কিছুক্ষন আগে শেষ হওয়া "R" টিভির লাইভ টকশো ও প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান "রোড টু ডেমোক্রেসী" তে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর আব্দুল কাইয়ুম, বিএনপির খন্দকার মোশাররফ এবং উপস্থাপকসহ আরও দুজন অতিথি সাংবাদিক। এতে বিভিন্ন সময় মিডিয়া গুলোর বিশেষত সংবাদ পত্রের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা প্রশ্নোত্তর হয়। মলূত আলোচনাটি প্রথম আলো (ও এ জাতীয় পত্রিকাগুলো) উপরেই ফোকাস ছিলো।
বিগত তত্বাবধায়ক সরকার ও তার দূর্নীতি বিরোধী মুখপাত্র জেনারেল মইনকে যেভাবে প্রথম আলো টাইপ পত্রিকা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাপোর্ট দিয়েছিলো তার কিছু নমুনা উঠে আসে। জে. মইনের জোট সরকারের বিদ্যুৎ খাতে ২০ হাজার কোটি টাকার দূর্নীতি বিষয়ক মন্তব্য প্রথম আলোসহ অনেক পত্রিকাতেই বড় হেডিং দিয়ে প্রথম পৃষ্ঠার রিপোর্টের ব্যাপারে খ. মোশাররফ অভিযোগ করেন। মোশাররফ বলেন এরকম ভিত্তিহীন একটি বিষয় কিভাবে এধরনের পত্রিকাগুলো এভাবে হেডিং করে। জবাবে আব্দুল কাইয়ুম রিপোর্টটি সেনা প্রধানের মন্তব্য হিসেবে আসে। কিন্তু আমরা যারা পত্রিকা পড়ি তারা এটা জানি যে এধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ লোকের মন্তব্যে যদি মোটা দাগের কোনো তথ্য থাকে তাহলে যাচাই-বাছাই করে খবরের গুরুত্ব দেয়া হয়, অর্থাৎ তথ্যের সত্যতা থাকলে বিষয়টির গুরুত্ব বেড়ে যায় অন্যথায় কমে যায়। কিন্তু প্রথম আলোর রিপোর্টের ধরন বলছিলো তারা এটা বিশ্বাস করে। উল্লেখ্য বিদ্যুৎ খাতে জোট সরকারের মোট বাজেট ছিলো ১৩.৭ হাজার কোটি টাকা।
"মাইনাস টু" থিওরী প্রসঙ্গে মোশাররফ আরেকটি অভিযোগ করেন, স্বয়ং প্রথম আলো এই থিওরীকে সাপোর্ট করে সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয় প্রকাশ করে। এমন কি স্বয়ং সম্পাদক মতি এ ব্যাপারে শেখ হাসিনাকে দলীয় প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগের অনুরোধ জানিয়ে প্রথম পৃষ্ঠায় বক্স মন্তব্য প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রথম আলো নিশ্চয়ই এখন এ ধরনের থিওরী নিয়ে প্রতিবেদন, উপসম্পাদকীয় প্রকাশ করেন না।
প্রথম আলোর বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ উঠে আসে, যাতে শুধুমাত্র সালমান এফ রহমানের ঋণখেলাপী নিয়ে করা প্রতিবেদন। আব্দুল কাইয়ুম এটাকে সংসদে প্রকাশিত ঋণখেলাপীদের তালিকায় প্রথমে থাকা সালমান এফ রহমান কে নিয়ে করা হয়েছে বলেন। আমিও এধরনের ঋণখেলাপীদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ খবর প্রকাশের সাথে একমত। সংসদের ঐ তালিকায় আরও অনেকে নাম ছিলো যাদের নিয়ে প্রথম আলো পরবর্তীতে সিরিজ আকারে খবর প্রকাশ করতে পারত (এগুলোতে পাবলিক ইনটারেস্ট বেশি থাকে)। কিন্তু তা তারা করেনি। এটাকি প্রথম আলোর যাকে অপছন্দ তাকে ধরিয়ে দেয়া আর যাকে পছন্দ তাকে সরিয়ে দেয়া নয়?
এধরনের ষড়যন্ত্র, উদ্দেশ্য মূলক ও মিথ্যা তথ্যের সাথে জড়িত যেসব পত্রিকা "বদলে যাও বদলে দাও" এর বুলি উড়িয়ে প্রকাশিত হয়, তাদের ব্যাপারে আমাদের সাবধান থাকা ও প্রয়োজনে বয়কট করা উচিৎ।