাংলাদেশ এসব নদী গুলোর উপর নির্ভরশীল (প্রাকৃতিক হিস্যা) এবং ভারতও এ প্রক্রিয়ায় তার লক্ষ্য পূরনে সমর্থ হচ্ছে না তাই ক্রমাগত এ ধরনের বাঁধ নির্মান ও এ সংক্রান্ত অসচ্ছ তথ্য প্রদানের যৌক্তিকতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ সামরিক/অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ভারত অপেক্ষা অনেক দূর্বল হলেও ভূমিগত অবস্থান, ব্যাপক জনশক্তি ও আন্তর্জাতিক মেরুকরণে ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্ট। তাই সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার পাশাপাশি এধরনের বাঁধ/ব্যারেজের ক্রমাগত নির্মানের না বলা উদ্দেশ্য "বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রন" ছাড়া আর কিইবা হতে পারে।

এক্ষেত্রে আমাদের করনীয় হচ্ছে টিপাইমুখের এই নেগেটিভ তথ্য গুলো নিয়ে অন্যদের সাথে বেশি বেশি শেয়ার করা ও জোর জনমত তৈরিতে সহযোগিতার করা এবং এটাকে আন্দোলনে পরিনত করা।

বি: দ্র: দ্রুত শেষ করার কারনে কিছু ভুল ত্রুটির জন্য দু:খিত।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×