somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এটাই সময় অন্ধকারকে আলোকিত করার

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামগ্রিক মুক্তিযুদ্ধে এবং এর পরবর্তী সময়ে নারী মাত্রই বঞ্চিত, নির্যাতিত এবং দুর্ভাগ্যের অংশীদার। মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক দিক যদি আমরা বিবেচনা করি তাহলে দেখব সেই সময়ে সবচেয়ে দুর্দশাপূর্ণ অবস্থা ছিল নারীদের। এবং নানাভাবে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। অকল্পনীয় সব অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল তাঁদের প্রতি। এ ধরনের অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়াও অনেকটা অসম্ভব ছিল। কারণ নারীদের জন্য তখন ঘরে থাকাটা মোটেই নিরাপদ ছিল না। পাশাপাশি পালিয়ে বাঁচাও ছিল কঠিন কাজ। নারীদের অনেকেই সেসময় অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন- এ কথা সত্যি। কিন্তু অস্ত্র হাতে যুদ্ধে যাওয়াটাও যথেষ্ট কঠিন ছিল। যুদ্ধে সামিল হয়েছেন এমন নারী বিরল নয়। অথচ সত্তরের ডিসেম্বরে ছাত্রীদের কাঁধে ডামি বন্দুক দিয়ে কুচকাওয়াজ করানো হলেও যুদ্ধের সময় মেয়েদের নিয়ে আলাদা কোনো বাহিনী গঠন কিংবা তাদের আলাদা কোন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল না। ধর্ষিতার সারিতে তারা, গণহত্যার মোট সংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশও তারা। অথচ আজো মুক্তিযোদ্ধা ও দেশপ্রেমিকের প্রতিচ্ছবি কেবলই পুরুষেরই দখলে। জাতীয়তাবাদ কি তবে পুরুষের মতাদর্শ? জাতীয় মুক্তির যুদ্ধের ‘গৌরব’ কি কেবলই পুরুষেরই? ১৯৭৩ সালে ৬৭৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নানা উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এর মধ্যে মাত্র দু’জন ছিলেন নারী। তাদেরই একজন কুড়িগ্রামের দরিদ্র নারী তারামন বিবি। আর তিনি তার ‘বীরপ্রতীক’ উপাধি পাওয়ার খবর জানতে পারেন ঘটনার ২৪ বছর পর !!
একাত্তরের নারীদের দুর্দশার পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতার পর তাঁদের প্রতি জন্য যতটুকু করার কথা ছিল তাঁর তুলনায় কিছুই করা হয় নি। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হয়েও নারীরা সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত ছিলেন। অসংখ্য বিশেষ দিবস পালন করি আমরা। কিন্তু বীরঙ্গনাদের জন্য এদেশে কি একটি বিশেষ দিবস আছে?
এদেশে মুক্তিযোদ্ধারা রিকশা চালান। বীরাঙ্গনারা ভিক্ষা করেন। আর রাজাকারেরা নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন। অনেকেই সেইসব রাজাকারদের ভোট দেয়। তাদের পক্ষ নিয়ে কথা বলে। তাদের আদর্শ মেনে চলে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ আসলেই 'যুদ্ধাপরাধ' শব্দটিকেই কুসংস্কার হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা চালায়। কারণটা ঠিক বোঝা যায় না। এদেশের উপর একাত্তরে একটা ঝড় বয়ে গিয়েছিল। সেই ঝড়ের বিস্তৃতি লাভের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল সেইসব মানুষদের, যারা নির্দ্বিধায় হানাদার বাহিনীর চাকরের কাজ করেছে। অথচ এই সামান্য কথাটাই অনেকে বুঝতে চান না। বরং উল্টো যুক্তি দেখিয়ে প্রমাণ করতে চান "যুদ্ধাপরাধীর বিচার" পুরাই অর্থহীন একটা ইস্যু!!
শেষ কথা
বীরাঙ্গনারা জীবন যুদ্ধে সামাজিক সংকীর্ণতা এবং দুর্দশার কাছে পরাজিত। তাঁদের পরাজয়ের কারণ অনেক। এ পরাজয়ের মূল দায় তাদের, যারা বীরাঙ্গনাদের উপেক্ষা করেছিল। সমাজ এবং রাষ্ট্রের বোঝা হিসেবে গণ্য করেছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের তাঁরা তাঁদের মান মর্যাদা পান নি। এখনো কি পেয়েছেন?
৭১ এর বীরাঙ্গনা অধ্যায়টি প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতো। সমস্যা হল এ অন্ধকার আমাদেরই সৃষ্টি। আমরা প্রদীপের আলোয় তৃপ্ত হতে চাই। আর অন্ধকারটুকু দূরে ঠেলে দিই।
কিন্তু দেরিতে হলেও এটাই সময় অন্ধকারকে আলোকিত করার । আপনিও পারেন আমাদের সাথে যোগ দিতে তুলে ধরতে পারেন নিজ এলাকার কোন বীরাঙ্গনার কথা ....
https://www.facebook.com/events/1555225964691433/
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×