somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হ্যাপী ওয়েডিং

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছু কিছু কথা মাঝে মধ্যেই মনের মাঝে খটকা সৃষ্টি করে যায়। এমন হয়ে গেছে ব্যাপারটা যে আজকাল যেন শো-অফ এরই যুগ। যে যত বেশি দেখাতে পারবে সে তত বেশি উচ্চ লেভেলে পৌছে গেল।
সম্প্রতি এই ব্যাপারটা বেড়েছে আধুনিক বিবাহ অনুষ্ঠানগুলোতে। সব মেয়েরই ইচ্ছে থাকে সে তার বিয়েতে খুব সুন্দর করে সাজবে, তাকে যেন খুব আকর্ষণীয় দেখা যায়, ঠিক আছে মানলাম, তাই বলে কোন কিছুই লিমিটের বাইরে যাওয়া ঠিক না।
ফেইসবুক ঘুড়ে ঘুড়ে অনেকেরই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন আরো অনেক কিছুরই দেখা মিলে, আজকাল তা হয়ে গেছে রীতিমত প্রতিযোগিতা। মেয়েদের মধ্যে এই প্রতিযোগিতা সব থেকে বেশি।
মেয়েদের বিয়ের প্রিপারেশন শুরু হয় যদি সর্বনিম্ন ধরি তাও এক বছর আগে থেকে!! হুম সত্যি। :P

প্রথমত, তার নিজের বিয়ের শাড়ি হতে হবে তার বান্ধবীদের থেকে অবশ্যই বেশি দামী, না হলে মান সম্মান আর থাকবেনা। শুধু বিয়ের শাড়িই নয়, এখানে রয়েছে, হলুদের, বিয়ের এবং বৌ-ভাতের। এইসব শাড়ি গুলোর দামের মুল্য হতে হবে অবশ্যই ২০০০০ টাকার উপরে। পরিবারের সচ্ছলতার উপর ভিত্তি করে এই দাম বাড়তে থাকবে। কিছু কিছু আপুরা আছে নিজেই নিজের হলুদের শাড়ি ডিজাইন করে আরো কত কি!!
যেমন সেদিন দেখলাম এক আপু তার হলুদ, বিয়ে এবং বৌ-ভাতের শাড়ি পড়া ছবিসমূহ ফেইসবুকে আপলোড দিয়ে লিখেছে,
হলুদের শাড়ি-৫০০০০ টাকা, রঙ থেকে কেনা (দোকানের নাম),
বিয়ের শাড়ি- ৯৫০০০ টাকা, ভাসাবি থেকে কেনা,
বৌ-ভাতের লেহেঙ্গা- ১১৮০০০ টাকা, ভাসাবি থেকে।

দ্বিতীয়ত, সাজগোজের ব্যাপারটা খুবই স্বাভাবিক, তবে সেটা যেন তেন পার্লার থেকে চলবে না। আর তিন টাইপের প্রোগ্রামে সাজগোজের জন্য কত টাকা লাগলো এটা অনেক বড় ব্যাপার। যার টাকা যত বেশি নিবে সে তত বেশি সুন্দর এমন টাইপ কিছু। :P কিছু তথাকথিত আপিরা আছে যারা এসব শুনতে খুবই আগ্রহী অনুভব করে, আপি কোথা থেকে সেজেছো? কত নিয়েছে? আবার যার বিয়ে সে খুব আগ্রহ করে বলতে পছন্দ করে। পার্লারে আবার এমন নির্দিষ্ট কিছু নামকরা মেকআপম্যান আছে, তাদের কাছে থেকে মেকআপ করলে তো কথাই নেই!! মারহাবা!!
তৃতীয়ত, গহণা!! বাহারি রকম ডিজাইনের গহণা তো থাকতেই হবে, তবে একটা দুইটা নয়!! গলার উপর থেকে শুরু করে একদম যতদূর পরা যায়... ভাবছেন বাড়িয়ে বলছি!! একদম নাহ!! হোক সেটা গোল্ড অথবা অন্য কিছু, এমনভাবে গহণাসমূহ পরতে হবে যাতে একটা জবরজংভাব চলে আসে। এটাই আজকালের ফ্যাশন। :P
চতুর্থ, মেহেদি দেয়ার ব্যাপারটা এতোদিন জানতাম মেয়েরা নিজে নিজে দিতে, অথবা কাজিনরাই দিতে ভালোবাসে, এতে একটা মোহাব্বতেরও ব্যাপার স্যাপার থাকে! কিন্তু এখন নাকি মেহেদি স্পেশালিষ্টও আছে। তাদের কাছ থেকে মেহেদি পরতে প্রায় ৪০০০/৫০০০ টাকা লাগে। ওখানে থেকে যদি মেহেদি পরা যায়!! ভাবই বেড়ে যাবে দিগুণ!

এবার আসি ছবি তে, উফফ!!
বনে-বাদাড়ে মাঠে-ঘাটে ক্যাদা-মাটি এরা কিছুই মানে না। :P :P যেমনে পারে তেমনে ছবি তুলে তুলে অস্থির! নিজে তুলোস তুলোস বাবা! জামাইটারে নিয়া যে টানাটানি!! তবে আজকাল জামাইগুলাও খুব আগ্রহ দেখায় এইভাবে চিৎ-কাইত হইয়া ছবি তুলায় :P বুঝলাম না ব্যাপারটা ;)
ফটোগ্রাফারদের এখন রমরমে অবস্থা! নতুন নতুন কত জিনিস যে বাইর করছে এরা!
প্রি-ওয়েডিং ফটোশুট, পোষ্ট- ওয়েডিং ফটোশুট আরো হাবিজাবি কত কি!! আরো কি জানি ভিডিওগ্রাফি না কি!! কত যে সখ-আহ্লাদ :P :P :P

ওহ! জুতার কথা তো ভুলেই গেছি :P
আজকাল অনেক হাই-হিল এর দামী দামী জুতা আছে ব্রাইডাল কালেকশনে! সেগুলার দাম আকাশচুম্বী, আর ভালো ব্র্যান্ডের হতে হবে অবশ্যই। ;) তবে আমার কিঞ্চিৎ সন্দেহ, বিবাহত্তোর এই জুতা জোড়ার কি হবে??? :P
এইতো গেল শুধু একটা মেয়ের কি কি প্রিপারেশন থাকে বিয়েতে তার একটা নমুনা!! এছাড়াও আজকালের হাই-ফ্যাশন বিয়ে গুলোতে অনেক কিছু সামিল হয় যা কল্পনা অতীত।
সমাজে আরো এক শ্রেণির মানুষ আছে যারা হয়ত বিয়েতে এতো খরচ করতে পারেনা, কিন্তু এসব হরেক রঙের মিলন মেলা দেখে তাদেরও ইচ্ছে জাগতে পারে, অনেক মেয়েরা আছে ফ্যামেলি কে চাপ প্রয়োগও করে এসব ইচ্ছা পূরণের জন্য! যার যেমন সাধ্য তার মধ্যে সে বিবাহ করবে স্বাভাবিক এতে খারাপ কিছু নেই, তবে সেটা যেন কোনভাবে প্রতিযোগীতা না হয়ে উঠে অথবা মানুষ দেখানো কার্যের মধ্যে না পরে তা আমাদের খেয়াল রাখা উচিৎ।
হাদিসে বলা আছে- যে বিবাহে খরচ কম এবং সহজ সেই বিবাহই অধিক বরকতপূর্ণ
এসব দেখানো জিনিসের প্রতি মনোনিবেশ না করে বিবাহিত জীবনকে সুখী করার, একে অপরের অন্যতম আপন মানুষ হয়ে থাকার ও সারাজীবন পাশাপাশি থাকার প্রতিযোগিতা এর চেয়ে ঢের ভালো।
হ্যাপী ওয়েডিং
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×