somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নয় রশি পীরের(RP9) তাবীজ!

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডিসক্লেইমারঃ গল্পের সকল চরিত্র কাল্পনিক। তবে ঘটনা সত্য।

নির্বাচনের আগে জাসিনা খুব চিন্তায় পড়ল...ক্যাম্নে জিতা যায়। মুরুব্বি সে কম ধরে নাই, ইউরোপ আমেরিকা চইষা ফেলছে সে মোড়ল ধরতে। তার পোলাটাও অবশ্য বিরাট কামেল...ভাল শিক্ষক পাইছে...হাভাড়ে পড়ছে...রাজনিতীর প্যাচ ভাল শিখছে। সেও লাইন ঘাট কইরা দিছে। জাসিনার মাথার ভিতরে সব বাত্তিই এইবার সবুজ রঙ্গে জ্বলতেছে। তাও সে নিশ্চিন্ত হইতারে না। টেনশন লাগে। পোলা উনার পেরেশানির কারন বুঝে না...

"আমা তুমি কিন্তু এইবার আর রাস্তায় রাস্তায়...জেলায় জেলায় গিয়া রাত দিন পরিশ্রম করবা না...তুমি আরো কালা হইয়া যাইবা তাইলে ...এখন দিন পাল্টাইছে না? ইমেইল করবা...ফুন করবা...আমিতো তুমার মুবাইলে রেগুলার ফ্লেক্সি করি ... আর সব কিছুতো ঠিক করাই আছে...কাকু-মামুরা সবাই আমাগো সাথে...তুমি এত চিন্তা কর ক্যান?"।

- তুই এসব বুঝবি নারে বাপ। তোর নানা সারা জীবণ মানুষের কাছে থাকতে চাইছেন...ইলেকশনের আগে ঘরে বইসা থাকলে কি হয়? ওরে কে আছিস...আমার মার্সিডিজটাতে তেল ভর।"

- মা, তুমি এখনো সেই প্রস্তর যুগের রাজনিতীতেই আছ। এখন রাজনিতী হয় টেবিলে-ক্যাল্কুলেটরে, এক্সেলে, জোটে-মহাজোটে, লবিতে, করিডরে। প্রথম কাকু সেদিন বইলা গেল না? সবাই আমাদের সাথেই আছে...তুমি শুধু দেখো।

- আচ্ছা বাবা। আমি তাইলে বাসাতেই থাকব। টেলি কনফারেন্সে ভাষন দিব। এখন একটু নয়(9) রশি (R) পীরের (P) দরগায় যাই।
ছেলে আর না করতে পারে না। সে তার মারে চিনে। গেলবার আটরশি পীরের দোয়া নিয়ে গোহারা হেরছে। তাই এইবার নয় রশী পীরের(RP9) মুরিদ হয়েছেন। এক রশি বেশী। এরা যে কবে একটু সেক্যুলার হবে!

ঘন্টা তিনেক পরে নয় রশি পীরের দরগাহ থিকা বড় একটা তাবিজ নিয়া ফিরা আসে জাসিনা। বড় কুদরতী তাবীজ। যেকোন বড় মুসিবতে পড়লে এই তাবিজ চাদনি রাইতে, পানিতে ডুবিয়া রাখতে হবে। তারপর শুকাইতে হবে। শুকানির পরে তাবিজের ভিতরের কাগজটা খুইলা পড়তে হবে...সেখানেই লেখা থাকবে করণীয়। জাসিনা চাদনী রাইতের অপেক্ষায় থাকে। চাদনী রাইতে তাবিজ গুলে আর শুকায়। তারপরে একাএকা রুমে বইসা কাগজ খোলে। ভিতরে লেখা। লাল কালিতে ...দুইটা শব্দ। ইংরাজী শব্দ। এইটা আবার কি ইশারা! RP9 আবার আরবি ছাইড়া ইংরাজী ধরল কবে?! ইয়া আল্লাহ...কি পরীক্ষায় ফেলাইলা তুমি! জাসিনা ভাবে...আর ভাবে...শেষে খুইজা পায়। হুহু। মিল গেয়া। পরেরদিন প্রেসে ফোন করে। ছাপতে দেয়া নির্বাচনী ইশ্তিহারে সবখানে যেন বাংলাদেশের জায়গায় "ডিজিটাল বাংলাদেশ" লেখা হয়...হুকুম দেয় সে। নেতা কর্মীদের ফোন দিয়া জানায়...যেন প্রত্যেকে "ডিজিটাল বাংলাদেশ" জপে তিন তসবীহ আদায় করে। দেশ ব্যাপী ছড়ায়ে যায় কথাটা।এরপরের ফলাফল সবার জানা। ঐতিহাসিক ভূমিতছনছ বিজয়।

মন্ত্রীসভার ঘোষনার আগে আবারো তাবিজের শরনাপন্ন হইতে হইল। এইবারো একি কথা লেখা তাবিজের কাগজে। দুইটা শব্দ। এইবার Comic Sans MS ফন্টে লেখা। বুঝতে দেরি হয় না জাসিনার। তাবিজ একি নির্দেশ দিয়েছে। ঘোষনায় বাদ পড়ে অনেক পরিচিত নাম।

কিছু দিন যাইতে না যাইতেই আবারো সমস্যা। দেশের নাম করা একটা ফোর্সের ডজন অফিসারকে মাটিতে পুতা অবস্থায় পাওয়া গেল। দেইখা মনে হয়, রোগে মরা মুরগি...মাটিতে চাপা দেয়া হইছে। আরো খুইজা পাওয়া গেল...কেউ নর্দমায়, ড্রেনে, নদীতে। চাইরদিকে লাশ। সবাই অস্থির। কিন্তু জাসিনা ভয় পায় না।কারন তার আছে RP9 মানে নয়(9) রশি (R) পীরের (P) তাবিজ। সে তাবিজ পানিতে গোলায়...আর শুকায়...কয়েক বার। নাহ! একি নির্দেশ। খালি ভিন্ন ফন্টে। Comic Sans MS ফন্টে আশ্ছিল আগের বার...এইবার আসছে টাইমস নিউ রোমানে। একি কথা। দুই শব্দ। পরদিন ফোর্সের নাম পরিবর্তন হয়। সব ঠান্ড হইয়া যায়। তাবিজের কি কুদরত! সবাই জাসিনার বিচক্ষনতার গুন গায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নামি প্রফেসরতো জাসিনারে তেল দিতে গিয়া..নিজেই পিছলা খায়া পইড়া গেল।

বছর গড়াতেনা গড়াতেই আবারো ঝামেলা। ছাত্রদের হালুয়া রুটির দাঙ্গা হাঙ্গামা।পটাপট কিছু লাশো পইড়া গেল দুইপাশে। এইবারেও তাবিজ একি লেখা দিল..."Change Name"...এরিয়াল ফন্টে। এইবার কার নাম পাল্টাই---জাসিনা ভাবে...নাহ আজকাল আর মাথা কাজ করে না। বয়স হইছে। তাবিজের কাগজটা টেবিলে রাইখা জাসিনা বাথ্রুমে যায়...অযু করতে। ফিরা আইসা দেখে...তার নাতনি তাবিজের কাগজটা দিয়া প্লেন বানাইছে। নানুরে দেইখাই...বেতমিজ নাতনি কাগজের প্লেনটা উড়ায়া দিল। জাসিনা খপ কইরা প্লেনটা ক্যাচ করল। ইশারা মিল গেয়া! ইউরেকা! ইউরেকা! তাড়াতাড়ি তিনি মোবাইল টিপেন...জরুরী কিছু নির্দেশ দেন। পরদিন জিয়া ইন্টারন্যাশ্নাল এয়ারপোর্টের নাম পাল্টায়...আর নয় রশি পীরের(RP9) দরগায় এক ট্রাক ইলিশ যায়।

------------------------------------------------------------
অন্যান্য লেখাঃ
তেল-গ্যাস বুঝো না, স্বাধীনতা বুঝো?
জনাব, আপনার মানসিক ভারসাম্য কোন দিকে হালিয়া আছে?
ব্যানানা বাংলাদেশ-৪ (কি চমেতকার দেখা গেল!)
কন্সপিরেসি থিওরী-পারট ৩ (সিউডো-জঙ্গি রাষ্ট্রের ছায়া)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১:২২
১৩টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×