somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি রাত ও কয়েকটি কবিতা

২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
.




একটি রাত
.
বিকেলের শেষে সাঁঝ নেমে আসে,শুরু হয়ে যায় রাত
জোছনার আলো সখী হয়ে এসে ধরে নেয় তার হাত

জুঁই-বকুল-রজনীগন্ধা সুবাস ছড়াতে ফোটে
ক্লান্তির ঢেউ কারো কারো চোখে ঘুম হয়ে ওঠে

ঘুম নেই চোখে, চোর ও সাধকের আর রাতজাগা পাখি
বধূ জেগে রয় স্বপ্ন-বিছিয়ে,রঙে ঝিকিমিকি আঁখি

মহাজন আর মাতালের নেশায় জড়তায় জাগে রাত
লুঠপাট লন্ঠনে
কোথাও-বা লুন্ঠনে
বেড়ালে চেটে খায় কুকুরের ভাত।

সবুজ পাতায় চাঁদনির নেশা
আলো আঁধারীর অবাধ মেলামেশা
মশারীর হেথা-হোথা মশার চালাকি।

রাত মানে আঁধারের সুর ছোঁয়া ক্ষণ
রাত মানে পেলবতা,নীরব জীবন
নদীতেও ঢেউ তোলে মাঝির গায়কি।

সময়ের ঘোড়া ছোটে ভোরের আকাশে
খুকুমণি স্বপনেতে খিলখিল হাসে
তার সাথে খেলা করে কত ফুলপরী।

তারাদের আলোঝরা নিঝুম পাহারা
নিভু-নিভু হয়ে দেখে ভোরের চেহারা
সংগীতে জ্বলে দীপ পুলক লহরী।

সারা রাত জেগে কবি লিখে চলে কাব্য
বউ বলে টাকা পাও,টাকা পেলে ভাববো
পেটেতে ভাতের টান,চোখে যে রসের বাণ।

কলমের কালি শেষ রাত শেষ অকারণ
কাঁপা হাতে কবি খোলে সময়ের আভরণ
নাটিকায় যবনিকা সুখ-অনুসন্ধান।

*
সিঁড়ি
.
ধাপে ধাপে উঠে যাওয়া পায়ের বিপ্লব
পায়ে পায়ে নেমে আসা শায়েরী আরাম
ওঠানামাতেই হিসেব করি জীবনের যত সব
পতনে ভুলে যাই, পিতাপুরুষের নাম

পদক্ষেপের গোলকধাঁধা
স্থলনের বাধা
সবেতেই বাঁধাধরা কলরব।

গড়া চিরদিন
ভাঙার চেয়ে কঠিন
সিঁড়ির অংকে উল্টো সব।



*



মানবিক
.

বুঝি না কখন ঘুম ভেঙে যায়
রাতে,ভোরে
আলস্যের পরিখায়।

বিনিদ্র রাতেও স্বপ্ন আসে
আসে শামুকের দ্বীপ,
ছা-পোষা অনুভবে
মাটির প্রদীপ।

মাটির গন্ধে মেশে মানুষের ঘাম
নদীতে যেমন মেশে ফুলের পরাগ
সবুজ যেমন হাসে ফসল সুবাসে
ফলনে রয়ে যায় সময়ের দাগ।

জীবনের আগপিছে সময়ের জমি-খাতা
শ্রমের প্রেমে স্বপ্নপুরণ,
লাভ-ক্ষতির পাটিগনিত ফেলে
মানবিক বিচ্ছুরণ।
*
আমাদের কথামালা-১৩৭
.

আমরা এখন বিবেক রাখি সিন্দুকে
সোনা রাখি বন্দকে
চিটিং করি বন্ধুকে।

আমরা এখন চাঁদ ভাবি বিন্দুকে
ভয় পাইনে বন্দুকে
যে যা-ই বলুক নিন্দুকে।

আমরা এখন ভরসা রাখি গার্লফ্রেন্ডে
হিসেব রাখি থাউজেন্ডে
ফুর্তি মারি উইক-এন্ডে

আমরা এখন বাবা-মায়ের দোষ খুঁজি
সামলে রাখি গোপন পুঁজি
নিজেকে ছাড়া কাকে বুঝি!

আমরা এখন গাড়ি-বাড়ির গন্যমান্য
নেশায় নাই ভারসাম্য
সবকিছুতে’মানি’ কাম্য

আমরা এখন গুরুর কথায় পাথর ধরি
পড়শিদের কাতর করি
হাঁটা-যন্ত্রে ওজন ধরি

আমরা এখন চোখ রাখি বৃদ্ধাশ্রমে
কি জানি কখন কদর কমে
ঠাঁই যেন পাই কোন রকমে।
@
সময়ের সংলাপ
.

সময়ের সাথে বাঁচতে-বাঁচতে আমরা ঢেউ
হই,স্রোত হই।সময়ের সংসারে আমাদের
ভাগ-বন্টন বুঝে নেয় কেউ।
কে যে হিসেব রাখে চাষ-আবাদের!


কারো প্রাতরাশে লেবুজল থাকে,কারো শুধু
হাঁটাহাঁটি।ভুঁড়ি বেড়ে যায় ঘুষের দমকে,
ধমকায় কেউ খাঁটি।কেউ তর্কায় লাউ-কদু
নিয়ে।কতজন ডোবে,ভাসে কেউ বুঝি নিজের চমকে।

গাছপালার সাথে পাল্লা দিয়ে সময়ের ছড়ি
দোলে।হাত-পার চেয়ে মাথা ভাঙে বেশী।
খুশি হয়ে কেউ ভোলে,ইসকুলে পড়ি।
সবেতেই যেন ঘাতক সময়,সময়ের প্রতিবেশী।


*

. আমাদের কথামালা-১৩৫
.

আমরা এখন হৈ-হল্লা এড়িয়ে চলি।লাভ
কি বাপু ঝুটঝামেলায় জড়িয়ে নিজের।
হল্লা মানেই মাতাল-ছাতাল,ভাব
যেন সেই বিশ্বজয়ের।বে-তমিজের
সামনে পড়া,মানেই শুধু শুকনো বিপদ।
তারচেয়ে ঘরে ফিরি,টিভি দেখি।
কিচেনে যত্ন করে গিন্নী রাঁধে কি-কি পদ।
টক-শোয়ের মন্তব্য সবই কি আর হয় মেকি।


আমরা এখন এমন যেন উল্টে খাই ভাজা মাছ।
কাগজ পড়ি ভুরু কুঁচকে,পেয়ে যাই কিছু
মনের খবর।বুক পকেটে হৃদয় নাচে উদোম নাচ।
পাশের বাড়ির ওই মেয়েটি,গুন্ডা নাকি নিয়েছে পিছু।

হল্লা ছিল সে-সব নিয়ে,ধুর কেন যে পালিয়ে এলাম।
প্রতিবাদে জাত যেত কি,অ্যসিড হয়তো বের হত না।
হাসপাতালে শুয়ে মেয়ে,আমি কি তবে মুখ পোড়ালাম।
কি এসে যায় অন্য কারো,আমরা কারো মত না
*










সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৪৫
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×