হাসিনা ও তার নাৎসী বাহিনী র্যাব, পুলিশ, বিজিবি সারাদেশে চালাচ্ছে হত্যাযজ্ঞ। গুম-খুন করেই চলছে নিরীহ সাধারন মানুষকে। হয়রানী ও নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না গর্ভবতী মহিলা থেকে শুরু করে শিশু-বৃদ্ধারাও। এ থেকে মুক্তির জন্য সর্বাত্মক আন্দোলন প্রয়োজন। আন্দোলন হচ্ছে রাজপথে, আন্দোলন হচ্ছে অনলাইনে। অনলাইনের আন্দোলনকে আরো জোড়ালো করতে টুইটারের ভূমিকা অপরিসীম। শুধু আপরিসীম বললেই হবেনা বরং বলতে হবে সবচেয়ে বেশী শক্তিশালী। তাই বাংলাদেশকে যারা হায়েনার হাত থেকে মুক্ত করতে চান তাদের জন্য টুইটার আন্দোলনের বিকল্প নেই। আসুন টুইটার সম্পর্কে জেনে নেই কিছু সাধারন বিষয়। আমি অতীতেও টুইটার নিয়ে বিভিন্ন ব্লগে ও ফেসবুকে লিখেছি আবারো লিখলাম।
নিবন্ধন:
twitter.com এর প্রথম পৃষ্ঠাতেই আছে নিবন্ধন ফরম মাট্র ৩ টি ইনফরমেশন দিয়ে "Sign up for twitter" এ ক্লিক করেই ওপেন পারেন আপনার টুইটার পেজ। নাম, ইমেল আ্যাড্রেস ও পাসওয়ার্ড। দ্যাটস ইট।
ইউজার নেম:
"Sign up for twitter" এ ক্লিক করার পর যে পেজটি আসবে সে পেজে একদম নিচের খালি ঘরে আপনার একটা ইউজার নেম ঠিক করতে হবে। ইউজার নেম টি আপনার ইমেল আ্যড্রেস থেকে ভিন্ন হতে পারে। যেমন: Upopadya (উপপাদ্য) মনে রাখবেন ইউজার নেমটি খুবই গুরুত্বপূর্ন কারন এই নামটিই সবখানে দেখাবে এমন কি আপনার URL আ্যাড্রেসেও। যেমন http://www.twitter.com/upopadya
এর পরে আবারো "Sign up" ক্লিক করলে একটা ওয়েলকাম মেসেজ আসবে টুইটার কতৃপক্ষের কাছ থেকে। এই পেজে আপনি ক্লিক করবেন "Lets Go" । নতুন যে উইন্ডো আসবে সেখানে আপনার ইন্টারেস্ট কি কি বিষয়ে তা জানতে চাইবে, বেশী কিছু ক্লিক করবেন না, একটা বা দু'টা। বেশীতে টিক মার্ক দিলে অপ্রয়োজনীয় টুইটে আপনার পেজ ভর্তি হয়ে যাবে। এবার "Continue" ক্লিক করুন। পরের পেজে আপনার ইন্টারেস্টের উপর ভিত্তি করে কিছু টুইটার আ্যাকাউন্ট ফলো করার জন্য সাজেশন দেবে। আপনার যদি এসব আ্যাকাউন্টের কেউ পছন্দের না হয় তাহলে ক্রস চিহ্নতে ক্লিক করে করে সব ডিলিট করে দেবেন। আর পছন্দের কারো আ্যাকাউন্ট থাকলে রেখে দিয়ে আবারো Continue তে ক্লিক করে পরের পেজে চলে যান।
প্রোফাইল:
এবার যে পেজ টি আসবে তা হচ্ছে আপনার প্রোফাইল পিকচার আপলোড করার জন্য। পিকচার আপলোড কিংবা তাৎক্ষনিক ছবি তুলে আ্যাড করার পরে আসবে "Find people you know"। আমার মতে এ পেজটি স্কিপ করে যাওয়া ভালো। তাই "Skip this page" ক্লিক করুন। আর হয়ে গেলো আপনার টুইটার আ্যাকাউন্ট। এবার যত ইচ্ছা ততো টুইট করুন। তবে আপনার প্রথম টুইট করার পূর্বে আপনাকে একটা কাজ করতে হবে। আপনার দেওয়া ইমেল আ্যাড্রেসেএকটি কনফার্মেশন মেসেজ চলে গেছে ইতোমধ্যে অন্যান্য সব সামাজিক মিডিয়ার মতো ওটাতে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে কনফার্ম করুন।
তবে শুরু হোক টুইট যুদ্ধ:
টুইটার আ্যাকাউন্ট তো হয়ে গেলো, এবার আপনার উচিত কিছু আ্যাকাউন্ট ফলো করা। সাজেশন হিসেবে কিছু আ্যাকাউন্টের নাম নিম্নে দেয়া হলো.. @BBCNews, @cnn, @Aljazera, @nytimes @whitehouse, @un, @statedept @HuffingtonPost, @amnesty @rushanaraali @guardian @theeconomist
কেনো টুইট করবেন, ক্যানো # (হ্যাশট্যাগ) করবেন:
এ বিষয়ে আমি ব্লগে ও ফেইসবুকে ইতোমধ্যে পোস্ট দিয়েছিলাম। টুইটারের সবচেয়ে বর অস্ত্র হচ্ছে আপনি যাকে ইনফর্ম করতে চাচ্ছেন সরাসরি তার আ্যাকাউন্টে ইনফর্মেশন চলে যাচ্ছে। অনেকটা ফেসবুকে টয়াগ করার মতো। তবে ফেসবুকে ট্যাগ করলে শুধুমাত্র আ্যাকাউন্ট মালিক জানতে পারেন যে তাকে ট্যাগ করা হয়েছে। কিন্তু টুইটারে যাকে ট্যাগ করা হয়েছে টাকে সহ এই আ্যাকাউন্ট যারা ফলো করছেন তাদের কাছেও নোটিফিকেশন চলে যায়। আর আপনার ফলোয়ার সবাইতো পাচ্ছেই।
উদাহরন স্বরূপ, ধরুন আপনি টুইট করছেন, Force disappearances and killings opposition in BD by #hasina @bbc @cnn @secgen #SaveBangladesh #StepDownHasina
এই ছোট্ট টুইটটিকে বিশ্লেষন করলে দেখতে পাই আপনার মেসেজ হচ্ছে হাসিনা দ্বারা গুম ও হত্যা হচ্ছে। জানাচ্ছেন বিবিসি, সিএনএনকে আর #ট্যাগ করে ট্রেন্ড বাড়াতে সাহায্য করছেন। এবং আপনার এই ছোট্ট মেসেজটি পৌছে যাচ্ছে বিবিসি ও টার ফলোয়ারদের কাছে, আপনার ফলোয়ারদের কাছে, টুইটার ট্রেন্ডে সংখ্যা ও শতকরা বাড়াচ্ছে।
হয়ে যান সোশ্যাল আ্যাক্টিভিস্ট:
যেহেতু আজকাল বাংলাদেশসহ বিশ্ব মিডিয়া সত্যকে মিথ্যা ও মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে প্রচার করছে। নিরীহ ছাত্র হত্যা করে বন্ধুকযুদ্ধের নাটক বানাচ্ছে। সাংবাদিকতার এমন কালো সময়ে আমাদের নিজেদেরকেই হতে হবে সাংবাদিক। নিজ এলাকার খবর মুহুর্তেই পৌঁছে দিতে হবে নিজে নিজেই। আপনার একটা মাত্র টুইট বদলে দিতে পারে বাংলাদেশকে। জাগিয়ে দিতে পারে ঘুমন্ত এই জাতিকে। প্রচন্ড দ্রোহে হয়তো জেগে উঠে সবাই মুক্তির সূর্যটাকে ছিনিয়ে আনবে।
তাই আসুন ৭১/৭২ মিডিয়ার নবনীতা, সামিয়াদের গালে চপেটাঘাত দিতে জেগে উঠি টুইটারে। জানিয়ে দেই বিশ্বকে বাংলাদেশের কসাই লেডি হিটলার হাসিনা সম্পর্কে।
উপসংহার:
যখনই ঘটনা তখনি টুইট করুন। মিছিল হচ্ছে টুইট করুন, পুলিশ গুলি ছুড়ছে টুইট করুন। কবিতা পড়ছেন টুইট করুন। হাঁটছেন টুইট করুন, অসংগতি দেখছেন টুইট করুন। গনতন্ত্রের মুক্তি চান টুইট করুন। টুইট করার সময় খেয়াল রাখবেন কাকে আ্যাড্রেস করছেন। স্থানীয়ভাবে মিছিল করেছেন সেটার জন্য বিবিসি আলজাজিরাকে ট্যাগ করে লাভ নেই, এক্ষেত্রে ট্যাগ করুন জেড ফোর্স, বিএনপি, বেগম জিয়া, জামায়াত/শিবির প্রথমালু, ৭১/৭২, আমারদেশ, নয়াদিগন্ত। পুলিশের অনাচার, হিউম্যান রাইটস, ভোট, নির্বাচন, গনটন্ত্র ইস্যুতে টুইট করলে ট্যাগ করবেন বড় বড় সংবাদ মাধ্যম, জাতিসংঘ, বারাক অবামা, ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট, নরেন্দ্র মোদী, আ্যামনেস্টি, এইচআরডব্লু ইত্যাদিকে।