আমি মাসুদ ইসমাইল। আমার বাবা ২০০৭ সালে হঠাত একদিন আমাকে ফোন করে জানালেন, আমাকে বিয়ে করতে হবে, আমি তখন চট্রগ্রামে ছোট খাট ঠিকাদারী করে দিনাতিপাত করছিলাম! তিনি বেশ কিছু কথা বলে আমার বড় চাচার মেয়ের নাম নিয়ে জানালেন আমার সাথে তার বিয়ে ঠিক করেছেন! আমি আকাশ থেকে পড়লাম, আব্বার মাথায় কি স্ক্রু কি ডিলা হয়ে গেল! তবে তিনি কথা শেষ করেই আমাকে বলছেন, তুমি রাজী হবে নতুবা আমার মরা মুখ দেখবা! আমি নিজে খুব অবাক হয়ে পড়লাম, আব্বা একি বলছেন? সাথে আমাকে ৭ দিন সময় দিলেন, ভেবে বলার জন্য!
ঠিক সাত দিনের মাথায় আব্বা আমাকে আবারো ফোন করলেন, কি রে মাসুদ, সব ঠিক আছে তো! আমি এবার পুরাই মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম! আব্বায় এই সব কি করছে? আমি কি এখনো বিয়ে করে বউ খাওয়াতে পারবো? সাথে আব্বা আরো যোগ করলেন, তুমি আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাড়িতে উঠবে, শুক্রবার সকালে ঢাকায় পৌঁছে যাবে! সন্ধ্যায় তোমার বিয়ে!
এবার সত্যি সত্য আমার মাথায় কাঁঠাল পড়লো! আব্বা, আপনি আমার সাথে কি করছেন! বুঝে শুনে আমাকে কেন আপনি এমন জেলে ভরতে চাইছেন! আমার আসলে বাকরুদ্ধ হয়েছিল সেই সময়!
আমি সঠিক সময়ে ঢাকার বাসায় ফিরে এলাম! বাসায় প্রবেশের সময় একটা আলাদা পরিবেশ লক্ষ করলাম, দেখলাম আমাদের বাসার নীচতলায় বেশ কিছু ছাগল ম্যা ম্যা করছিল, পাশে হয়ত দুটো গরু ছিলো, আজ আর মনে করতে পারি না!
এর পর আমি আমাদের চার তলায় চলে গেলাম! সেখানে আমার বড়ভাবীর সাথে দেখা হল। তিনি আমাকে বসিয়ে বুঝাতে লাগলেন, বিবাহের নানান উপকারিতা ইত্যাদি ইত্যাদি, আজ আর সেই সব মনে করতে পারি না! তবে এমন কিছু কথা মনে আছে যে, তিনি বলেছিলেন, তুমি পুরুষ না! তুমি কি একটা মেয়েকে জীবন সঙ্গী বানিয়ে কাছে রাখতে পারবে না কেন ইত্যাদি ইত্যাদি!
সেই দিন সন্ধ্যার আগে আমাকে জোর করে অনেক ভাবী বৃন্দ ও ভাগ্নীবৃন্দ সাথে কিছু পাড়ার মেয়েরা আমাকে গায়ে হলুদ লাগিয়ে দিল! আমি তবুও যেন কিছুই বুঝতে পারছি না! গোসল করে সোরোয়ানী পরিয়ে দিল, আব্বা যেন সব কিছু আগেই ঠিক ঠিক করে রেখেছে! আমি তবুও ভাবছি, এ কি হচ্ছে! আমার খুব রাগ হয়েছিল!
এই হচ্ছে আমার বিবাহের গল্প!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১:৩৮