দেশপ্রেম কি?
বিজয়ের মাসে চাওয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার?
আর বাকি মাসে ক্লাবে বারে গিয়ে চর্চা নাচার।
দেশপ্রেম মানে-
নিজের মেধা বিদেশে বেঁচে রেমিটেন্স পাঠানো,
মাঝখানে থেকে সময়ের তালে দেশকে পিছানো।
দেশপ্রেম আজ-
ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নামে সন্ত্রাসী হামলা,
গ্রুপে ভাগ হয়ে চাঁদাবাজি, মিছিল কিংবা নিয়মিত মহড়া।
দেশপ্রেম মানে-
সেশন জটে বাঁধা জীবনের বোঝা,
আর সবকিছু জেনেও সমস্যার সুত্র খোঁজা।
দেশপ্রেম যেন-
তারুণ্যতে আক্রান্ত মাদকের নেশা,
দারিদ্র্যের কষাঘাতে বেছে নেয়া অপরাধ পেশা।
দেশপ্রেম বন্দি-
সভা-সেমিনার, রাজনৈতিক ইস্যু আর নির্বাচনী ইসতেহারে,
নিজের আখের গোছাতে তাই সবাই মুখে দেশপ্রেম ঝাড়ে।
দেশপ্রেম আজ-
সুশীল সমাজের অমৃত সুধা,
টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে দেখানো অদৃশ্য ক্ষুধা।
দেশপ্রেমের স্বপ্ন-
দেখে চলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম,
কবে হবে আমার স্বাধীনতার সার্থকতা প্রতিপন্ন?
আজ এ বিজয়ের মাসে,
নিজের সামনে নিজে দাঁড়ায়ে,
প্রশ্ন করি নিজেকে-
যত বলেছি,
কতটুকু করেছি
এতটুকু দিতে এই দেশকে?
হে জ্ঞানপাপী,
দেখেছ কি ভাবি?
বেচেছো জ্ঞান অর্থের লাগি,
বাড়িয়েছ পরদেশের সমৃদ্ধি-
নিজের পকেটের ফিটনেস
আর পাঠিয়েছ শুধু দেশেরে রেমিটেন্স।
হে রাজনৈতিক,
ধিক তোমারে ধিক,
ইস্যু করেছ অনেক তুচ্ছ বিষয়,
কেঁপেছে রাজপথ আর নাগরিক হৃদয়,
কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছ
দেশকে দিতে কতটুকু পেরেছ?
হে সভ্য সুশীল নাগরিক,
গিয়েছ বারে বা হোটেলে বড় পার্টিতে,
হুইস্কি- বিয়ারে মেতেছ ফূর্তিতে,
ভেবে দেখ নাই সেই মজদুর,
যে মানে না বৃষ্টি বা রোদ্দুর,
দু মুঠো শুধু অন্ন জোগাড়ে
কতটা খাটুনি ভাবনি আহারে,
শুধু চালিয়েছ ফাঁকা ফাঁকা বুলি,
টক শোতে খুলেছ কথার ঝুলি।
হে মানবতাবাদী,
কন্ঠে তোমার সাম্যের গান,
জুড়ায় কোমল মানব মন প্রাণ,
শুনিয়েছ অনেক মানবতার গান,
কিন্তু তোমার অন্দরে খেটে মরে এক ক্ষুদে শিশুপ্রাণ,
শিশুশ্রমিকের এহেন শ্রমে সহজ হয়েছে তোমার জীবন,
কিন্ত আমার দেশের ভবিষ্যত করেছ অন্ধ তুমি রাবণ।
চোখ খুলে দেখ হে অন্ধ সমাজ
আমার দেশের কৃষক, মজদুর, মুটে-
গ্রীষ্মের রোদে পুড়েছে খেটে,
তবু তারা থেকেছে সন্তুষ্ট যেটুকু পেয়েছে তা নিয়ে,
কখনও চায়নি তোমাদের মত আগ বাড়িয়ে।
এরাই আমার সোনার ছেলে
যাদের জন্য আজও আছি টিকে
বিশ্বের বুকে এক সোনার বাংলা হয়ে।