মানুষ তার মূল্যবোধ তৈরী করে। তার চারপাশের সব অসঙ্গতি নাড়া দেয় তারে, তার ইতিহাসের পাতা উলটায়, কিছুটা রক্ত ছলকায়, সে সচেতন হয়। মনে হয় কিছু নিয়ম দরকার, নিয়ন্ত্রণের অনিশ্চয়তা তৈরী হয়, সে প্রতিরোধের কিরম বাসনায় তালিকা করে, কি করা দরকার আর কি করার দরকার নাই। মানুষের বিশ্বাস তৈরী প্রতিরোধে, প্রতিষেধকে নয়। আর তাই যুগে যুগে সমাজ পালটাইছে বিভিন্ন মানুষের এই অনিশ্চয়তা বোধ থেইকা। এই অনিশ্চয়তার মালিকানা কার, কার মাথায় অনিশ্চয়তা কোন পরিসরে, এই সব অলস প্রশ্ন খালি আলাদা করে পালটানোর কিম্বা রক্ষার সংস্কৃতিরে। রক্ষা কইলাম বইলা হয়তো মনে হইতে পারে এই লেখার শুরুতেই বিতর্কের আওয়াজ! কিন্তু আসলেই রক্ষা করনের মানসিকতাও সমাজরে পালটায়।
অনিশ্চয়তা বোধ একটা আজব কাহিনী তৈরী করে। মানুষের মনে এক ধরনের ক্ষমতা প্রসারণের বীজ রোপন করে। এই ক্ষমতারে দখলে নেয়ার চিন্তা বইলা ভুল করনের বহুত অবকাশ তৈরী থাকে, কিন্তু আসলে তা এতো প্রবল না। ঐটা প্রায়শঃ আসে অবস্থানের বৈষম্য থেইকা। প্রয়োগের ভায়োলেন্ট প্রকাশের থেইকা। যতো বড় পরিসর তার প্রকাশ ততো ভায়োলেন্ট। বড় পরিসর বলতে একসময় ছিলো গোত্র, তারপর হইছে সমাজ, তারপর মৌজা, তালুক, জমিন, দেশ বাজার এইরম ধারাবহিকতায়। আমি রাষ্ট্রের নির্বাহী বিষয়টা অনেক ভালো বুঝিনা প্রাতিষ্ঠানিক অর্থে তাই ভুল মার্জনা প্রয়োজন।
তো মূল্যবোধ আসে কাগো থেইকা? খুব স্বাভাবিকতায়ই বুঝন যায়, এইটা একান্তই নিয়ন্ত্রক শ্রেণীর বিষয়। মার্ক্স সাহেবের অনেক কথার ফাঁকে আমি এই একটা কথারে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। মানুষের ইতিহাসে শ্রেণীর ভূমিকা বিষয়ে তি নি যা ক'ন। যাউগ্গা এই নিয়ন্ত্রক শ্রেণীও কিন্তু আসছিলো তাগো ব্যক্তিগত অনিশ্চয়তা বোধ থেইকাই। অনিশ্চয়তা থেইকা লড়াই, আর ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা (!) অর্জন। আর তাই মূল্যবোধের বলিহারী শুরু হয় মনিহারী ভ্রমে। এইখানে অধঃস্তনেরা থাকে বঞ্চিত। কারণ অনিশ্চয়তার খেলায় জিতনের অধিকার রাখে যে টিকবার ক্ষমতা রাখে শুধু সে'ই। নিয়ন্ত্রক শ্রেণীর অনিশ্চয়তা থাকে অস্তিত্বের, পারিপাশর্্ব নিয়া। আর তাই নিজেগো মতোন মূল্যবোধের ঠেলা আর খেলা চলে অধঃস্তনেগো উপর।
অনিশ্চয়তার খেলায় আসলে যা যা হয় তার মধ্যে সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরী হওনটাই প্রধান প্রকাশ। এই সব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধিকাংশ সময়ই ব্যক্তি সকল, তার ফলভোগ, তার নিয়ন্ত্রণও ব্যক্তি সকলের মতামতেই নির্ধারিত। কিন্তু এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধও তৈরী করে নিয়ন্ত্রকরাই। এইটা একটা অদ্ভুত ডিলেমা। কারণটা শুনতে অনেক বিরক্তি লাগবো সবার কিন্তু বাস্তবতা হইলো এইখানেও কাজ করে অনিশ্চয়তার পরাকাষ্ঠা। ক্ষমতা অধিগ্রহণ থেইকা তার পরিচালনের সময়কার গতিপথে নেতৃত্ব হারানের অনিশ্চয়তা, ব্যক্তিগত জ্ঞানের তুলনামূলক চিত্রে নিজের অবস্থান নিয়া অনিশ্চয়তা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



