somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিবির বিরোধী আন্দোলন 1

১১ ই অক্টোবর, ২০০৬ সকাল ১১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের দিন আমাগো পার্টির জনসভা ছিলো। নভেম্বর বিপ্লব আর পার্টির শুরু একইদিনে এই উপলক্ষে প্রতি বছর আগে ঢাকায় একটা কেন্দ্রীয় প্রোগ্রাম হইতো। সারাদেশের কর্মীরা আসতো ঢাকায়...তারপর একসাথে পার্টির কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে নেতাদের বক্তব্য শোনা, কমরেডদের সাথে মোলাকাত, লাল সালাম আর কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল...তো সবকিছু সফলতার সাথে সম্পন্ন হওয়ার পর 9 নভেম্বর ক্যাম্পাসে মুখে ঝলমলে হাসি নিয়া ক্যাফেটরিয়াতে বইসা গল্প করতেছিলাম ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মারামারি নিয়া, তারা ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজীর ভাগ নিয়া মারামারি কইরা ক্যাম্পাস কেমনে অস্থিতিশীল করে এই কথা বুঝাইতে ছিলাম নতুন দুই সহযোদ্ধারে। ঠিক এমন সময় দুইটা ছেলে সম্ভবতঃ ফার্স্ট ইয়ারের, আসলো হাপাইতে হাপাইতে...তারা এলোমেলো বহুকিছু বইলা যা বুঝাইলো তার সারমর্ম হইলো ছাত্র শিবির আল বেরুনী আর কামালুদ্দিন হল দখল করছে। আমরা প্রথমেই সিদ্ধান্ত নিতে পারতেছিলাম না...কারণ ছাত্রদলের গ্রুপিং-য়ের কোন যোগসূত্র আছে কিনা এই ধরনের প্রচারণায়, সেইটারে মাথায় রাখতে হইতে ছিলো। তারপরেও আমরা সমাজবিজ্ঞান ভবনে গেলাম। সেইখানে গিয়া দেখি ছেলে পেলে একটু অস্থির কি করবো বুঝতে পারতাছেনা। এই ধরণের পরিস্থিতি জাবিতে আগে কখনো হয় নাই।খোকন ভাই পরিস্থিতি দেইখা শ্লোগান ধরলেন ছোট একটা জমায়েতের মধ্যে। সেই জমায়েত ছয় সাতশো ছাত্র ছাত্রীর জমায়েতে পরিনত হইলো রেজিস্ট্রার বিলডিং-এ গিয়া।আমরা রেজিস্ট্রার বিলডিংয়ে গিয়া নিশ্চিন্ত হইলাম শিবির-ই দখল করছে হল। তারা সুপারী তলা পর্যন্ত আইসা দাঁড়াইছে।কিছুক্ষণ পর পর গুলি ফুটাইতেছে ফাঁকা। ছেলে পেলে একটু নার্ভাস হইয়া গেছে এর মধ্যেই কারন মাঝে মাঝেই বিড়িং বিড়িং আওয়াজ তুইলা গুলি লাগতেছে দেয়ালে। ভিসি স্যাররে আমরা গিয়া কইলাম স্যার পুলিশ লাগবো। তখন আমীরুল ইসলাম চৌ ছিলেন ভিসি। তিনি লগে লগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীরে ফোন করলেন। মন্ত্রী সরাসরি কইয়া দিলো সে কিছু করতে পারবো না। রাজাকার আব্দুল মতিন চৌধুরী কিছু করবোনা এইটা আগেও আমরা জানতাম। ভাগ্যক্রমে স্বরাষ্ট্র সচিব স্যারের কলেজের সহপাঠী ছিলেন, স্যারের ফোন পাইয়াই সে কইলো এক্ষুনি পুলিশ পাঠাইতেছেন। যদিও সেই পুলিশরা আমরা শিবির কর্মীগো হলে কোনঠাসা করনের পর আই সা উপস্থিত হইছিলো। যাউগ্গা সেইদিন আমরা কোন অস্ত্র ছাড়াই হলে ঢুইকা গেছিলাম সশস্ত্র শিবির কর্মীগো দখলে রাখা হলে, আমাগো শক্তি ছিলো সংখ্যা, গোটা পঞ্চাশেক শিবির কর্মীর সামনে আমরা ছিলাম হাজারের উপর। কিছু পলাইছিলো হলের পিছন দিক দিয়া টপকাইয়া। আর বাকী গুলিরে পুলিশ আইসা বাঁচাইছিলো। আমার মনে আছে দিনের শেষে যখন আবার হল শিবির মুক্ত, তখন ছাত্রী হলের সহযোদ্ধারা আমাগো টাইনা নিয়া গেলো তাগো ক্যান্টিনে মিষ্টি মুখ করাইতে। অদ্ভুত লাগতেছিলো। মনে হইতেছিলো আমরা যুদ্ধফেরতা। খুবই বালখিল্য ভাবনা, কিন্তু ঐ সময় আসলেই কেমন লাগতেছিলো তা বইলা বোঝানো সম্ভব না, লেইখা তো অসম্ভব!!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০০৬ সকাল ১১:৪১
১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭


ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

পহেল গাঁয়ে পাকিস্থানি মদদে হত্যাকান্ডের জন্য ভারত পাকিস্থানে আক্রমন করে গুড়িয়ে দেয় , আফগানিস্থান তেহেরিক তালেবানদের মদদ দেওয়ার জন্য, পাকিস্থান... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×