চারিদিকে গোলাগুলির বিভৎস আর্তনাদ। লোকজনের এদিক হতে অন্যদিকে ছুটোছুটি। ব্যস্ততার থেকে বাচবার তাগিদটাই যেন বেশী। বুকে একটা বুটের লাথি, আর্তনাদ করার শক্তিটুকুও নেই। মুখে নোনতা রক্তের স্বাদ পাচ্ছি। ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখার মত স্বপ্নগুলোও ফিকে হতে শুরু করেছে। চারিদিকে গোলযোগের মাঝেও নিজেকে সমগ্র পৃথিবী ৫ টন মনে হচ্ছে। খুব কষ্ঠ হচ্ছে নিজকে নিয়ে ভাবতে। প্রজেকটরে ছবি দেখানর মত করে একটা একটা ছবি আসছে, আর সাথে সাথে চলে যাচ্ছে। মায়ের মুখটাও দেখতে পেলাম। মা, "কতদিন দেখি নি তোমায়! কতদিন তোমার হাতে তুলে দেয়া ভাত আমার মুখে পড়েনি। কেও বলেনি বাবা, একটু দাড়া, এই তো চা হয়ে গেছে, বিস্কুট ভিজিয়ে খেয়ে খেলতে যা।" মা এখন কাঁদছে, মা নীচু হয়ে আমার মুখের এলোমেলো চুল সরিয়ে দিচ্ছে, " তুই এত ছোট করে চুল কেটেছিস কেন? তুই জানিস না আমি ছোট চুল পছন্দ করি না।" মা! আরেকটু তোমার হাতটা রাখ আমার মুখে, আমি আরেকটু শ্বাস নেই তোমার রসুন বাটা হাতের। খুব কষ্ট হচ্ছে মা, আমাকে একটু জোরে ধরে রাখ, আরেকটু। খুব তৃষ্ণা পেয়েছে মা, একটু পানি দিবে! আমি আর কখনও তোমার অবাধ্য হব না মা, আমাকে একটু পানি দাও! মা তুমি কেদ না, আমি কিছু চাই না! আমার অনেক ঘুম পেয়েছে! আমি জানি না আমি আর্মি না আমি বিডিআর। মা! আমি তোমার সন্তান! আমি একটু আরামে ঘুমাতে চাই! মা তুমি কেদ না, আর তোমাকে জ্বালাব না।
স্বর্গ থেকে মায়ের ফোটা ফোটা চোখের জল টপটপ করে পড়ছে! ছেলে অঘোরে ঘুমাচ্ছে!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১০:২৫