বাংলাদেশের হিন্দুদের সাহায্যের জন্য মোদীর সাহায্য কামনার ইস্যুটি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে যদিও রানা দাশ গুপ্ত বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।তিনি যদি সাহায্য কামনা করেও থাকেন তবু তার মাঝেও আমি ইতিবাচক একটা দিকও দেখি।আর এই ইতিবাচক দিকটি হলো তিনি কোনো অবস্থাতেই দেশ ছাড়তে আগ্রহী নন এমনকি ভারত আশ্রয় ও নাগরিকত্বের আশ্বাস প্রদানের পরও।এতে আমি তার মাটির প্রতি গভীর আকর্ষনই দেখতে পাই। নিজ মাটির অধিকার প্রতিষ্টার জন্য যদি যুদ্ধ করা যায় তবে অন্য দেশের সাহায্য চাওয়াতে দোষের কি আছে ?এতে সাধারণ নাগরিকের ক্ষীপ্ত হওয়ার কারণ নেই।ক্ষিপ্ত হতে পারে সরকার কেননা এতে সরকারের উপরই হিন্দু নাগরিকদের চরম অনাস্থা প্রকাশ পাচ্ছে।আবার এটা দেশের সকল হিন্দুর সম্মিলিত সিদ্ধান্তও নয় নিতান্তই ব্যক্তিগত আবেগ প্রসূত বক্তব্য বলেই মনে হয়।এটা ঠিক বর্তমান সরকারের কাছে তাদের যে রকম প্রত্যাশা ছিল তা তারা পাননি এমনকি হিন্দুদের সম্পদলোভী স্থানীয় অনেক আওয়ামীলীগ নেতার কারণেও অনেক হিন্দু দেশত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন।রাণা দাশ গুপ্তরা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্যপরিষদের পক্ষ থেকে সেই দুর্বত্ত নেতা ও ক্ষতিগ্রস্থদের বিষয়ে তথ্যাদি দিলেও সরকার তার প্রতিকার করছেনা।এরপর ঐক্য পরিষদ কার কাছে যাবে ?রাণা দাশগুপ্ত যদি আমার লেখাটি পড়তেন আমি তাকে বলতাম আহবানটি মোদির কাছে না জানিয়ে হিন্দুদের কাছে করুন।দেশে এখনও কোটির কাছাকাছি হিন্দু রয়ে গেছেন।কোটি সংখ্যাটি ছোট নয়। এই এক কোটি হিন্দুর কাছে রুখে দাঁড়াবার আহবান জানান। হিন্দুদের মনোবলে যে চিড় ধরেছে আগে তা সারানো প্রয়োজন। দেশটা আপনাদের।ভারত যতই আশ্রয় আর নাগরিকত্বের আশ্বাস দিকনা কেন নিজ দেশের মতো সম্মাণ আর মর্যাদা ভিন্ন দেশে পাবেননা।একাত্তরে যে মাটির জন্য আপনারা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন সে মাটিকে কেন কিছু দুবৃত্ত দুষ্কৃতিকারীর হাতে তোলে দিয়ে যাবেন ? আপনারা শক্ত হয়ে দাঁড়ান প্রয়োজনে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করুন।দেখবেন দেশের বেশীরভাগ মুসলমান আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে গেছে।মুসলমানদের সবাই পরসম্পদলোভী ও দুষ্কৃতিকারী নয়।দেখবেন সরকারও তখন তার সকল শক্তি নিয়ে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। একাত্তরে হিন্দু মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী দুর্ধর্ষ বাহিনীর বিরুদ্ধে সাহসের সাথে যুদ্ধ করেনি ? সিলেট ময়মনসিংহ অঞ্চলে দাসবাহিনীর বিভিন্ন বীরোচিত অপারেশন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে।শহীদ জগজ্জোতি দাসের মতো বীর হিন্দুরই সন্তান।সি আর দত্ত এগারো সেক্টর কমান্ডারের একজন।এটা ঠিক এতে অনেক রক্ত ঝরতে পারে।রক্তে ভয় পেলে মাটির অধিকার প্রতিষ্টা হবে কী করে ?কেউ না কেউকে আত্নত্যাগ করতেই হবে।বরকত সালামদের আত্নত্যাগের বদলে আমরা ভাষার অধিকার পেয়েছিলাম।একাত্তরের ত্রিশ লাখ শহীদের আত্নদানে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।হয়ে যাক না আরেকটা যুদ্ধ।এযুদ্ধ অন্যায় পররাজ্য দখলের যুদ্ধ নয়।এ যুদ্ধ নিজের মাটির অধিকার রক্ষার যুদ্ধ।ছোট্ট একটা উদাহরণ দিই।আমাদের প্রতিবেশী একটি গ্রাম আছে মুসলমানপ্রধান। সামান্য কিছু হিন্দু আছে এর মাঝে একটি পরিবার দুর্ধর্ষ প্রকৃতির।মার দাঙ্গায় এরা উন্নত শির।যখন তখন রামদা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।একেবারে নির্ভয় নির্ভীক।গ্রামের বারো আনা জনসংখ্যা মুসলমান হলেও সবাই এই পরিবারটির ভয়ে তটস্থ থাকে।এতবড় একটি গ্রামে এরা সসম্মানে আছে।কেউ এদেরকে ঘাটাতে সাহস করেনা উল্টো নমঃ নমঃ করে।কেন ? এরা সাহসী।সক্ষমরাই টিকে থাকে অক্ষমরা হারিয়ে যায় এটা সৃষ্টির ধারা।ধনূ দেখেই যদি উড়াল দিতে চান তবে চামচিকাও লাত্থি মারবে।সাহস করে দাঁড়িয়ে যান দেখবেন সম্মুখ ফাঁকা।কোথাও কেউ নেই।যতবড় ভূমি খেকো রাক্ষসই হোক তার ভেতরটা নড়বড়ে।আপনি দুর্বল বলেই সে সবল।তাকে সবল করাতে তার কোনো কৃতিত্ব নেই বরং আপনার ব্যর্থতা তার সফলতার সিঁড়ি।আর জঙ্গী ?এরা ভীরু কাপুরুষ।এরা হয়তো দু চারটে লাশ ফেলবে চোরের মতো লোকিয়ে লোকিয়ে।এদের ক্ষমতার দৌড় এতটুকুই।এতে ঘাবড়ে গেলেতো সর্বনাশ।এই যে পুলিশের বিতরন করা লাটি আর বাঁশী নিয়ে মানুষ শপথ নিচ্ছে তা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা উঠে আসছে।আমি এর সমালোচনা নয় বরং ঐ আওয়াজটাকে অন্তর দিয়ে কামনা করছি।এ আওয়াজ যেন যান্ত্রিক নাহয়।এযেন হয় প্রাণের আওয়াজ।প্রতিরক্ষার দিপ্ত শপথের আওয়াজ।
যে সাহসী পরিবারটির কথা আগে বলেছি একদিন দেখা গেল কোনো কারণ ছাড়াই এরা একজন একজন করে চলে যাচ্ছে।এর নাম ধ্বস।হিন্দুদের মাঝ থেকে আগে এই ধ্বসকে ঠেকানো প্রয়োজন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:২৪