somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্তরালের অপ্রকাশিত দূর্নীতি আর কিছু বিক্ষিপ্ত কথা

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত কয়েকদিন ধরে কতগুলো বিষয় মাথায় ঘুর ঘুর করছে। সবই বিক্ষিপ্তভাবে। যার সুনির্দিষ্ট কোনো সূচণা নেই, নেই কোনো সমাপ্তি। এগুলো সবই হইতো সবাই জানে, নাও জানতে পারে। না বলা এইসব ছোট ছোট অনুভূতি নিয়েই এই লেখাটা।

১. মানবাধিকার সংগঠন- ওরা ক্রসফায়ার এর বিপক্ষে কথা বলে। কারণ-
ক্রসফায়ার হলে ঐ আসামির সব শেষ হয়ে যায়। আসামি-পালকের ঢাল তলোয়ার হ্রাস পায়। আসামির পক্ষে বা বিপক্ষে আর আইনি লড়াই করে কিছু টুপাইস রোজগার এর পথ বন্ধ হয়ে যায়। আসামিকে নিয়ে হয়তো কিছু রাজনীতিবিদ, কিছু মানবাধিকার সংগঠন আর কিছু আইনি সংগঠন এর মধ্যে টাকা-পয়সার লেনদেন চলে।
কিন্তু সমাজের মানবাধিকার এর বিষয়ে সন্ত্রাসীদের ভুমিকা নিয়ে ওরা কিছু বলেন কি?

২. সরকার এর যোগাযোগ বিষয়ক নীতি-নির্ধারক মহল-
নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদীপথগুলো হল আমাদের জন্যে আশীর্বাদস্বরুপ। যাত্রী ও পণ্য পরিবহণে নদী হতে পারতো অন্যতম প্রধান মাধ্যম। বিশেষ করে পণ্য পরিবহণ এর ক্ষেত্রে। হলনা। রেলযোগাযোগ তো হতে পারতো। তাও হলনা। প্রাধান্য পেয়েছে সড়ক যোগাযোগ। কেন, বলতে পারেন?
কারণ হতে পারে সড়কপথে জ্বালানি খরচ বেশি হয় তাই। কিন্তু তাতে লাভ কার? লাভ হচ্ছে তাদের, যারা তেল বেচে। জ্বালানী বেচে। ওরা হয়তো এইসব নীতি বানানোর সময় আমাদের নীতি নির্ধারকদের কিছু বখশিশ দিয়েছে। বখশিশ আরো হয়তো অনেকে দিয়েছে। টয়োটা আর নিটল গ্রুপ। কারণ রেল যোগাযোগ বাড়লে গাড়ির ব্যাবসা যে কমবে।
আন্ডারগ্রাউন্ড সাবওয়ে-র বদলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ টাও হইতো ওদের বুদ্ধি আর বকশিশ এই করা।

৩. আইনঞ্জীবী-
২০০৭ সালে কত দূর্নীতিবাজ ধরা হয়েছিল। ওরা প্রায় সবাই ছাড়া পেয়েছে। তাহলে কি বলবেন এই দেশে কোনো দূর্নীতিবাজ নেই? টিভি, পত্রিকা পরে জানা যায় যে দুদক ওইসব দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইণি প্রক্রিয়ায় ১৩ কোটি টাকা খরচ করছিল। টাকাটা নিশ্চয়ই গেছে আইনজীবীদের পকেটে। ওই দূর্নীতিবাজরাও আইনজীবী নিয়োগ করছিল ওদের পক্ষে আইণি লড়াই এর জন্যে(ওদের তো টাকার অভাব নাই)। পরবর্তী ঘটনা আমরা সবাই পরবর্তী ঘটনা আমরা সবাই জানি। আইনের ফাক দিয়ে ওরা (দূর্নীতিবাজরা) পার পেয়ে গেছে। তাহলে কি আমরা বলতে পারি দুদকের আইনজীবীরা ইচ্ছে করেই ফাক রাখছিল যাতে আর সেই ফাক গলে আরেকদল আইনজীবী দুর্নীতিবাজ দের উদ্ধার করে? জানিনা। তবে মাঝখান দিয়ে কোটি কোটি টাকা আইনজীবীদের পকেটে চলে গেলো (কেনো, ভুলে গেছেন ব্যারিস্টার অমুক আর তমুক এর কথা)। দুই পক্ষের আইণজীবীদের মধ্যে কেমন একটা দুই পক্ষের আইণজীবীদের মধ্যে কেমন একটা লিয়াজো লিয়াজো ঘ্রাণ পাই।

৪. পররাষ্ট্র-
বিদেশ গিয়ে আমাদের নেতা-নেত্রীরা খালি সন্ত্রাস আর জঙ্গি দমনের কথা বলেন। (বিশেষতঃ আমেরিকা আর ইন্ডিয়া-য়) এই জন্যে টাস্কফোর্স আরও কত কি বানানোর কথা শুনি। আরে এইগুলা তো আমাদের সমস্যা না। জঙ্গিবাদ নিয়ে ভয় তো ওরা পাবে। জঙ্গি বানানোর পেছনে আমাদের অবদান নাই বললেই চলে যতটা না ওদের আছে। তাই ওদের ভয় ও অনেক বেশি। আমরা কেন ওদের সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাবো। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি নিয়ে আমাদের প্রতিনিধিরা সামান্যই বলেন বা কিছুই বলেননা, বলেননা বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা নিয়ে। সীমান্তে স্বেচ্ছাচার আর পাখির মত মানুষ হত্যা নিয়েও খুব কম কথা শুনি। এমনকি ওসব দেশে আমাদের দেশের টিভিচ্যানেল এর নিষেধাজ্ঞা নিয়েও কোনো বক্তব্য পাই না। সন্দেহ হয় ওরা ডক্টরেট ডিগ্রি আর দুই/চারটা পুরষ্কার দিয়ে আমাদের মুখ বন্ধ রাখেন। হয়তো টাকা পয়সার ব্যাপার ও আছে।
প্রকৃত ঘটনা সুনির্দিষ্ট জানি না। পৃথিবীর এই ক্ষুদ্র জীবনে কোনোদিন জানতে পারব বলে মনে হয়না।

৫. আবার প্রশাসন/সরকারী মহল-
আজকাল একধরনের যান রাস্তাঘাটে দেখা যায়। বিদ্যুতচালিত অটোরিক্সা। কারেন্টখেকো এইসব চাইনিজ যান অত্যন্ত হাল্কা, খুব আস্তে চলে। এমনিতেই ঢাকার রাস্তায় বাস, গাড়ি, সি এন জি, রিক্সা, ঠেলাগাড়ি নানা স্পীড এর যান চলে। অতি সমস্যার একটা ব্যাপার, তারপর আবার রিক্সা আর মোটরগাড়ির মাঝামাঝি স্পীডের এই যানের বিস্তৃতি ভবিষ্যতে চরম প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে পারে। ওইসব ঠুনকো এক্সিডেন্টবান্ধব যান অনুমোদন ছাড়াই চলছে। কোনো সন্দেহ আছে কি এই ভার্চ্যুয়াল অনুমতির জন্যে টাকার বিশাল একটা আদান-প্রদান ছিল। আর অন্ধ প্রশাসন বসে বসে নাকের লোম তুলছে।

৬. মিডিয়া-
সম্ভবত এই জায়গাটায় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়। ঝা চকচকে পর্দার আড়ালে লেনদেন এর মহোতসব চলে। টকশোগুলোতে সাফাই গাইতে দেখি চোর, বাটপার আর দুর্নীতি বাজদের পক্ষে, দেখেছি প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে অন্যায়কে ঢাকতে। কেন? কারণ টাকা দিয়ে মিডিয়াকে হয়তো অন্যায় আর মিথ্যার পক্ষেও সাফাই গাওয়ানো যায়। সত্য ও মিথ্যা-র মিশ্রণ দ্বারা ওরা কাউকে ফুলিয়ে বড় করছে, কাউকে ফেলে দিচ্ছে। ভদ্রলোকের ছদ্মবেশে নিয়ে ভালো ভালো কথা বলে, পেছনে লুকিয়ে রাখে নোংরা সত্য। যার অন্তরালে আছে কামণা, লালসা আর টাকার খেলা। মাঝে মাঝে দু/একটা ঘটনা বেরিয়ে আসে। ছি ছি পড়ে যায়। বেশিরভাগ ই হইতো প্রকাশ হয় না। আমি দেখিনি মিডিয়ার ভেতরে কি ঘটে, কিন্তু আমার কল্পনাবিলাশী যৌক্তিক মণ এ এই অসুন্দর ছবিটা গেথে গিয়েছে।

ঘুষ, দুর্নীতি, চাদাবাজি, সন্ত্রাসী এইসব অপরাধ সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। কিন্তু তার অন্তরালে হয়তো লুকিয়ে থাকে আরো বড় দুর্নীতি, conspiracy, ভয়াবহ সব বিষয়। যারা প্রতিটা খারাপ কাজের সমর্থন করতে গিয়ে ভাল উদ্যোগগুলোকে নষ্ট করছেন আর নিজেরা ফুলে ফেপে বড়লোক হচ্ছেন। অনেকেই হয়তো এসব জানে কিন্তু প্রকাশ করছে না। হয়তো নিজের স্বার্থেই। হতে পারে গ্যাটকো, নাইকো, মিগ, এশিয়া এনার্জি এমনই সব ঘটনার উধাহরণ। নাও পারে। কিন্তু এমন কিছু না কিছু আমাদের চারপাশেই নিশ্চয়ই ঘটছে। আমরা জানি না। হয়তো তার কিছু কিছু ৫০/১০০ বছর পর প্রকাশ করবে CIA, FBI, WIKILEAKS বা অন্য কেউ। পুরনো এইসব বিষয় নিয়ে তখনকার নতুন মানুষ আর মাথা ঘামাবে না।

(বিঃ দ্রঃ লেখা ভালো লাগলে প্লাস/কমেন্ট যা খুশি দিয়েন, খারাপ লাগলেও মাইনাস/কমেন্ট দিয়েন। কিন্তু প্লিজ, গালাগালি করবেন না।)
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×