আন্তর্জাতিক মহল; বাংলাদেশের রাজনীতিতে সব সময় একটা গুরুত্বপূর্ন ফ্যাক্টর। কখনো মানডে গ্রুপ, কখনো টুইসডে গ্রুপ খুলে, কখনো ডিপ্লোমেসির শিষ্ঠাচার ভংগ করে থাকেন উনারা, কখনো কখনো আরও গুরুতর অভিযোগ উঠে। সাদা চামড়াওয়ালারা কি বলল না বলল সেটা নিয়ে সব সময় আলোচনা, মাতামাতি হয়ে থাকে আমাদের দেশে।
তবে, এই আন্তর্জাতিক ব্যাপারটা নিয়ে আওয়ামী ভেল্কিবাজির রাজনীতি খুবই লক্ষ্য করার মত। আওয়ামী লীগ এমন একটা দল, যারা সব সময় গাছের টাও খাবে, তলার টাও কুড়াবে, দরকার পড়লে ফ্লাশ করে দেয়াটাও গিলবে। বিভিন্ন সময় তাদের কর্মকান্ড আনন্দদায়কও বটে। স্বার্থ ভুভুক্ষ দল যেদিকে কূল পায় সেইদিকে দৌড়ায়।
[**]
যেমন; ব্লেক আইসা কি বলে গেল, তাতে তাদের কিছু যায় আসেনা, "ব্লেকদের কথায় এ দেশ চলবে না"।
আবার, "শারমেন চাচী" আইসা কি বলল, সেটা "বেদবাক্য" হয় গেল।
[**] খালেদা জিয়ার টাইম ম্যাগাজিনে কভার স্টোরিঃ
Click This Link
[রিবিল্ডিং বাংলাদেশ]
খালেদা জিয়া টাইম ম্যাগাজিন এর কভার ফটোতে আসুক, কভার স্টোরিতে আসুক, আর পজিটিভ রিপোর্টিং ই হোক না কেন তা মূল্যবান খবর নয়; মূল্যবান খবর হইল শেখ হাসিনা টাইম ম্যাগাজিনের চিপায় কত নাম্বারে তার নাম আসছে সেইটা।
হাসিনার টাইম ম্যাগাজিন এর স্টোরিঃ
Click This Link
খালেদা জিয়ার টাইম ম্যাগাজিনের খবর দেশি মিডিয়া তে আপনি অনুবীক্ষন যন্ত্র দিয়া খুজে পাইবেন না, বাট সেই একি ম্যাগাজিনের চিপায় বুবুর নাম আসলে প্রচার প্রচারনায় দেশ গরম করে দেয়া হইবে। প্রভাবশালীতম নারী নেত্রীদের তালিকায় নাকি বুবু সাত নম্বরে আছেন। গর্বে আমাদের বুক ফুলে যায়। চারদিকে শুধু শুভেচ্চা, সাধুবাদ, হৈ চৈ, মাতামাতি। অনেক আগ্রহ নিয়া, টাইম ম্যাগাজিন খুইলা হয়ে যাই আক্কেল গুড়ুম।
“কোথায় আব্বাস আর কোথায় গাবগাছ” ???
ইংরেজীতেঃ Top female leaders around the world, পৃথিবীর নারী নেত্রীদের তালিকা।
প্রভাবশালী শার্ক হইলে; “সোনিয়া গান্ধী”, “হিলারি ক্লিন্টন”, “সূচী”, “মিশেল” এর নাম কই?
আসল কথা হইল, আর্টিকেল টা প্রভাবশালী নারী নেত্রীদের নয়, বরং রাস্ট্র ক্ষমতায় থাকা মহিলা প্রধানমন্ত্রীদের তালিকা। তের জনের মধ্যে সপ্তম হয়েছেন, (সাতে নাম এসেছে), আহারে কি বিরাট গর্বের বিষয়।
এরেই কয়, “তীলরে তাল বানানো”।
যারে ভাবছিলাম, শার্ক মাছ, খুইজা দেখি পুটি মাছ।
*** এইসব আওয়ামী ভেল্কিবাজি বহুত দেখবেন, সাথে দেখবেন তাদের হিপোক্রিটিকাল বিহেভিওর।
ক্ষেমতায় না থাকলে, দেখবেন বিদেশ ঘুরে দেশের বদনাম করতেছে, আন্তর্জাতিক মহলের কাছে গিয়া অভিযোগ কইরা কান্দা কাটি করতেছে, আর ক্ষেমতায় থাকলে কাউরে পরোয়া করিনা টাইপের ভাব।
আমেরিকায় গিয়া, হিলারীর সাক্ষাত না পাইলে তেমন কিছু না, বাট দেশে শারমেন চাচী খালেদার সাথে দেখা করল না, হুম, বিরাট ব্যাপার।
বিশ্বব্যাঙ্কের হাতে পায়ে ধরে লোন চাইবে, চুরির দায়ে বিশ্বব্যাঙ্ক লোন বাতিল করবে, আবার লোন না পাইলে কইবে, "বিশ্বব্যাঙ্ক নিজেই চোর"
[অনেকটা চোরের মায়ের বড়গলা ]
“বিবিসি”, “সিএনএন”, “কানাডা টিভি” র হাতে ধবল ধোলাই হইলে, কানামাছি-বোবামাছির মত চোখ মুখ বন্ধ করে, কিছু জানিনা, কিছু শুনি নাই, ধরনের ভাব নিয়ে চলবে। আল জাজিরার মত, শক্তিশালী মিডিয়ায় খুনাখুনির খবর প্রচার হইলে, মুখে কুলূপ আটিয়া বসে থাকে,
[একবার খালি চিন্তা করেন, এই ঘটনাগুলো বিএনপি আমলে হচ্ছে, ভিক্টিম খালেদা জিয়া]
সিএনএন ইন্টারভিওঃ
Click This Link
সিভিসি ইন্টারভিওঃ
https://www.youtube.com/watch?v=yjOZ_5D6GoE
আবার; জাতিসংঘের, ইউইস এর কোন কর্মচারী কি বলল না বলল, তা যদি পক্ষে যায়, সেটার সোর্স দিয়ে স্বজাতির পোৎরিকায়া পলিটিক্স ম্যানুভারিং এর চেস্টা করবে। এরেই কয়, আওয়ামী চরিত্র।
[দৈনিক দুধের আলোর জলঘোলা করার ধান্দাবাজি রিপোর্টিং]
Click This Link
[**] ইকোনোমিস্ট, গার্ডিয়ান এর মত মাধ্যমে দেশের রাস্ট্রযন্ত্র নিয়ে উদ্যেগজনক খবর বেরোবে, সেটা আওয়ামীরা চুপচাপ চেপে যাবে, আবার শারমেন চাচী গনতন্রের হালচাল নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলে সেটা বিশাল গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হবে।
Click This Link
তা শারমীন (শারমেন) চাচীরে জিগাইতে মঞ্চায়, দেশে কোন দিক দিয়ে গনতন্ত্র আছে বলে আপনার মনে হয়েছে?
দেশে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ, অঘোষিত জরুরী আইন চলছে, ভিন্নমতালম্বীদের উপর দমন-পীড়ন চলছে, মেটাল বুলেট দিয়ে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, পত্র পত্রিকা-টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে, এমনকি লেখালেখির জন্য পুচকে ব্লগার-এক্টিভিস্ট দেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই ধরনের গনতন্রের অগ্রযাত্রায় আপনে ব্যাপক খুশী?
তা আদতে খুশী? নাকি কোন চুক্তি করার জন্য ভৃত্যরে পাম-পট্টি দিয়ে গেলেন?
[**]
কানাডায় লাভলিন এর পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি নিয়ে মিডিয়ায় বিরাট হাঙ্গামা হইলে অথবা, ইকোনোমিস্টে ভারতের কাছ থেকে টাকা খাওয়ার খবর ছাপা হইলে, সে খবর উনারা চাইপা যাবে, বাট কোথায় চিপায় চাপায় যদি সামান্যতম বক্তব্য পাইলে সেটা দিয়ে পলিটিক্স এর জল ঘোলা করার চেস্টা চলবে।
ভেল্কিবাজিতে আওয়ামীরে নোবেল পুরস্কার দেয়া যাইতে পারে।
শেষ কথা, এইসব বালছাল আন্তর্জাতিক জুজু দেখাই লাভ নাই, নিজে শক্ত তো মাটি পোক্ত। শক্তি থাকলে, মাতবর পরাজিত।
এখন, নানান রকম খবর ছাপিয়া বিরোধী দলকে কনফিউজ করার পায়তারা চলতেছে। কখনো সংলাপের নাটকে টেনে আনার জন্য, কখনো হার্ডকোর আন্দোলন থেকে সরিয়ে রাখার জন্য।
আক্কেল থাকলে, এইসব ধান্দাবাজি খুব সহজে বোঝা যায়।
হীরক রানীর দেশে যে কোন ধরনের গনতন্ত্র চলতেছে, সেটা তারেক রহমান রে ওয়ারেন্ট পাঠাইয়া প্রমান করা হয়েছে। আজকে মন্ত্রী বলল, তারেক রহমান রে ধরে আনা হবে, পরের দিন দুধক গেল আডালতে, নগতে এরেস্ট ওয়ারেন্ট জারি হয়ে গেল, ইন্টারপোলে। বাহ বাহ।
[দুদক চেয়ারম্যান, গোলাম রহমান, আহহ নামেও গোলাম, কামেও গোলাম। বাপ-মার নামকরনের স্বার্থকতা ১০০ তে ১০০ ]
"প্রধানমন্ত্রীর ইশারা ছাড়া গাছের পাতাও নড়েনা" --- খালেদা জিয়া
একেবারে খাটি সত্য কথা। এক তারেক ইস্যুতে দিনের আলোর মত পরিস্কার। এসব কথা শারমেন চাচীর না বোঝার কিছু নাই।
স্বার্থ উদ্ধারের পর এইসব আপাদের খুজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। কিন্তু, আপাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ভেল্কিবাজি এই দেশে চলতেই থাকবে।
[আপনাদের কি মনে হয়, এই চাচা-চাচীরা যদি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতো, তাহলে তাদের কথা দেশী মিডিয়ায় এত গুরুত্ব দিয়ে আসতো?? ]
মিডিয়া নিয়া হাম্বাশ্রেনীর কথা কি বলব?
তেনাদের কাছে; আমার দেশ খারাপ, আর দৈনিক দুধের আলো, জঘন্যকন্ঠ, দৈনিক সমকাম, বালের কন্ঠের নিউজ বেদবাক্য। চামচানিউজ৪২০ ভালো।
দিগন্ত টিভি তো খারাপ বটেই, এমনকি বিবিসি-আলজাজিরা-সিএনএন ও কিছু না, বাট গোজামিল বাবুর এহাত্তর টিভি, মাহপুজ এর এটিন [এক টিন চামচামি] বেশ গ্রহন যোগ্য।
সিএন এনে, আপা বেইজ্জত হলে, দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয় বলিয়া হা-হুতাশ করে; আপা মিছা কথা বলে দেশের ভাবমূর্তি তলায় ঠেকায় দিলে, তাতে কোন দোষ নাইক্কা।
আমারই এক পরিচিত, সারাজীবন প্রথম আলুর নিউজ শেয়ার দিয়ে গেল আর জরিপ চালানোর পর কয় এই **র পত্রিকারে আমি গুনিনা।
ভেল্কিবাজিতে আওয়ামী লীগ "নোবেল", আর অভিনয়ে "অস্কার" পাওয়ার যোগ্যতা রাখে।
[লেখায় ছবি যোগ করতে পারতেছিনা, সমস্যা কি? কেউ জানলে হেল্পান]
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৩৬