২৬ মার্চ ঘনিয়ে আসছে। ডেডলাইন শেষ হতে, আর মাত্র ৭ দিন বাকী। জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের দাবী কোথায়? কোথায় হারিয়ে গেল, ইমরান সাহেব দের আল্টিমেটাম? আস্ফালন বন্ধ কেন?
জামায়াত নিষিদ্ধের গনদাবী সময়ের সাথে হারিয়ে গেছে। খুব ধীরে-ধীরে, আস্তে-আস্তে, নীরবে খেলাটা বিএনপি বিরোধি হয়ে যাচ্ছে। সেই গলা ফাটানো চিৎকার, হুঙ্কার এখন দেখা যায়না? আদালতের ঘাড়ে বন্দুক দিয়ে ব্যাপারটা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, সুকৌশলে। এই আন্দোলন এর মাধ্যমে একটা বিরাট সম্ভাবনা জেগেছিল, জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি করার অনৈতিক অধিকার ছিনিয়ে নেয়ার। কিন্তু, সূক্ষ চালবাজির মাধ্যমে ব্যাপারটা ঘুলিয়ে অস্পষ্ট করে ফেলা হয়েছে।
খেলা এখন বিএনপির বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে। বিএনপি চোখ-কান খোলা রাখুন। দেখুন, কি খেলা হচ্ছে। শাহবাগ চত্বর এবং সমমনা পেজগুলোর দিকে চোখ বুলিয়ে দেখুন, জামায়াত কে বাদ দিয়ে, "বিএনপি" আর খালেদা বিরোধী বিষোধগার। দিনশেষে খেলাটা কিন্ত, আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি। তাই, প্রত্যাশিত ভাবেই এখন তীর গুলো ছুটে আসছে বিএনপির বিরুদ্ধে। বিশ্বাস হয়না?
"মন্দিরে হামলা জায়ামাত-শিবির করেনি, এটা বিএনপির কাজ" -- সৈয়দ আশরাফ।
আর আই পি- বিএনপিঃ ফুবে স্ট্যাটাস।
চেতনাবাজদের পেজগুলো দেখুন, জামায়াত এখন গৌন, বিএনপির সমালোচনা মুখ্য?
এখনও বিশ্বাস হয়না? নিচের সম্পাদকীয় টা পড়ুন;
যেমন বুনো ওল তেমনি বাঘা তেঁতুল
খবরটি ভ্রান্তিকরই বটে। পটুয়াখালীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি গুরুত্বপূর্ণ সফরকে কেন্দ্র করে খবর বেরিয়েছিল যে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে পটুয়াখালীকে স্থানীয়ভাবে হরতালমুক্ত রাখবে। এমন খবর বেসুরোই ছিল। তদুপরি গণমাধ্যমে এর প্রচারে জন-আকাঙ্ক্ষার একটা প্রতিফলন ঘটেছিল বৈকি। বাসি প্রবাদ প্রাণ পেল—ধন্য আশা কুহকিনী।
১৭ মার্চ রাতে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেওয়া মন্তব্যের জন্য বিএনপির চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা নিশ্চয়ই শরমিন্দাবোধ করবেন। কারণ, তিনি বড় মুখ করে বলছিলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির এই হলো পার্থক্য। বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে পটুয়াখালীতে হরতাল প্রত্যাহার করে নিয়েছে, আর আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই দল, যারা যমুনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সফর বানচাল করতে হরতাল ডেকেছিল। তবে দেশবাসী এদের কথিত তফাতটা আরেকবার ঠাহর করতে পারবে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা উত্তম দৃষ্টান্তের জন্য বিরোধী জোটকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। এখন তিনি হয়তো তা প্রত্যাহার করে নেবেন। সমুদ্রজয়ের পর খালেদা জিয়া সংসদে ধন্যবাদ জানিয়ে পরে তা ফেরত নেন। সে তুলনায় এই ধাঁধাটা নস্যি।
আগের দিন ১৮ দলীয় জোটের যে নেতা ঔদার্য দেখানো বিবৃতি দিয়েছিলেন, গতকাল তাঁর বিবৃতি মেলেনি। গতকাল জেলা বিএনপি এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, হরতাল প্রত্যাহারের বিষয়ে গণমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে, তা সত্য নয়। হরতাল চলবে। যদিও গতকাল পটুয়াখালী শহরের জীবনযাত্রা প্রায় স্বাভাবিক ছিল। আলোচ্য খবরটি স্থানীয় সমঝোতা ও সম্প্রীতির আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেনি। এ থেকে উভয় দল পাঠ নিতে পারে, আর সেটা হলো, মানুষ এ ধরনের একটা সৌজন্যবোধের অনুশীলন দেখতে আগ্রহী। প্রধানমন্ত্রী আজ কেবল একটি সেতুই নয়, দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলে দেশের বৃহৎ বীজবর্ধন খামার স্থাপন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। এই প্রকল্প দক্ষিণাঞ্চলের বাংলার শস্যভান্ডার হিসেবে তার হূতগৌরব পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে। পটুয়াখালীর জোট নেতাদের মধ্যে যাঁরাই মতবিরোধ সত্ত্বেও শিষ্টাচার দেখাতে উদ্গ্রীব ছিলেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।
View this link
কিছু বোঝা যায়? গতকাল বিএনপির নামে ভূয়া খবর শিরোনাম করে, আজকে খোচা মারা সম্পাদকীয়। সুক্ষ-চিকন বুদ্ধির খেলা। এটাকে হাল্কা করে দেখলে হবে না, বিএনপির এখন বদনাম হওয়ার জন্য কিছু করার দরকার নেই। তারা নিজেরাই খবর বানিয়ে নিজেরাই সম্পাদকীয় লিখবে, মন্তব্য প্রতিবেদন লিখবে। এসব চিকন চামার দের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন।
গত কিছুদিনের তাদের আচরন ফোকাস করুন। দেখুন, "রাজীব" হত্যার ব্যাপারে, জামায়াত নামক হটকেক বাদ দিয়ে তারা জোর খবর দিয়েছে, "আনসারউল্লা বাংলা টিম" এর বিরুদ্ধে। তাদের অবস্থানটা তথাকথিত জামায়াত বিরোধি। বিএনপির সংকট নামে, প্রতিবেদন আসছে ২ দিন পর পর। কারা সেই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষ নেতা? ব্যাপারটা স্পষ্ট করুন।
বাইরের শত্রুর চাইতে বড় শত্রু হল ঘরের শত্রু। মেদযুক্ত-চর্বিওয়ালা নেতাদের চিহ্নিত করুন। অযোগ্য নেতাদের তালিকা করুন। যাদের কথা বার্তার ঠিক নেই, সুবিধাবাদের রাজনীতি করছে।
খেলাটা কিন্তু, দিনশেষে আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি। আওয়ামী লীগ বনাম-জামায়াত নয়। তাই, এখন রাস্তার মোড় ঘুরে যাচ্ছে, চত্বরে এসে বিএনপির রাস্তায় ঢিল ছূড়া হচ্ছে।
[এতসব নোংরা রাজনীতির মুছলেকা হিসেবে হয়ত বেচে যাচ্ছে জামায়াত]
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭