বারোটা পঞ্চাশ বাজতে এখনও প্রায় চল্লিশ বাকি,
আরো এখানে বসতে হবে বিশ।
দুঘন্টার শেষ কয়েক মিনিট যেন অস্থিরতার কালো পাহাড়।
বসেছি লেকটার একটু এদিকটাতে,
যেখানে শেষবার বসেছিলে হলুদিয়া পাখি হয়ে ।
উল্টোদিকের বুড়োদুটো কিভাবে তাকিয়েছিলো
বলতেই,আমার মজা নেয়ার চেষ্টাটাকে কিভাবে দমিয়ে দিয়েছেলে তুমি!
আবার অনেকদিনপর তোমাকে সামনে পাবো,
দীর্ঘদিনের অস্থিরতাটা একটু বেসামাল অস্থির ।
বিশ শেষ হবার আগেই
হাঁটা মেইন গেটের দিকে,
যেখানটাতে মিলবে তোমার সাক্ষাত।
থাকি দুরে।আসা হয়না একদম ।
তোমার ভিষন পছন্দের এই ধোঁকাবজির শহরের
জ্যাম, ধুলোবালি, দৃশ্যমান ব্যস্ততার চোখ রাঙানী
অবলিলায় অবজ্ঞা করা যায় দেবীদর্শনে।
প্রচন্ড গরম, উত্তেজনা, অনিশ্চিয়তা বা অস্থিরতা
ফলাফল দরদরে ঘাম নিয়ে গন্তব্যে উপস্থিত।
ভিড় বাড়ছিলো গেটের কাছে,
আমার বাড়ছিলো টেনশন।
পিপাসার্ত চোখ ঘুরছিলো চারপাশ।
যা রোদ, সানগ্লাস পড়বে নিশ্চই,
ছাতাটা কিন্তু সাথে রাখা উচিত তোমার ।
হিজাব আর মাস্ক যদি থাকে তাহলে চিনবো তো ?
আচ্ছা, তুমি কি আমাকে চিনবে ?
আগের মতো ক্লিন শেভ করা হয়না কতদিন
দাড়িটাতে হালকা পাক ধরেছে, চোখে চশমা।
ধুর। হাসি পেলো।
তুমি চিনবে কি করে।
বরং সামনে পড়লেও তো তুমি নির্ঘাত এড়িয়ে যাবে।
ঠিক সামনের ডান কোনায়
চোখ পড়তেই আৎকে উঠলো অস্থির মন।
মাথায় ওড়না জড়ানো মেয়েটার দিকে তখন চক্ষু স্থির।
একটু কি মুটিয়ে গেছো ? আর একটু কি খাটো ও?
মেয়েটি ডানদিকে ফিরে বরাবর হতেই
অস্থিরতা কমলো। এ তুমি নও।
চোখ যখন দুরে দুরে ঘুরছে
ঠিক সামনেই ....
নাহ..। এটাও না।
ভিড় চুড়ান্ত পর্যায়ে।
বাজলো ঘন্টা, খুললো গেট, নামলো স্রোত।
বেড়িয়ে পড়লো পিঁপড়ের দল।
মায়েদের হাতে হাতে ছোট ছোট ফুলগুলো
ক্লাসে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা বলতে উন্মুখ।
আস্তে আস্তে ভিড় কমতে থাকলো,
কমতে থাকলো অস্থিরতা।
বন্ধ হলো স্কুলের গেট
বন্ধ হলো আশার দুয়ার।
এবারও হলো না।
এসেছিলে নিশ্চই,
চোখে বিঁধে ফেলা গেলো না।
সময় কম, ধরতে হবে ফেরার ট্রেন।
ক্লান্ত মনের হাত ধরে ফিরে চলা
পরের বার স্কুল গেটে দাড়ানো
বখাটে ছেলেটি হবার আশ্বাসে ।