হেমন্ত কাল শুরু হয়ে গেছে| কিন্তু আবহাওয়া দেখে সেটা বুঝার তেমন অবকাশ নেই| ইউরোপের অন্যান্য শহরে শীতের আগমনী বার্তা হালকা অনুভব করা গেলেও গ্রিসে এখনো গ্রীষ্মের উষ্মতা প্রায়ই স্পর্শ করে| বলে নেয়া ভালো আমার তেমন গরম পছন্দ না| পাহাড়, সমুদ্র দিয়ে ঘেরা সুন্দর একটা দ্বীপ শহর ইরাক্লীয়ন | এথেন্সে হতে এক ঘন্টারও কম সময় লাগে উড়োজাহাজে| তবে জাহাজের ক্ষেত্রে এই হিসাব নয় ঘন্টার| ক্রেট সাগরের সুন্দর এই দ্বীপ শহরে নামতেই মন ভালো হয়ে যায় সুমদ্র আর পাহাড়ের মিলন দেখে| ইরাক্লীয়ন আরেকটা কারণে খুব বিখ্যাত| এখানে আছে ব্রোঞ্জ যুগের (১৩৮০ থেকে ১১০০ খ্রিস্টপূর্ব্ব) ঐতিহাসিক নিদর্শন | টুরিস্ট শহর হিসাবে খুবই সমাদৃত এই স্থানটা|
এইত সেদিন এখানে হয়ে গেল ওয়ার্ল্ড টুরিসম ডে উদযাপন| এই শহরের মানুষরা যেন নিজেদের ইতিহাস, সংস্কৃতির প্রসরা নিয়ে বসে গিয়েছিল| ছোটখাটো মেলার মত করে তারা তিনদিন ধরে উদযাপন করলো এই দিবসটা| জাদুঘর, দর্শনীয় স্থানগুলো ছিল সবার জন্য বিনে পয়সায় উন্মুক্ত| কোনো স্থানে তারা সব গ্রিক খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছিল তাও আবার একদম মুফতে| আর ছিল শহরের বিভিন্ন স্থানে লোকাল গান বাজনার এক অসাধারণ আয়োজন| যেদিকেই যাই না কেন সুর আপনার পিছু ছাড়বে না |
সুর আর সঙ্গীত যে তাদের খুব প্রিয় টা মেলার কিছু স্টল দেখলেই বুঝা যায়| অনেকগুলো দোকান ছিল শুধু সুরের যন্ত্র এর সমারোহ নিয়ে | টুরিস্টরাও কিনছিল তা আগ্রহ নিয়ে| কিছু দোকান ছিল জলপাই, আঙ্গুর , মধু এ জাতীয় কৃষিজাত পণ্য নিয়ে আবার কিছু দোকানে শোভা পাচ্ছিল সৌখিন গৃহ সাজানোর পণ্য দিয়ে | ভালো কথা, মুখে মুখে শোনা যায় এই শহরের ওয়াইন নাকি খুবই বিখ্যাত | কথাটা হয়ত একদম ফেলনা না| শহরের একটু বাইরে বের হলেই দেখা মিলে সারি সারি আঙ্গুরের আর জলপাইয়ের বাগান| যাই হোক লিচু আছে লিচুর তালে, মেলা থেকে সুন্দর একটা আঙটি কিনলাম আমি | আর সময়টা উদযাপন করলাম ফালােফল খেতে খেতে | ও, ফালােফল সম্পর্কে একটু বলে নেয়া ভালো| এটা অনেকটা পেয়াজুর মত (আমার ধারণা এটা পেয়াজুই)| সালাদ দিয়ে একে রুটির মধ্যে পেচানো হয়| গরম গরম খেতে খারাপ না |

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


