somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ জার্নি ফর সিলেট বাট..............।

০৪ ঠা মে, ২০১২ রাত ৩:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অই মামা,যাবা ?
রিকশাওয়ালা কইল- কই ?
আমি-শ্যামলী ।
রিকশাওয়ালা- ওঠেন ।

রিকশায় যেতে যেতে নিজের পরিচয়টা দেই- আমি রাকিব,বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে কিন্তু পড়ালেখা শেষ হচ্ছে না । দাদার আমলের ফোনটা হাতে নিয়ে বন্ধু জয়রে ফোন দিলাম,শালা ফোন ধরল চার বারের মাথায় ।
আমি- কই তুই ?
জয়- বাসায়
আমি- ১০ মিনিটের মধ্যে মাঠে আয়,আর আসার সময় পোলাপানরে ফোন দিয়া আসিস আজকেই সব ফাইনাল করুম ।
জয়-ওকে, দিতাছি ।
১৫ মিনিট পর মাঠে গিয়ে দেখলাম,জিসান বসে আছে । তার হাত থেকে বিড়ি নিয়া বললাম- জেডু(ভালো নাম-আতিকুর জেড রেহমান)কই ?
জিসান- ও যাইব না । কাজিনের লগে রংপুর গেছে ।
আমি- মানে ? ওর না আমাগোর লগে সিলেট যাওয়ার কথা ?
জিসান-যাওয়ারতো কথা সেটা আমিও জানি,কিন্তু শেষ সময়ে আইসা এমন পলটি মারব সেইটা কে জানে ?
আমি- ধ্যাত,দিল মেজাজটা খারাপ কইরা ।
জিসান- আমারও এদিকে একটু সমস্যা হইসে । আম্মু রাজি হইতাসে না,আর আম্মু রাজি না হইলে কামনে যাই ?
আমি- দোস্ত,আর এক-দেড় বছর পর তুই জবে ঢুকবি এখনও যদি অ্যান্টিরে এইসব ছোট খাটো বিষয় বুঝাইতে না পারস তাইলে তোর প্রেমিকারে ক্যামনে তুই তোর আম্মার সামনে হাজির করবি?
জিসান- দেহি ।
আমি- দেহি না,তরে যাইতেই হইব ।
কিছুক্ষণ পর জয়রে হেলে দুলে আসতে দেখা গেল ।
আমি- কিরে এত দেরি করলি ক্যা ?
জয়- বুয়ারে বিদায় না কইরা কামনে আসি ? জেডু কই ?
জিসান- ওই হালা যাইব না ।
জয়- আমি আগেই জানতাম ও যাইবনা । খিদা লাগসে, চল কিছু খাইয়া আসি ।
আমি- ওই আমি বিল দিতে পারুম না,তোরা খাওয়াবি ।
জয়-আরে বেটা,জিসান আছে না,বিল তো ওই দিব ।
আমি-যা জিসান চা বিড়ি নিয়া আয় ।
ওই দিন রাত ৮টা পর্যন্ত আমরা আড্ডা দিলাম । যাওয়ার সময় জয় আমাকে বলে,দোস্ত সিলেট যাওয়ার তারিখটা একটু পিছায়া দিলে হয় না ? আমি বললাম,দোস্ত দেখ এর আগে অনেক বার প্ল্যান করসি ট্যুর দেওয়ার জন্য,কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন ট্যুরেই আর যাওয়া হয় নাই,আর এই বার না গেলে নিজের কাছেই নিজে ছোট হয়ে যামু । জয় বলল-দোস্ত দেখ,মাত্র চাকরিটা পাইসি,এখন কাম ফালায়া ট্যুর দিলে সমস্যা হইতে পারে আর হাতে তেমন টাকা নাই । আমি বললাম-দোস্ত,এই প্ল্যান কিন্তু এক মাস আগে করা হইছিল,তখন সবাই কইছিল যাবে । আমি এখনও সেই প্ল্যানেই আছি,তোরা যদি নাও যাস আমি প্ল্যান ক্যানসেল করুম না,অর্নিব আছে,আমি আর ওই যামু । decision তোর হাতে,পরশু দিন টিকেট কাটুম,ফোন দিস ।
ওই দিন এটুক বলেই চলে আসলাম । খারাপ লাগলো,অন্তত জয় এর কাছ থেকে এটা আমি আশা করি নাই ।

অবশেষে,সেই টিকেট কাটার দিন এলো । বিকেলে অর্নিব ফোন দিল ।
অর্নিব- কিরে কই তুই ?
আমি- এইতো দোস্ত বাসায়,তুই কই ?
অর্নিব-আমিও বাসায়,আজকে না টিকেট কাটার কথা ?
আমি-হ কাটুম । এক কাম কর,তুই শ্যামলীতে আয় ওইখান থেকে একলগে যামু টিকেট কাটতে,ঠিক আছে ?
অর্নিব- তাইলে,তুই বাইরও,আমি আইতাছি
আমি- ওকে মামা,আইতাছি ।

তাড়াহুড়ো করে বের হলাম,তাও দেরি হয়ে গেল । গিয়ে দেখি অর্নিব বসে আছে ।
অর্নিব- কিরে বাল,এত দেরি করলি ক্যা ? কতক্ষণ ধইরা বইয়া আছি ?
আমি-আরে বেটা কইস না,রিক্সা পাই নাই অর্ধেক রাস্তা হাইটা আইছি ।
অর্নিব- বাকি পোলাপান কই ?
আমি- খাড়া ফোন দেই ।
মোবাইলটা বের করে জয়রে ফোন দিলাম,দোস্ত কই ? জয়-দোস্ত,আমি একটা কামে বের হইছি । আমি বললাম- ওই হালা,আজকে না টিকেট কাটার কথা,তাড়াতাড়ি শ্যামলী আয় ? জয়-নারে,আমি যামু না । তোরা যা ।
আমি- আর জিসান ?
জয়-ও যাইব না ।
আমি আর কিছু না বলে ফোনটা রেখে দিলাম । জয় আর জিসানরে ব্যাপক গালাগালি করলাম যা এইখানে লেখা যাবে না (লেখলে ব্যান খামু)। অর্নিব আমার এই অবস্থা দেখে বলে- কিরে কি হইসে ? চেতস ক্যা ? আমি বললাম-চেতুম না মানে ? টিকেট কাটার আগে কেউ যদি কয়-আমি যামু না,তাইলে মেজাজ ঠিক থাকে ক্যামনে ? অর্নিব কইল-কেউই যাইব না ? আমি বললাম-কেউ যাইব না,শুধু আমি আর তুই ছাড়া ।
বেশ খানিকটা সময় নীরবতায় কাটল । আমার,অর্নিব কারো মুখে কোন কথা নেই,দুজনেই গভীর চিন্তায় ডুবে আছি । এমন সময় অর্নিব বলল- দোস্ত চল সিলেট যাওয়া ক্যানসেল করি । আমি বললাম- শেষ পর্যন্ত তুইও এমন করলি ?
অর্নিব-আরে বাল,কথা শেষ করতে দে । দ্যাখ,এহন যদি সিলেট যাই,তাইলে যে হালারা যায় নাই,তখন বারবার তাদের কথা মনে পরবো । আর মনে পরলেই মেজাজটা যাইব খারাপ হইয়া । আরে হালা,ঘুরবিই যখন মেজাজ খারাপ কইরা ঘুরবি ক্যান ? ফ্রেশ মাইন্ডে ঘুরবি ।

আমি- ভালইতো কইছস । তো যামু কই ? আর বাজেটও-তো এতো বেশি না,যে মন চাইল আর উড়াল দিলাম।
অর্নিব- কথায় কথায় মাথা গরম করবি না । ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা কইরা দেখ অল্প বাজেটের মধ্যে কই যাওয়া যায় ।

মনে মনে আমি চিন্তা করতে লাগলাম,কই যাওয়া যায় ? হঠাৎ করে অনেক আগের একটা কথা মনে পরল । অর্নিবরে জিগাইলাম- দোস্ত,মনে আছে ২ বছর আগে আমি আর তুই জিয়া উদ্যানে বইসা এক জায়গায় যাওয়ার প্ল্যান করসিলাম ? সে কইল- মনে থাকব না,শেষ সময়ে আইসা তুই পলটি মারছিলি । আমি কইলাম- চল দোস্ত এইবার ওই জায়গায় যাই ।
অর্নিব- আসলেই যাবি ?
আমি- হ যামু । চল টিকেট কাইটা আসি ।

টিকেট কেটে ঘরে ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গেল । আগামীকাল রাতের বাসে আমাদের যাত্রা শুরু হবে । শুয়ে শুয়ে ভাবছি কাল কি কি জামা কাপড় নেব,কিভাবে দিন গুলো হেসে খেলে পার করব ইত্যাদি । ভাবতে ভাবতে এক সময় ঘুমিয়ে পরলাম । দেখতে দেখতে বাসে উঠার সময় এসে গেল । ১০ টার বাস ছাড়ল ১০.৩০ টায় । এক সময় ভুলে গেলাম গত কালের তিক্ততার কথা । রাত ১২ টার দিকে বাস এসে থামল পাটুরিয়া ঘাটে । আমি আর অর্নিব বাস থেকে নদীর ফ্রেশ বাতাস আর দোকানের পরোটা-ভাজি খেতে লাগলাম । এই সময় জয় এর কথা মনে পরল । খাওয়া শেষ হলে ফোন দিলাম তাকে ।
আমি- কিরে কি করস ?
জয়- এই তো দোস্ত,রিপোর্ট লিখছি । তুই কই ?
আমি-এইতো ঘাটে,নাস্তা খাইতাসি ।
জয়- সিলেট যাওয়ার পথে ঘাট আইল ক্যামনে ?
আমি- তোরে কে কইল আমি সিলেট যাইতাসি ?
জয়- তাইলে কই যাস ?
আমি- কুয়াকাটা ।





( পরীক্ষার খাতা ছাড়া জীবনে কখনও দুইটা লাইন বানিয়ে লিখি নাই । কারন সে যোগ্যতা আমার নেই ।কিন্তু আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর জোরাজুরিতে লেখতেই হল । সারা দিন বসে সামুতে বসে বিভিন্ন ব্লগার এর লেখা গুলো পড়ি, আর মনে মনে অবাক হই কিভাবে তারা এই লেখা গুলো লেখে । কয়েক দিন শুধু লেখা গুলো পরেই গেলাম, কিন্তু মাথার মধ্যে কোন আইডিয়া আসে না । কি আর করা নিজের জীবনের কিছু বাস্তব ঘটনা হুবুহু তুলে দিলাম,শুধু নাম গুলো পরিবর্তন করে । যদি লেখাতে কোন প্রকার ভূল বা অসংগতি থাকে আমাকে দয়া এ বিষয়ে আপনাদের পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করবেন । ধন্যবাদ । )
১৬টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×