বিদেশী টাকার গরমে বগুড়া, নওগাঁ ও জয়পুরহাট জেলার হাজারো নারীর ঘর ভাঙছে প্রতি বছর। এ তিন জেলার রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জানা পেছে প্রতি বছর এ তিন জেলায় ২ হাজারের বেশী দম্পতির তালাক হচ্ছে। ১৫ বছর আগের চেয়ে এ তালাকের হার দিগুনেরও বেশী। প্রবাশী যুবকদের মধ্যে তালাকের হার বেশী।আগে দরিদ্রদের মধ্যে তালাক বেশী হতো এখন সচ্ছলদের মধ্যে এবং স্বামীপক্ষ হঠাৎ টাকা ওয়ালা হওয়া তালাকের ঘটনা বাড়ছে।
বিদেশে চাকরি করতে যাওয়ার আগে ২৫ বছরের গরিব যুবকটি তার মতোই কোন গরিব কৃষকের কালো ষোড়শী মেয়েকে বউ করে ঘরে আনে। বিয়ের সময় দুই পক্ষ স্বল্প আয়ের বলে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা মোহরানা ধরে নগদ ৫০০ টাকার একটি নাকফুল আর সব টাকা বাকি রেখে বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের দু বছরের মধ্যে বর ও কনের বাবা মিলে ধার দেনা করে শেষ সম্বল এক খন্ড জমি বা বাড়ির ভিটে বেচে ছেলে টি কে মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়া পাঠিয়ে দেন। পাঁচ সাত বছর বিদেশে চাকুরী করে লাখ লাখ টাকার মালিক হয় গরিব ছেলেটি। তার কালসিটে শরীর সুঠাম হয়। পাঁচ সাত বছর পর বাড়ী ফিরে কুঁড়ো ঘরে পাকা দালান উঠে। ভাঙ্গা জলচৌকির জায়গায় আসে সোফাসেট। পুরনো রেডিও সেটের জায়গায় আসে কালার টিভি ভিসিডি। সব কিছু বদলে যায়। বদলে যাওয়া এই সংসারে কৃষকের মেয়েটিকে বড় বেমানান লাগে ছেলেটির কাছে।
আসবাবপত্রের সাথে ও বদলে ফেলা হয় ঘরের বউটিও। তখন স্বামী শুশুর শাশুড়ি মিলে নানা রকম দোষ ধরতে থাকে বউটির। শেষে গ্রাম্য শালিশে মেয়ের বাবাকে ডেকে মহোরানার ক'হাজার টাকা এবং তালাকের কাগজসহ মেয়েটিকে তার হাতে তুলে দেয়া হয়। কেউ কেই বিদেশ থেকে কালো বউয়ের নানা অযৌক্তিক দোষ ধরে বিদেশে থেকেই তালাকনামা পাঠায়। মেয়ের বাবা গরীব হওয়া ছেলেটির বিরুদ্ধে কিছিু করতে পারে না। ছেলেটি তো বিদেশে তার পাত্তা পাবে কিভাবে। শালিশ, বিচার কোন কিছুতেই কিছু হয় না।
গরিব ঘরের মেয়েটি বিনা দোষে শুধু বিদেশী টাকার গরমে অকালে স্বামী পরিত্যক্তা হয়। এসব যুবতী মেয়েদের অধিকাংশ মেয়ের আর বিয়ে হয় না । সীমাহীন কষ্টে বাবার বাড়ীতে দিন কাটাতে হয়।
খবর নায়াদিগন্ত