somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার সব গুলো গল্প থেকে বেস্ট একটা গল্প ....!!

১৯ শে জুন, ২০১৪ রাত ৯:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



যদি আপনি এই গল্পটা পরেন তাহলে আপনার সময় নষ্ট বিফলে যাবে না ।

টিফিন এর সময় সব ছেলে-মেয়ে টিফিন করতে বাইরে গেল । সবাই ক্লাস থেকে বের হয়ে কেউ কেউ গেল ক্যান্টিন এ আবার কেউ কেউ মাঠে খেলতে । কিন্...তু এর থেকে একটি ছেলে এর কোনটিতেই গেল না । মাঠের এক কোনে , গাছের নিচে বসে আছে । প্রতিদিন ই এই রকম দেখা যায় । ক্লাসে এ অনেকেই এই ছেলেটিকে দেখতে পারে না । ছেলেটার জামা নোংরা , চুল গুলো এলোমেলো । আর বাকিদের , সুন্দর জামা -কাপড়। সুন্দর করে পরিপাটি করে আসে সবাই শুধু ঐ ছেলেটি ছাড়া । সামনে পরীক্ষা । স্কুলে টাকা দিতে হবে । সবাই যার যার বাসায় জানায় । সবার বাবা-মা এসে টাকা পরিশোধ করে গেছে । শুধু ঐ ছেলেটির পরীক্ষার ফি বাকি । ছেলেটি ক্লাসে আসলেই স্যার ফি এর কথা জিজ্ঞাসা করে । আর ছেলেটি চুপ করে থাকে । এই ভাবে ২-৩ দিন গেল । স্যার রা বুঝতে পারলো , এই ছেলে ার টাকা দিতে পারবে না । হেড স্যারের কাছে নিয়ে ছেলের নামে নালিষ করলো । হেড সার ছেলেটিকে তার রুমে ডাকলো । অনেক বকা ঝকা করলো । বাবা-মা দিয়ে পরের দিন ক্লাসে আসতে বলল । "প্রথম দিন তোমার বাবা-মা এসে সেই যে ভর্তি করে দিয়ে গেল আর তাদের মুখ এ দেখলাম না ১ বছরের । কাল যদি তোমার বাবা-মা আমার সাথে দেখা না করে তুমি আর ক্লাসে আসবে না । এখন যাও । "

ছেলেটির বয়স তত বেশী হবে সা ।১৪-১৫ . ছেলেটি কাদতে কাদতে ক্লাসে গিয়ে তার ছিড়া - ব্যাগ টি নিয়ে বের হয়ে গেল স্কুল থেকে ।

সেই থেকে ছেলেটি আর স্কুলে আসে না ।


অনেক দিন পর সেই স্কুলের হেড স্যার একদিন রাস্তায় রিক্সার জন্য দাড়িয়ে ছিল । কোথা থেকে যেন একটা রিক্সা এসে বলল , স্যার উঠেন । স্কুলে যাবেন ?

স্যার একটু আশ্চর্য হয়ে রিক্সা চালকটির দিকে তাকিয়ে রইলো । একটা ১৪-১৫ বছরের ছেলে রিক্সা চালাচ্ছে । স্যার আরও বেশী অবাক হল , যখন দেখলো এই ছেলেটা সেই ছেলে . যাকে সে স্কুল থেকে বের করে দিয়ে ছিল ।

স্যার আর কথা বলতে পারলো ণা । চুপ করে রিক্সায় উঠে বসলো। ছেলেটি কথা বলতে শুরু করলো।

" স্যার , আমাকে চিনছেন ?
= স্যার , না (না চিনার ভান করে বলল - )

"স্যার ঐ দিন পরীক্ষার ফি দিতে পারি নাই তাই আমাকে বের করে দিছিলেন। আমি সেই ছেলে ।

= হুম . চিনতে পারছি

" স্যার আপনে ঐ দিন আমারে স্কুল থেকে বের না করে দিয়ে আমি , আজ না খেয়ে মরতাম ।

= মানে

" স্যার আমি এতিম । রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতাম । আর বিভিন্ন স্কুলের সামনে দারাইয়া থাকতাম আর ভাবতাম আমি যদি পরতে পারতাম ।

একদিন একটা , সাহেব তার বউ আমারে দেইখা , আপনার স্কুলে ভর্তি করাইয়া দিছিল। আমি অনেক খুশি ছিলাম । কিন্তু স্কুলে ভর্তি করানোর পর আর সেই সাহেব- মেডাম রে দেখি নাই । আর আমি পাগলের মত , খাইয়া না খাইয়া সারা দিন স্কুলে পইরা থাকতাম । সাবই যখন টিফিন খেত , আমি দূরে এক কোনে বসে বসে , সবা্র খাওয়া দেখতাম । আর কান্না করতাম । ক্ষিধা অনেক লাগতো । কিন্তু ক্লাস করতে বেশী ভাল লাগতো । তাই না খাই য়া ক্লাস করতাম । আর রাতে গিয়া রাস্তার পাশে ঘুমাইতাম ।

আপনে আমারে স্কুল থেকে বের করে দেবার পর বুঝতে পারলাম , পড়া শুনা আমাদের জন্য না । যাদের পেটে ১ বেলা বরপেট খাবার জুটে না , বাবা- মা নাই তাদের জন্য পড়া লেখা না । তাই ঐ দিন থেকে স্যার আমি রিক্সা চালাই তাছি । এখন স্যার প্রতিদিন ৩ বেলা হোটেল এ ২ প্লেট ভাত , সাথে মাছ , ডাইল . দিয়া পেট ভইরা ভাত খাই ।

..... স্যার মাফ কইরা দিয়েন , আমি কি সব বকবক কইরা আপনেরে ডিস্টার্ব করতাছি । স্যার স্কুল আইসা পরছে ।

= এই নেও ভাড়া ।
" স্যার এই ডা কি কন ? আপনি আমার স্যার , আপনার থেকে আমি টাকা নিয়া বেয়াদবি করতে পারমু না । স্যার ।

বলে ছেলেটা চলে গেল ।

আর ততখনে , হেড স্যারের , দুচোখ দিয়ে অঝর পানি পড়ছে । রিক্সায় যাও রুমাল দিয়ে মুছতেছিল , কিন্তু এখন যেন আর মুছে শেষ করা যাচ্ছে না । যেই ছেলে টা কে সে , না জেনে অনেক কথা শুনিয়ে স্কুল থেকে বের করে দিয়ে ছে , আহ সেই ছেলে তাকে এত সম্মান দিল ? স্যার হাটতে হাটতে আর চোখের পানি মুছতে মুছতে নিজের রুমে ডুকলেন ।



" আসুন না , আমরা এই রকম কিছু গরীব ছেলেদের সাহায্যে এগিয়ে আসি । একদিনের জন্য নয় , ছেলেটির পাশে সব সময় থাকি । আপনি এত টা কামাচ্ছেন , এর থেকে যদি প্রতি মাসে , ২০০০ টাকা , কোন গরীব ছেলের পড়াশুনার খরচে ব্যয় করেন , দেখবেন নিজেকে অনেক সুখি লাগবে । )

আর শুনেছি , হুমায়ুন স্যার নাকি গল্প লিখতেন আর কান্না করতেন । নিজে কষ্ট টা উপলব্দি করতেন । আর আজ আমি এই গল্প টা লিখার সময় কান্না করেছি । সত্যিই আজ আমি গল্পের মধ্যে ঢুকতে পেরেছি।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×