আজকে একটা খবর শুনেই প্রথম আলো পড়তে বাধ্য হইলাম, সেনাবাহিনী নাকি একটা প্রতিবেদন সংসদীয় কমিটিতে জমা দিছে।
তাতে বলা হচ্ছে বেসামরিক ও কর্পোরেট পেশায় বেতন-ভাতা বেশি হওয়ায় মেধাবীরা সেনাবাহিনীতে যোগদানে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। তাই বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা (!) নিশ্চিত করে সামরিক চাকরী আরও আকর্ষণীয়(!!) করার মাধ্যমে যোগ্য ও মেধাবীদের এ পেশায় আকৃষ্ট করা প্রয়োজন।
এই চাওয়ার সাথে বাস্তবতার কি মিল আছে? নাকি কোথাও কোনো অশুভ কিছু আঁচ করতে পেরে তা ঠেকানোর জন্য এ ধরনের প্রতিবেদন? নাকি কোনো নৈতিক অসন্তোষ পাশ কাটানোর প্রচেষ্টা? সেনাবাহিনীর পেশা আরাম আয়েশের জন্য?
আমার কিছু দিন পূর্বে অফিসার্স কোয়াটারে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে, বিভিন্ন র্যাংকের অফিসারদের (জেনারেলরা ব্যতিত) লাইফ স্টাইল সম্পর্কে ধারনা নেয়ার সুযোগ হয়েছে। তাদের অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধার নমুনা আমার মতন আপনারাও ভালই জানেন। আর অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার কথা নাইবা বল্লাম। আর একজন সেনা অফিসার তার সেনা জীবন ও অবসরকালীন কি কি সুবিধা পান তা পূর্ণ বিবরন কিন্তু খুব কম মানুষেরই আছে।
সোজা কথায় বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা অনুযায়ী এ ধরনের প্রতিবেদন খুব স্বাভাবিক নয়। এমনকি পিলখানা ট্র্যাজেডির পরও নয়। শুধু মাত্র অর্থ-সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এ ধরনের পেশাকে যারা মূল্যায়ন করবেন, তাদের এ পেশাতে না যাওয়াই সবার জন্য মঙ্গল জনক। তারা সমাজের উচ্চ স্তরে যতটুকু একসেস পায়, তা কজনের ভাগ্যেই বা জোটে। আমিতো দেখি সামরিক অফিসারদের অবসর পরবর্তীতে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ এডমিনে সরাসরি নিয়োগ হতে, নয়ত নিজেই বড় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে।
এখনও সব বিত্তের অনেক মেধাবীরাই এই পেশার সুযোগ পেতে প্রানান্ত চেষ্টা করতে দেখি। আমি সামরিক অফিসারদের সুযোগ-সুবিধার বিরোধী নই, যদি সেটা যৌক্তিক হয় তাহলে তা করাটা রাষ্ট্রের জন্য গুরু দায়িত্ব।
আমরা যেটা করতে পারি সেটা হচ্ছে সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীকে বর্ধিত করতে। একে আধুনিকায়ন করতে, এর ভিতরে যে সকল সমস্যা রয়েছে (ফিস ফিস করে অনেক কিছুই শোনা যায়) তা দূর করতে এবং অতি অবশ্যই নৈতিকতা আরও উন্নত করতে। কিন্তু আমরা এ ধরনের কিছুই শুনতে পাচ্ছি না। আর তা না হলে শুধুমাত্র সুযোগ-সুবিধা এদের শুধু সুবিধাবাদেই উৎসাহিত করতে পারে, যা ভবিষ্যতের জন্য মোটেই ভাল নয়।