somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের মন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ভারতের আচরণ!

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সম্প্রতি ভারত সফরে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কুমারী শিলজা বাংলাদেশের পূর্ণমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন নয়াদিল্লির একটি হোটেলের ডাইনিং হলে। সেখানকার কয়েকটি ডাইনিং টেবিল সরিয়ে একটি সোফা স্থাপন করে ওই সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়। কোলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক কলম পত্রিকা রোববারের সম্পাদকীয়তে এ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। রেডিও তেহরানের পাঠকদের জন্য সম্পাদকীয়টি হুবহু তুলে ধরা হলো :



বাংলাদেশ আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী রাষ্ট্র। বাংলাদেশের জন্ম প্রক্রিয়া হইতেই ভারতের সহিত এক অচ্ছেদ্য বন্ধনে দেশটি আবদ্ধ রহিয়াছে। স্বীকার করিতে দ্বিধা নাই, বাংলাদেশ সৃষ্টির ফলে ভারতের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার ঝুঁকি বহুলাংশে হ্রাস পাইয়াছে। কারণ, বাংলাদেশের সৃষ্টি হওয়ায় ভারতের পূর্ব প্রান্তে এক বন্ধু রাষ্ট্র স্থাপিত হইয়াছে। ফলে পাকিস্তান অবিভক্ত থাকিলে সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতকে যে চাপ বহন করিতে হইত তাহা বহুলাংশে হ্রাস পাইয়াছে। ইহা ব্যতীত উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বাংলাদেশে ভারতের পণ্যের বাজার ও বিনিয়োগকেও এক ফলপ্রসূ উপযোগিতা হিসাবে গণ্য করিতে হইবে।



এই রাষ্ট্রটির সহিত আমাদের শুধু প্রতিবেশিসুলভ নহে, ভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ক বজায় রাখাও যে বিশেষ জরুরি তাহা উপলব্ধি করিবার জন্য রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ না হইলেও চলে। ইতা ব্যতীত বাংলাদেশে রহিয়াছে আমাদের বন্ধু রাজনৈতিক দল আওয়ামি লিগ। বাংলাদেশে ক্ষমতায় কিংবা ক্ষমতার বাহিরে অবস্থানকালে আওয়ামি লিগের সহিত আমাদের হৃদ্যতা যে সমানভাবে অম্লান রহিয়াছে, ইতিহাস তাহার সাক্ষী। সৌভাগ্য বলিতে হইবে, বর্তমানেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগ সরকার শাসন ক্ষমতায় আসীন রহিয়াছে। কয়েকটি ক্ষেত্র ব্যতীত অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশের সহিত আমাদের সমঝোতা আরও জোরদার হইয়াছে।



কিন্তু কখনও কখনও দেখা যায়, আমাদের নীতি-নির্ধারকদের শালীনতাবর্জিত উপেক্ষামূলক আচরণে এই প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ এবং ক্ষেত্র বিশেষে জনগণ হতবাক হইয়া পড়িতেছেন।



সম্প্রতি ভারতে আসিয়াছিলেন বাংলাদেশের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ বলিয়া পরিচিত। তাঁহার নয়াদিল্লি সফরের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কুমারী শেলজার সহিত দ্বি-পক্ষীয় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বৈঠক করা। বাংলাদেশের মন্ত্রী নিশ্চয় আশা করিয়াছিলেন, রাজধানী নয়াদিল্লিতে তাঁহাকে উপযুক্ত মর্যাদা প্রদান ও সাদর আপ্যায়ন করা হইবে। কূটনৈতিক দিক দিয়া তো বটেই, ঐতিহ্যবাহী বন্ধুর নিকট এমন প্রত্যাশাই ছিল স্বাভাবিক। বিশেষত, ভারতে মনে করা হয় 'মেহমান দেব ভবঃ'।



কিন্তু হায়! জনাব আবুল কালাম সাহেবকে এক ভিন্ন অভিজ্ঞতার মধ্যে পড়িতে হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কুমারী শেলজার সহিত তাঁহার বৈঠকের উদ্দেশ্যে যে সমস্ত জায়গার নাম প্রস্তাব করা হয় তাহা যথেষ্ট কৌতুহলোদ্দীপক। প্রথমে বলা হয়, বাংলাদেশের মাননীয় মন্ত্রীর সহিত বৈঠকটি হইবে একটি হোটেলের লবিতে। বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা খানিকটা বিস্ময়ের সহিত প্রস্তবিত বৈঠকস্থল সম্পর্কে মৃদু আপত্তি জ্ঞাপন করেন।



ইহার পর আমাদের ভারতীয় পক্ষ হইতে দুই রাষ্ট্রের মন্ত্রী পর্যায়ের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের উদ্দেশ্যে যে স্থানটি নির্বাচন করা হয়, তাহা আরও চমকপ্রদ। বলা হয়, বৈঠকটি হইবে হোটেলের 'বার লাউঞ্জ' অর্থাৎ কিনা মোহময় শরাবখানায়। সঙ্গত কারণেই হয়তো দ্বিতীয় স্থানটিও বাংলাদেশিরা পসন্দ করিতে পারেন নাই। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই দ্বি-পক্ষীয় মোলাকাত অনুষ্ঠিত হয় ওই হোটেলেরই একটি ডাইনিং হলে। খানাপিনা করার কয়েকটি টেবিল অপসারণ করিয়া লাগসই একটি সোফা সেইখানে স্থাপন করা হয়। বাংলাদেশ দূতাবাস মনঃক্ষুণ্ন হইলেও অগত্যা এইখানেই অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবেশী রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সহিত গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক আলোচনা!



স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠিয়াছে, রাজধানী নয়াদিল্লিতে আন্তর্জাতিক মানের সরকারি ও বেসরকারি ক্ষুদ্র কিংবা বৃহদাকার বহু কনফারেন্স হল থাকিতে কেন হোটেলের লবি, বার এবং শেষে ডাইনিং হলকে বাছিয়া লওয়া হইল? ইহাতে কি এক বৃহৎ ও উন্নত রাষ্ট্র হিসাবে ভারতের মান-মর্যাদা বৃদ্ধি পাইল? একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশই বা বিষয়টিকে কীভাবে গ্রহণ করিল? এই কথা অবশ্যই বলা যায়, চিন বা পাকিস্তানের সহিত এই ধরনের আচরণ করা হয়তো সম্ভব হইত না।#
লিন্ক: বাংলাদেশের মন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ভারতের আচরণ!
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মন তার আকাশের বলাকা || নিজের গলায় পুরোনো গান || সেই সাথে শায়মা আপুর আবদারে এ-আই আপুর কণ্ঠেও গানটি শুনতে পাবেন :)

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৬ ই জুন, ২০২৪ রাত ১০:০০

ব্লগার নিবর্হণ নির্ঘোষ একটা অসাধারণ গল্প লিখেছিলেন - সোনাবীজের গান এবং একটি অকেজো ম্যান্ডোলিন - এই শিরোনামে। গল্পে তিনি আমার 'মন তার আকাশের বলাকা' গানটির কথা উল্লেখ করেছেন। এবং এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

লাইকা লেন্সে তোলা ক’টি ছবি

লিখেছেন অর্ক, ১৭ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৩০




ঢাকার বিমানবন্দর রেল স্টেশনে ট্রেন ঢোকার সময়, ক্রসিংয়ে তোলা। ফ্ল্যাস ছাড়া তোলায় ছবিটি ঠিক স্থির আসেনি। ব্লার আছে। অবশ্য এরও একরকম আবেদন আছে।




এটাও রেল ক্রসিংয়ে তোলা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কার গল্প জানেন ও শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩১



গতকাল সন্ধ্যায়, আমরা কিছু বাংগালী ঈদের বিকালে একসাথে বসে গল্পগুজব করছিলাম, সাথে খাওয়াদাওয়া চলছিলো; শুরুতে আলোচনা চলছিলো বাইডেন ও ট্রাম্পের পোল পজিশন নিয়ে ও ডিবেইট নিয়ে; আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাবাকে আমার পড়ে মনে!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৭ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২

বাবাকে আমার পড়ে মনে
ঈদের রাতে ঈদের দিনে
কেনা কাটায় চলার পথে
ঈদগাহে প্রার্থনায় ..
বাবা হীন পৃথিবী আমার
নিষ্ঠুর যে লাগে প্রাণে।
কেন চলে গেলো বাবা
কোথায় যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×